দেশ 

Sharad Pawar,Mamata Banerjee & Rahul Gandhi : জোটে নারাজ রাহুল, শারদ পাওয়ারের মাধ্যমেই গোয়াতে বিজেপি বিরোধী মহাজোটের শরিক হতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস, গোয়া দখলের স্বপ্ন শেষ!

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বুলবুল চৌধুরী : অনেক আশা নিয়ে গোয়ার গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু গোয়ায় গিয়ে কার্যত বিজেপিরই যে সাহায্য করবে তৃণমূল তা নিয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না। কারণ কারণ তৃণমূল যেটুকু ভোট কাটবে তা বিরোধী দলের, বিজেপির নয়। ফলে বিজেপি বিরোধী শক্তি অনেকটাই কমে যাবে। এই সহজ সরল সমীকরণটি বেশ কয়েক মাস ধরে আমরা বাংলার জনরব বলে আসছিলাম। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ম্যানেজমেন্ট সে কথা শুনতে নারাজ ছিলেন। আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বার  ক্ষমতায় আসার পর ভারত জয়ের স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু ভারত জয় যে খুব একটা সহজ নয় সেটা তিনি এখন মর্মে মর্মে উপলব্ধি করতে পারছেন।

কারণ সম্প্রতি গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে জনমত সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে  বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসকে একটি আসনও দেওয়া হয়নি। বরং সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেস এককভবে ওখানে লড়াই করলে বিজেপি ১৭ থেকে ২৩ টা আসন পেয়ে যেতে পারে। কারণ তৃণমূল কংগ্রেস যদি কয়েক হাজার ভোট পায় তাতেও বিরোধী দলের অনেক প্রার্থী হেরে যেতে পারেন। গোয়াতে সাধারণত হারজিত হয় কয়েক হাজার ভোটের ব্যবধানে বা শ’পাঁচেক ভোটের ব্যবধানে।

Advertisement

আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বি টিম এই কথাটা যদি একবার প্রচারিত হয়ে যায় তাহলে পশ্চিমবাংলার তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতির আঁতুড়ঘরে ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। কারণ বাংলার রাজনীতিতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের ভোটের উপর নির্ভর করে তৃণমূল কংগ্রেস এই রাজ্যে ক্ষমতাসীন রয়েছে। তাই তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির বন্ধু বা বিজেপিকে জেতাতে গোয়াতে গেছে এই সহজ কথাটা যদি প্রচার করে দেওয়া যায় তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস বাংলায় যে আগামী লোকসভা নির্বাচনে ধাক্কা খাবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

তাই শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পিছিয়ে এসেছেন। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত যে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস মুক্ত ভারত গড়ার কথা বলেছিলেন তিনি কীভাবে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করবেন? সেজন্য আসরে নামানো হয়েছে শারদ পাওয়ারকে।

এদিকে কংগ্রেস দল গোয়াতে এনসিপি শিবসেনা কংগ্রেস এবং গোয়ার এক আঞ্চলিক দলের সঙ্গে মহাজোট তৈরি করেছে একইসঙ্গে  মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্ত পার্টিও এই জোটই সামিল হবে। ফলে কার্যত গোয়াতে নিঃসঙ্গ হয়ে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার শারদ পাওয়ারের এর মাধ্যমে কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে তৃণমূল নেতৃত্ব বলে জানা গেছে।

শারদ পাওয়ার আজ মঙ্গলবার মুম্বাইতে সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন,‘‘গোয়ায় আসন্ন বিধানসভা ভোটের জন্য কংগ্রেস ও তৃণমূলের সঙ্গে কথা চলছে।’’

মঙ্গলবার মুম্বইয়ে শরদ বললেন, ‘‘আসন্ন গোয়া বিধানসভার ভোটে জোট বেঁধে চলার জন্য কংগ্রেস ও তৃণমূলের সঙ্গে কথা বলছি। আমরা আমাদের পছন্দের আসনের তালিকা দিয়েছি। কয়েক দিনের মধ্যেই সব চূড়ান্ত হয়ে যাবে। গোয়ার মানুষ বিজেপি-র শাসনে অতিষ্ঠ। এ বার বদল দরকার।’’

আসলে গোয়াতে তীব্র সংকটের মধ্যে পড়েছে বিজেপি সরকার। জনমত সমীক্ষা যাই বলুক না কেন গোয়াতে বিজেপি সরকার গঠন করতে পারবে না। এবার ওখানে কংগ্রেস জোট সরকার হবে। শাসক দল বিজেপির মন্ত্রীও দল ছেড়েছেন গতকাল, ছেড়েছেন শাসকদলের বিধায়কও। তাই মনে করা হচ্ছে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই আরো বেশ কয়েকজন নেতা মন্ত্রী বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন। ফলে গোয়ার পরিস্থিতি এখন কংগ্রেসের অনুকূলে এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেস জোট এর প্রস্তাব পাঠিয়েছে।

কিন্তু জানা গেছে, রাহুল গান্ধী তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট এর বিরোধী। তাই শোনা যাচ্ছে, শারদ পাওয়ার অর্থাৎ এনসিপি’র জন্য বরাদ্দকৃত আসন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে একটা কিংবা দুটি আসন ছাড়া হতে পারে গোয়াতে। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে গোয়া দখলের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন বাংলার তৃণমূল নেতারা, যেভাবে হাঁকডাক করছিলেন তাতে মনে হয়েছিল গোয়াতে তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠা শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শারদ পাওয়ারের হাত ধরে বিজেপি বিরোধী কংগ্রেসের নেতৃত্বে মহাজোটেই শামিল হতে হবে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ