কলকাতা 

গ্রীষ্মের ছুটিতে সামার প্রজেক্ট মাদ্রাসা শিক্ষা প্রক্রিয়াকে জাগরূক রাখল : ড.আবু তাহের কামরুদ্দীন

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

মতিয়ার রহমান : বিশ্বায়নের যুগে যুদ্ধ বিধ্বস্ত পৃথিবী এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর ফলস্বরূপ গোটা বিশ্ব জুড়ে দেখা দিয়েছে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা । ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের রোষানলে পড়ে মানব জাতি আজ দিশেহারা। গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহ এবং তাপ প্রবাহে পুড়ছে গোটা বাংলা। জাতির ভবিষ্যৎ ছাত্র-ছাত্রীদের কথা ভেবে ইতিমধ্যে নির্দেশিকা দিয়ে২২ শে এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্কুল ও মাদ্রাসা বন্ধের নির্দেশ জারি করেছে মাদ্রাসা ও স্কুল শিক্ষা দফতর। এর ফলে ছাত্র-ছাত্রী ,শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবক মহলের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে এই ভেবে যে তাদের সন্তান-সন্ততি দীর্ঘ সময়কাল ধরে শিক্ষা প্রক্রিয়া থেকে আরো একবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে চলেছে। এমনিতেই করোনা কালে লকডাউনে স্কুল এবং মাদ্রাসার পঠন পাঠন বন্ধ থাকায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা। তবে দীর্ঘকালীন ছুটিতে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়ায় যাতে সামান্যতম ক্ষতি না হয় সে কথা ভেবে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পরিষদের সভাপতি ড. আবু তাহের কামরুদ্দীন মহাশয় ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের একই সূত্রে গেঁথে ছুটিতেও সামার প্রজেক্ট করার নির্দেশ দিয়ে জীবন্ত রাখলেন শিক্ষা শিখন প্রক্রিয়াকে। তবে এই ধরনের সদর্থক ছাত্রদরদি পদক্ষেপ তিনি আগেও নিয়েছেন যা তার আধুনিক মননশীল চিন্তা চেতনা থেকেই জাত এবং যেটা সর্বস্তরে প্রশংসার দাবি রাখে ।

করোনাকালে লকডাউনে যখন গোটা জগৎ গৃহবন্ধি এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ এবং শিক্ষা যখন অন্ধকারে নিমজ্জমান ঠিক তখন তিনি মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অনলাইন শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা এবং প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে থাকা ছাত্র ছাত্রীদের কথা ভেবে রেডিওর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে শিক্ষা পৌঁছে দেয়ার মহান কাজটি সাধিত হয়েছিল তারই উদ্যোগে। তাই তার মত এক দক্ষ, যোগ্য, কর্মপটু , ছাত্র ও কওম দরদী এবং সর্বোপরি মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি সদা জাগরূক এমন দায়িত্বশীল সভাপতি পেয়ে পশ্চিমবঙ্গের মাদ্রাসা শিক্ষক মহল এবং মাদ্রাসা শিক্ষার শুভাকাঙ্ক্ষীরা আজ এক আনন্দ ও স্বস্থির নিঃশ্বাস নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার আমল পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছে। এবারের সামার প্রজেক্ট এর ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি যে তিনি যে বিষয়গুলি দিয়েছেন সেখানে তিনি সচেতনতার সাথে খেয়াল রেখেছেন একদিকে যেমন অর্থপূর্ণ এবং বাস্তব বিশ্বের সমস্যা হয় এবং যেন তার সমাধান করাটা অপরিহার্য হয়ে পড়ে এই ব্যাপারটা অন্যদিকে এটি অবশ্যই শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত আগ্রহ, জীবনের ঝুঁকি, চ্যালেঞ্জ এবং আবেগের সাথে সংযুক্ত হয়।প্রাথমিক স্তরে সামার প্রজেক্টে ছাত্রছাত্রীদের জন্য তিনি মৌলিক দক্ষতা বিকাশের উপর জোর দিয়ে স্বাক্ষরতা, সংখ্যাজ্ঞান এবং যোগাযোগ বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

Advertisement

উচ্চ প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের আশেপাশের এলাকা, পরিবেশ এবং প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের স্থানীয় ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ, সরকারি অফিস, উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, পোস্ট অফিস ইত্যাদি সম্পর্কে তারা যাতে একটা ধারণা তৈরি করতে পারে ,জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা এবং পেশাগত দক্ষতা অর্জন এবং বিভিন্ন পেশায় যুক্ত মানুষের সাথে আলাপ এবং তাদের পেশার প্রশংসা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন।নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা যাতে সামার প্রজেক্ট এর মাধ্যমে শিখতে পারে বিভিন্ন জীবন দক্ষতা এবং পেশায়এক্সপোজার ,নিয়োগ যোগ্যতার দক্ষতাকে সম্মান করা, ভাগাভাগি এবং সমানুভূতি বিকাশের আনন্দ, বিভিন্ন পেশার জন্য প্রশংসা মতো ইত্যাদি বিষয় সেই দিকটি লক্ষ্য রেখেই প্রকল্পের বিষয় নির্ধারণ করেছেন। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর সামার প্রজেক্টে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান ও বাণিজ্য, ডিপ্লোমা ও ডিগ্রী কলেজ, গবেষণা কেন্দ্র, রেশম চাষ, টেক্সটাইল কেন্দ্র, বিভিন্ন এনজিও, আদালত, থানা ,পোস্ট অফিস, ব্যাংক ,সাইবার সেন্টার ইত্যাদি বিষয় সামাজিক ও সম্প্রদায় পরিষেবা,জীবিকা প্রকল্পে স্বেচ্ছায় সেবাদান,প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, ডাকঘর, হাসপাতাল, লাইব্রেরী ,ছোট বাচ্চাদের পড়ানো ইত্যাদি বাস্তব এবং সময়োপযোগী বিষয় নির্বাচন করে মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার প্রয়াস করেছেন। তবে গ্রীষ্মকালীন প্রকল্পের বিষয়ে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকার তত্ত্বাবধানে বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক শিক্ষিকারা ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের সাথে প্রয়োজনীয় আলাপ আলোচনা এবং সংবেদনশীল উদ্যোগ গ্রহণ করবেন এমনটাও তিনি বলেছেন।

তিনি আরো বলেন প্রজেক্ট ভিত্তিক নির্দেশনা হল বর্তমানে শিক্ষাদানের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি গুলির একটি যা একই সাথে ইউনিট লার্নিং এবং দক্ষতা বৃদ্ধি উভয়ের বিষয়বস্তু। আজ একবিংশ শতাব্দীতে প্রকল্প ভিত্তিক শিক্ষা একদিকে যেমন ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ্যসূচির বিষয়বস্তু আয়ত্ত করতে সহায়ক হয় তেমনি অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুপ্ত সম্ভবনা, জ্ঞান, দক্ষতা, সমালোচনামূলক চিন্তা ভাবনা, আত্মবিশ্বাস, যোগাযোগ, সৃজনশীলতা, সমানুভূতি সততা স্থিতিস্থাপকতা দায়িত্বশীলতা এবং সহযোগিতার মতো গুণাবলী গুলি কে বিকশিত হতে উৎসাহিত করে। ছাত্র-ছাত্রীদের আত্ম সচেতনতার শিক্ষা দেয় এবং তাদের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক বুদ্ধিমত্তা ও বৃদ্ধির ভিত্তি স্থাপন করে। এছাড়া কমিউনিটি এনগেজমেন্ট এর মধ্য দিয়ে তারা সামাজিক দায়বদ্ধতার মূল্য শেখে এবং তাদের কাছে পরার্থপরতার বোধ গড়ে ওঠার সুযোগ এনে দেয়। যেহেতু প্রকল্প ভিত্তিক শিক্ষা সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রকল্পগুলিতে তাদের ধারণা ও সৃজনশীল চিন্তার দক্ষতা বাস্তবায়িত করার সুযোগ করে দেয় তাই এর ফলে তারা চিন্তাশীল এবং দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে জীবনের দায়িত্ব নিতে শেখে এবং সমস্যার মুখোমুখি এবং তার সমাধানের পথ অনুসন্ধানে উৎসাহিত করে ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য প্রস্তুত করে তোলে।

প্রজেক্ট ভিত্তিক নির্দেশনা বা শিক্ষা হলো বর্তমানে শিক্ষাদানের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি গুলির একটি যা একই সাথে ইউনিট লার্নিং এবং দক্ষতা বৃদ্ধি উভয়ের বিষয়বস্তু

প্রকল্প ভিত্তিক শিক্ষা যেমন একদিকে ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্যসূচির বিষয়বস্তু আয়ত্ত করতে সহায়ক হয় তেমনি অন্য দিকে শিক্ষার্থীদের সুপ্ত সম্ভবনা জ্ঞান দক্ষতা সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা আত্মবিশ্বাস যোগাযোগ সৃজনশীলতা সমানুভূতি সততা স্থিতিস্থাপকতা দায়িত্বশীলতা এবং সহযোগিতার মতো গুণাবলী গুলি কে বিকশিত হতে উৎসাহিত করে এক কথায় প্রজেক্ট ভিত্তিক নির্দেশনা হলো বর্তমানে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি গুলি একটি জায়গায় ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মসচেতনতার শিক্ষা দেয় এবং তাদের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক বুদ্ধিমত্তা ও বৃদ্ধির ভিত্তি স্থাপন করে তাছাড়া কমিউনিটি এনগেজমেন্ট এর মধ্য দিয়ে তারা সামাজিক দায়বদ্ধতার মূল্য শিখবে এবং পরার্থপরতারবোধ গড়ে ওঠার সুযোগ করে দেয় প্রকল্প ভিত্তিক শিক্ষা সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের তাদের প্রকল্পগুলোতে তাদের ধারণা ও সৃজনশীল চিন্তা দক্ষতা বাস্তবায়িত করার সুযোগ এনে দেয় এরপরে তারা চিন্তাশীল এবং দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে জীবনের দায়িত্ব নিতে শেখে সমস্যার মুখোমুখি এবং তার সমাধানের পথ অনুসন্ধানের তাদের উৎসাহিত করবে।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ