রাজস্থানের যোধপুরে সাম্প্রদায়িক অশান্তির নেপথ্যে রয়েছে বিজেপি দাবি গেহলটের, দুই সম্প্রদায়ের ৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করলো যোধপুর প্রশাসন
বাংলার জনরব ডেস্ক: পরশু রাম জয়ন্তী ও ঈদের নামাজ পড়ার অনুষ্ঠান ঘিরে রাজস্থানের যোধপুরে যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি হয়েছে তার পেছনে বিজেপি আছে বলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট মন্তব্য করেছেন। এদিকে যোধপুরের সাম্প্রদায়িক অশান্তিতে যুক্ত থাকার কারণে দুই গোষ্ঠীর ৯৭ জনকে গ্রেফতার করেছে গেহলট প্রশাসন।
এ প্রসঙ্গে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট “চাকরি দিতে পারছে না। মানুষ না খেয়ে মরছে। সেদিক থেকে নজর ঘোরাতে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়াচ্ছে বিজেপি।” পালটা অশান্তির দায় কংগ্রেসের উপরই চাপিয়েছেন বিজেপি সাংসদ (BJP MP) রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর।
পরশুরাম জয়ন্তী এবং ইদের অনুষ্ঠানের মাঝেই যোধপুরের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি বাঁধে। দুই ভিন্ন ধর্মালম্বী গোষ্ঠীর অশান্তি থামাতে গিয়ে জখম হন অন্তত ৭ পুলিশ কর্মী। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাইক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যোধপুরের উদয় মন্দির এবং নাগোরি গেট এলাকায় জারি করা হয়েছে কারফিউ। গুজব রুখতে আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। সবমিলিয়ে কেল্লার শহর এখন থমথমে।
এদিকে এই অশান্তির দায় বিজেপির দিকে ঠেলেছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তাঁর কথায়, “এটাই বিজেপি কাজ। কারণ দেশজুড়ে দারিদ্র, বেকারের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। মোদি সরকার এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। এই পরিস্থিতি থেকে নজর ঘোরাতে তারা ক্রমাগত সাম্প্রদায়িক অশান্তি বাঁধাচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ ধরেই দেশের বিভিন্ন এলাকা যেমন দিল্লি, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ থেকে সাম্প্রদায়িক অশান্তির খবর আসছে।
অন্যদিকে যোধপুরের বিজেপি সাংসদ রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর গেহলটের বিরুদ্ধে পালটা তোপ দেগেছেন। তাঁর অভিযোগ, “কংগ্রেস সরকারের তোষণের রাজনীতি একটি বিশেষ শ্রেণি ভয়ডরহীন হয়ে উঠেছে। আর তাই এইসব অশান্তির ঘটনা ঘটছে।”
প্রসঙ্গত, যোধপুরের হিংসার ঘটনার সূত্রপাত সোমবার গভীর রাতে। তিনদিন ধরে পরশুরাম জয়ন্তী পালন করা হচ্ছে সেই শহরে। রাজস্থানের অতিরিক্ত এডিজি হাওয়া সিং ঘুমারিয়া জানিয়েছেন, “নমাজ পড়ার জায়গায় পরশুরামের পতাকা লাগান ছিল। সেগুলি সরিয়ে ইদের জন্য পতাকা লাগাতে চায় কয়েকজন।” এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন অপর গোষ্ঠীর কয়েকজন। তারপরেই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে থেমেও যায় এই অশান্তি। কিন্তু এই খবর ছড়িয়ে পরে চারিদিকে। রাত বাড়তেই ফের লোকজন জমায়েত হয় ঘটনাস্থলে। দু’ পক্ষই একে অপরের দিকে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। রাত ১টার পরে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।