দেশ 

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মনিপুরের সহিংসতা কবলিত এলাকায় রাহুল গান্ধী, এরপরেও বিজেপি রাহুলের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন করতে পারে কী?

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সেখ ইবাদুল ইসলাম: যে কাজটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির করা উচিত ছিল, সেই কাজটি জাতীয় নেতা হিসাবে করে দেখালেন রাহুল গান্ধী। যারা রাহুল গান্ধীকে নিয়ে কটাক্ষ করেন যারা তার দেশ প্রেম  নিয়ে প্রশ্ন তোলেন! তাদের কাছে আমাদের সবিনয় আবেদন প্রধানমন্ত্রী কি একবারও যেতে পারতেন না অশান্ত মণিপুরে? কেন গেলেন না কিসের এত অহমিকা? কিসের এত অহংকার? প্রধানমন্ত্রী বলে আজকে যিনি প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে আছেন আজ থেকে দশ বছর আগে তিনি আসনে ছিলেন না আবার এক বছর পরে থাকবেন কিনা তা নিয়েও সন্দেহ আছে। কিন্তু দেশের অখণ্ডতার রক্ষার জন্য দেশের সংহতি রক্ষার জন্য দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে মণিপুরে যে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে সহিংসতা চলছে তাতে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যাওয়াটা একান্ত কাম্য ছিল।

কিন্তু প্রধানমন্ত্রী গেলেন না যাকে সংসদ পদ থেকে সরিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন মোদি সরকার সেই রাহুল গান্ধী জীবনের নিরাপদ ঝুঁকি নিয়ে ছুটে গেলেন মণিপুরে।সেখানে আহবান জানালেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ন’টায় তিনি দিল্লি থেকে রওনা দেন মণিপুরের উদ্দেশ্যে। মনিপুর পৌঁছে তিনি সরাসরি যেতে চান সহিংস কবলিত এলাকাতে।

কিন্তু বিজেপি সরকারের পুলিশ বাধা দেন বলেন আপনার জীবনে নিরাপত্তার স্বার্থে আপনাকে হেলিকপ্টার করে ঘটনাস্থলে যেতে হবে। কারণ আপনি যদি সড়কপথে যান তাহলে আপনার উপর হামলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুলিশের এই দাবিকে মান্যতা দিয়ে রাহুল গান্ধী হেলিকপ্টারে রওনা হলেন।

পুলিশের ‘পরামর্শ’ মেনে বৃহস্পতিবার বিকেলে কপ্টারে চূড়াচাঁদপুর জেলার কয়েকটি শরণার্থী শিবিরে ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করতে যান রাহুল। ঘটনাচক্রে, রাহুলের সফরের মধ্যেই বৃহস্পতিবার নতুন করে হিংসা ছড়িয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ওই রাজ্যে। কাঙ্গোকপি জেলার হারাওথেল গ্রামে দুষ্কৃতীদের গুলিতে কয়েক জন আহত হয়েছেন।

মণিপুরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওকরাম ইবোবি সিংহ, এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক অজয় সিংহ-সহ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ইম্ফল থেকে চূড়াচাঁদপুরের শরণার্থী শিবিরে যাওয়ার পথে বিষ্ণুপুর এলাকায় রাহুল এবং তাঁর সঙ্গীদের পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয়। এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল জানান, ইম্ফল থেকে ২০-২৫ কিলোমিটার দূরে বিষ্ণুপুর এলাকায় কনভয় আটকে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, চূড়াচাঁদপুরেই গত দু’মাসে সবচেয়ে বেশি হিংসার ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ দিল্লি থেকে বিমানে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে পাড়ি দেন রাহুল। সাড়ে ১১টা নাগাদ পৌঁছন ইম্ফলে। দু’দিনের মণিপুর সফরে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার লামকা (চূড়াচন্দ্রপুর), বিষ্ণুপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি শরণার্থী শিবিরে যাওয়ার কথা রাহুলের। রাতে তিনি থাকবেন মৈরাংয়ে। শুক্রবার রাজধানী ইম্ফলের কয়েকটি শরণার্থী শিবিরে যাওয়ার পাশাপাশি, যুযুধান মেইতেই জনগোষ্ঠী এবং কুকি এবং নাগা জনজাতির নাগরিক সমাজের সঙ্গেও বৈঠকে বসার কথা তাঁর। দিল্লি ফেরার আগে শুক্রবার, প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করতে পারেন তিনি।

রাহুল জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেভাবে মনিপুর সফরে গেলেন এবং মনিপুর সফর করছেন। হিংসা কবলিত এলাকায় যাচ্ছেন। সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলছেন তা এককথায় প্রশংসনীয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যে প্রায় দেড় মাস ধরেছে সহিংসতা চলছে তা কমছে না কেন? কেন সহিংসতা কমানো যাচ্ছে না? রাহুল গান্ধী যে কাজটা করলেন বা যে কাজটা করছেন নরেন্দ্র মোদির সে কাজটা করতে পারছেন না কেন ?এটাই এখন সাধারণ মানুষের প্রশ্ন।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ