দেশ 

MBBS Degree Mortgage: স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ জোগাতে নিজের সার্টিফিকেট বন্ধ রাখলেন চিকিৎসক স্বামী, ভালোবাসার এক অনন্য নজির!

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরে। প্রথমে সরকারি হাসপাতাল সেখানে থাকাকালীন সময়ে স্ত্রীর ফুসফুসের ৯৫ ভাগই প্রায় বিকল হয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকের  অদম্য ইচ্ছা শক্তির কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানতে হলো করোনাকে। ততদিনে অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে বিশাল অংকের বোঝা চেপেছে ঘাড়ে। ঋণের দায়ে নিজের চিকিৎসক সার্টিফিকেট বিক্রি করে দিয়েছেন ৭০ লক্ষ টাকায়। তবু স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসায় তাকে সুস্থ করে ফিরিয়ে আনার অদম্য ইচ্ছায় চিকিৎসক হার মানেননি। অন্যদিকে নিজের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে একদিনের জন্য রোগী পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করেনি সাধারণ মানুষকে। এরকম একজন চিকিৎসক শেষ পর্যন্ত তার পরিবারে খুশির হাওয়া আনতে পেরেছেন। স্ত্রীর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বেঁচেছে পরিবার,সন্তানের মুখে হাসি ফুটেছে চিকিৎসকের সার্টিফিকেট বন্ধক দেওয়ার পরেও স্বামীর মুখ উজ্জ্বল হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানে। এই রাজ্যের বাসিন্দা ৩২ বছরের যুবক সুরেশ চৌধুরী।স্ত্রী অনিতা ও পাঁচ বছরের ছেলে নিয়ে পালি জেলার খেরওয়া এলাকায় থাকেন।

Advertisement

কয়েক মাস পরে এই ঘটনা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা আমরা পাঠকবর্গের সুবিধার জন্য তুলে ধরলাম। গত বছর দ্বিতীয় ঢেউয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন অনিতা। তাঁর করোনা ধরা পড়ে। শ্বাসকষ্ট-সহ অন্যান্য উপসর্গ বাড়তে থাকায় অনিতাকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান সুরেশ। কিন্তু রোগীর ভিড়ে শয্যা মেলেনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে যোধপুর এমসে ভর্তি করতে হয়। সুরেশ নিজেও পেশায় চিকিৎসক। ফলে স্ত্রীর দেখভালে জন্যে একটানা ছুটি নেওয়া তাঁর পক্ষেও সম্ভব ছিল না। নিকটাত্মীয়ের উপরে স্ত্রীর দেখাশোনার ভার দিয়ে সে সময় নিজে রোজ হাসপাতালের ডিউটি করেছেন সুরেশ। এ দিকে দিনে দিনে অনিতার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সুরেশ জানতে পারেন, অনিতার ফুসফুসের ৯৫ শতাংশ বিকল হয়ে গিয়েছে। তত দিনে হাল ছেড়ে দিয়েছেন অনিতার চিকিৎসকেরা। তবে স্ত্রীকে সুস্থ করে ঘরে ফেরাতে বদ্ধপরিকর ছিলেন সুরেশ। উন্নত পরিষেবা পেতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ত্রীকে ভর্তি করেন তিনি। অনিতা তখন ভেন্টিলেটরে। ওজন কমে ৫০ থেকে ৩০ কিলোগ্রাম হয়ে গিয়েছে। ফুসফুস আর হৃদযন্ত্র প্রায় বিকল। ইকমো যন্ত্রের সাহায্যে কোনও মতে টিকে রয়েছে প্রাণ। বেসরকারি হাসপাতালে ওই চিকিৎসা চালাতে রোজ প্রায় ১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি বিল হয়েছিল।

পাহাড়প্রমাণ সেই বিলের সামনে ১০ লক্ষ টাকার জমানো পুঁজি ফুরিয়েছে নিমেষেই। এর পর বাকি টাকা জোগাড় করতে নিজের এমবিবিএস ডিগ্রি বন্ধক রাখার সিদ্ধান্ত নেন তরুণ চিকিৎসক। তার বিনিময়ে ৭০ লক্ষ টাকা পান। এ ছাড়া জমি বিক্রি, বন্ধুদের থেকে ধার-দেনা করে জোগাড় হয় আরও কিছু। অবশেষে হাসপাতালের বিল মিটিয়ে স্ত্রীকে সুস্থ করে ঘরে এনেছেন সুরেশ।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ