কলকাতা 

ISF – Nawshad Siddiqui: বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী পুলিশ হেফাজতে, জনবিক্ষোভের ভয়ে তৃণমূলকে ভাঙড়ে মিছিল করার অনুমতি দিল না প্রশাসন!

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : শাসক দল এখনো নবান্নে ক্ষমতায় আছে। এলাকার পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে শুধুমাত্র বিধানসভা ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের। গত শনিবার ধর্মতলা এবং ভাঙড়ে দুই জায়গাতেই অশান্তি হয়েছে। ধর্মতলায় আইএসএফ কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি মারামারি হাতাহাতি হয়েছে। অন্যদিকে ভাঙড়ে তৃণমূল বনাম আইএসএফ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে তৃণমূলের তিনটি দলীয় পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এর প্রতিবাদে শাসকদলের পক্ষ থেকে আগামীকাল বুধবার ২৫ শে জানুয়ারি পাকাপোল থেকে হাতিশালা পর্যন্ত একটি মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল সেই মিছিল করার অনুমতি দিল না প্রশাসন। কেন? আসলে ভাঙড় বিধানসভা এলাকায় এই মুহূর্তে সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হলেন পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকী। তাকে কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করেছে আর আদালতের রায়ের তিনি এখন পুলিশ হেফাজতে। এই অবস্থায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে মিছিল করা হলে সেই মিছিলে জনবিক্ষোভ হতে পারে বলে প্রশাসনের কাছে খবর আছে তাই প্রশাসন অশান্তি এড়ানোর জন্যই সরাসরি শাসকদলকে মিছিল করার অনুমতি দিল না?

Advertisement

একথা অস্বীকার করার উপায় নেই স্বাধীনতার আগে এবং স্বাধীনতার পরে ফুরফুরা শরীফের কোন পীর কিংবা পীর জাদাদের ব্রিটিশ সরকার কিংবা স্বাধীন ভারতের সরকার কোন সরকার গ্রেফতার তো দূরের কথা তাদের বাড়িতে পুলিশ পর্যন্ত পাঠাইনি। মমতা সরকার সেই কাজটা করেছে। এনিয়ে সমগ্র বাংলা জুড়ে মুসলিমদের মধ্যে একটা উদ্বেগ সঞ্চারিত হয়েছে এটা অস্বীকার করা যাবে না। আর এই উদ্বেগ থেকে ভয়, ভয় থেকে সরকারের প্রতি একটা বিদ্বেষ বিক্ষোভ দানা বাঁধছে। যে মমতাকে এই রাজ্যের বাঙালি মুসলিম সমাজ দুহাত ভরে ভোট দিয়েছিল মাত্র দু বছরের মধ্যে সেই মুসলিম সমাজ আস্তে আস্তে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। কারণ তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মমতা সরকার এই রাজ্যের বাঙালি মুসলিমদের সবচেয়ে বেশি তাচ্ছিল্য করেছে, সবচেয়ে বেশি অবহেলা করেছে, সবচেয়ে বেশি নিষ্পেষণ করেছে।

বিজেপি নবান্ন অভিযান করেছিল সেই সময় পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর থেকে শুরু করে পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরানোর মতো ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হয়েছিল। সেক্ষেত্রে কজন নেতাকে গ্রেফতার করা করেছিল মমতা সরকারের পুলিশ। সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে! এখন এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কাছে খবর আছে যে ভাঙড় কেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট নিয়ে এই রাজ্যের যে কোন প্রান্তে যদি মিছিল করে তাহলে সে ক্ষেত্রে সেই মিছিলে বিক্ষোভ হতে পারে এই পরিস্থিতিতে কয়েক দিন রাজনৈতিক সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে শোনা যাচ্ছে!

এদিকে গতকাল পীরজাদা কাসেম সিদ্দিকী একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেছিলেন যে, নওশাদ সিদ্দিকীর ধর্মতলার সভায় যারা অশান্তি করেছিল তারা সব তৃণমূলের লোক। আরাবুলের লোক। আর আজ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে এ নিয়ে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করা হলো। সেই মামলায় আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে উর্দিবিহীন কিছু ব্যক্তি লাঠির উঁচিয়ে বা লাঠিচার্জ করেছে এরা কারা এ বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। কলকাতা হাইকোর্ট সেই মামলা গ্রহণ করেছে। আগামী সপ্তাহে সেই মামলার শুনানি হবে।

এই প্রেক্ষাপটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যে চাপে পড়ল তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবে এ কথা দুঃখের হলেও সত্য যে শাসক দল হয়েও নিজের পার্টি অফিস রক্ষা করতে পারেনি। শাসক দল হয়েও প্রশাসনের কাছ থেকে মিছিল করার অনুমতি পেল না। কেন পেল না? কেন বা কেনই বা প্রশাসন অনুমতি দিল না তাহলে কি ভাঙড় এলাকায় তৃণমূলের পায়ের তলায় মাটি নেই ? দলের মুখপাত্র বড় বড় কথা বলেন, তিনি যদি একটু চিন্তা করে দেখেন কেন শাসক দলের পায়ের তলায় মাটি নেই ! তাহলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঐতিহাসিক ভুল করেছেন নওশাদ সিদ্দিকীকে পুলিশ হেফাজতে রেখে। আবারো বলছি যতদিন তিনি পুলিশ হেফাজতে থাকবেন ততদিন তার টিআরপি বাড়তে থাকবে। আর ভাঙড়ের মাটিতে তৃণমূলের পায়ের তলার জমির সরতে থাকবে!মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত ছিল নেতারা মানুষের কাছ থেকে কেন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেল ? তা নিয়ে সমীক্ষা করা তা না করে নওশাদ সিদ্দিকীকে জেলে পুরে এই রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক হারিয়ে ফেলল । ঐতিহাসিক ভুল এর জন্য আগামী দিনে উনি পস্তাবেন।

 


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ