কলকাতা 

পঞ্চায়েতের আগে তৃণমূল বনাম আরএসএস-এর সংঘাত শুরু!

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : তৃণমূল কংগ্রেস ১২ বছর ক্ষমতায় আসার পর কোন সময়ই এই রাজ্যের আরএসএস-এর সঙ্গে কোন সংঘাতে যায়নি। অন্যদিকে আরএসএস ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তেমনভাবে প্রতিবাদ করেনি। শুধু তাই নয় বিগত কয়েক বছর ধরে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের তীব্র সংঘাত হলেও বাংলার আরএসএস নীরবতা অবলম্বন করেছে। তাই অনেকেই বলে থাকেন আরএসএস এর সঙ্গে তৃণমূলের একটি গোপন সমঝোতা রয়েছে।

কিন্তু সেই সমঝোতা যে আর নেই তা যে কাটতে চলেছে তা কয়েক দিনের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে। বুদ্ধ পূর্ণিমাকে সামনে রেখে রাজ্যজুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতি এবং আইনশৃঙ্খলা অবনতি নিয়ে পথে নামছে আরএসএস। যদিও আরএসএস সরাসরি নিজস্ব ব্যানারে পথে নামছে না তারা ‘বুদ্ধ-দিবসে মহাপরিনির্বাণ পদযাত্রা’ নাম দিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে  ‘সিটিজ়েন এমপাওয়ারমেন্ট ফোরাম’ এর নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে।

Advertisement

আগামী ৫ মে বুদ্ধপূর্ণিমার দিন মিছিল ও সমাবেশের পরিকল্পনা। তবে মিছিল ও সমাবেশকে অরাজনৈতিক চেহারা দিতে এই উদ্যোগ থেকে দূরে রাখা হয়েছে বিজেপিকে। সমর্থকেরা আসতে পারলেও কোনও নেতা যাতে না আসেন তেমনই ভাবনা ফোরামের। আর তা থেকেই প্রশ্ন উঠছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনমুখী বাংলায় এবার কি তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরাসরি পথে নামছে আরএসএস।

আচমকা কোন কারণে, এখন মিছিল ও সভার পরিকল্পনা? আয়োজক ফোরামের অন্যতম উদ্যোক্তা বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় নেতা শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘এখন যা পরিস্থিতি তাতে বাংলায় সর্বস্তরের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের পথে নামা উচিত। খুন, হিংসা, নির্যাতনের রাজ্য হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ। এত খারাপ অবস্থা অতীতে দেখা যায়নি। নারী নির্যাতন থেকে বিরোধী রাজনীতির লোকেদের খুন করা প্রতিদিনের ঘটনা। সেই সঙ্গে দুর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছে গোটা রাজ্য। চাকরি বিক্রি করে জেলে মন্ত্রী, নেতারা। পঞ্চায়েত প্রধানের স্ত্রী সধবা হয়েও বিধবা ভাতা পাচ্ছেন। তাই সবারই পথে নামা উচিত। আমরা অরাজনৈতিক মঞ্চ তৈরি করে সকলকে পাশে নিতে চাইছি।’’

তিনি বলেন, ‘‘তৃতীয় বার তৃণমূল ক্ষমতায় আসার দু’বছর পূর্ণ হতে চলেছে। ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে যে সন্ত্রাস শুরু হয়েছে তা এখনও শেষ হয়নি। বাংলার বহু মানুষ এখনও ঘরছাড়া। অন্য জেলা নয়, অন্য রাজ্যে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে। এটা আশির দশকের কাশ্মীরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তার লক্ষণ। এমন একটা দিন খুব সামনে যখন বাংলার মানুষকে ১৯৪৭ কিংবা ১৯৭১ সালের মতো উদ্বাস্তু হতে হবে।’’

আগামী শুক্রবার হবে মিছিল। প্রথমে জমায়েত উত্তর কলকাতায় স্বামী বিবেকানন্দের পৈতৃক বাসভবনের সামনে। সেখান থেকে মিছিল শুরু হয়ে যাবে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে। মেট্রো রেলের এক নম্বর গেটের সামনে সমাবেশের মঞ্চ বাঁধা হবে। ফোরাম সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই পুলিশের অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়েছে। সেই আবেদন মঞ্জুর না হলে আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতিও রাখছে ফোরাম।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক সপ্তাহ আগেই নবান্নে বিজেপিকে আক্রমণ করতে গিয়ে বলেছিলেন আরএসএস এত খারাপ নয়। তাদের মধ্যে অনেকেই ভালো লোক আছে। কিন্তু বিজেপি অত্যন্ত খারাপ। মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই কি শেষ পর্যন্ত আরএসএস তৃণমূলের বিরুদ্ধে পথে নামছে। আর আরএসএস যদি সত্যিই আন্তরিকতার সঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে পথে নামে তাহলে কি বিদায় ঘন্টা বেজে যাবে!


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ