অন্যান্য 

সমাজের আদর্শ শিক্ষক হোন সংবাদপত্রের সম্পাদকরাও / সেখ আব্দুল মান্নান

শেয়ার করুন

সেখ আব্দুল মান্নান : গতকাল ছিল  ৫ সেপ্টেম্বর, জাতীয় শিক্ষক সর্বপল্লী ড. রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিন। যা আমরা শিক্ষক দিবস হিসেবে শ্রদ্ধার সাথে পালন করে আসছি। এই শিক্ষক দিবসের মধ্যে দিয়েই আমরা দেশের আপামর শিক্ষক শিক্ষিকাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করি। এক্ষেত্রে আমার একটা কথা বারবার মনে হয় এই শিক্ষক শিক্ষিকা ছাড়াও আমরা সমাজের আর যাদের সুপরামর্শ, সুচিন্তা,সু-আদর্শে জীবনের প্রতি পদক্ষেপে অনুপ্রাণিত হই তারাও আমাদের শিক্ষক। আমরা একটু যদি তলিয়ে দেখি তাহলেই তেমন একাধিক উদাহরণ খুজে পেতে পারি। সেক্ষেত্রে আমরা নিকৃষ্ট প্রাণী পিপড়েকেও ধরতে পারি।তারাও তাদের জীবনযাত্রায় আমাদের প্রভাবিত করে চলেছে প্রতি নিয়ত।যেমন ছোট্ট প্রাণীটি যখন খাদ্য আহরণে যায় তখন দলবদ্ধ ও সারিবদ্ধ হয়ে যায়। এমন কি কোন শত্রু পক্ষের বিরুদ্ধে ওরা যখন প্রতিরোধ গড়ে তোলে তখনো তারা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যায়। সুতরাং ওদের ওই নিয়মানুবর্তিতা ও সঙ্ঘবদ্ধতা কিন্তু আমাদের অনুপ্রাণিত করে। এদিক দিয়ে দেখতে গেলে এই ছোট্ট প্রাণীটিও আমাদের এক ধরণের শিক্ষক।
তেমন একটি জ্বলন্ত উদাহরণ হোল সংবাদপত্র । যাকে আমরা গণতন্ত্রর একটি অন্যতম স্তম্ভ বলে মানি। এই সংবাদপত্র তার খবরা খবরের ভেতর দিয়ে প্রতিদিন সকাল হলেই বয়েস নির্বিশেষে অগণিত পাঠকের দিব্যদৃষ্টি খুলে দেয়। সত্যনিষ্ঠ খবর পরিবেশন করে পাঠকের মনকে আলোকিত করে।বিশেষ করে বৌদ্ধিক দৃষ্টিভঙ্গিতে পাঠকের বিবেককে উন্মোচিত করে।
সংবাদপত্রের বাস্তবোচিত খবরগুলি পাঠকের মনের স্থবিরতা কাটিয়ে চিন্তাশক্তির তীব্রতা
বাড়িয়ে দেয় নি:সন্দেহে। যাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিদিন পরিবেশিত সত্য ও যুক্তিগ্রাহ্য সংবাদ আমাদের ঋদ্ধ করে চলেছে , তার পুরোভাগে রয়েছেন অগণিত সাংবাদিকের পাশাপাশি সংবাদপত্রের কান্ডারি প্রতিজন সম্পাদক। যাদের দূরদৃষ্টি ও আন্তরিকতায় সত্য মিথ্যার ফারাক প্রতি নিয়ত সচেতন করে তুলছে পাঠকদের। বিশেষ করে সংবাদপত্রের বলিষ্ঠ সম্পাদকীয়গুলি পাঠকের বিবেকে জ্ঞানের আলো জ্বালানোর কাজ করে। তাই আমি মনে করি দৈনিক, সাপ্তাহিক এবং পাক্ষিক সহ প্রতিটি সংবাদপত্রের মাননীয় সম্পাদকও এক একজন শিক্ষক।
যদিও আজকাল কখনো কখনো কোন সম্পাদক বা সাংবাদিক কোন ব্যক্তি বা শক্তির প্ররোচনায় প্ররোচিত হয়ে বিরুপ সংবাদ পরিবেশন করে সমাজকে কলুষিত করতে দেখা যায়। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের এবং কোনো মতেই তা কাম্য নয়। সুতরাং যে বা যারা এই অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটায় তারা যে গণতন্ত্রের তথা গণ চেতনার প্রধান স্তম্ভের গড়িমাকেই কলঙ্কিত করে তাতে কোন সন্দেহ নেই। তথাপি আমি বিশ্বাস করি সমাজের প্রতি দায়বদ্ধশীল কোনো সাংবাদিক বা সম্পাদকই ওই গর্হিত কাজে প্রবৃত্ত হবেন না। তাই প্রাত:স্বরণীয় ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিনে(শিক্ষক দিবসে) কামনা করব তাঁর আদর্শের প্রতি সম্মান জানিয়ে সংবাদপত্রের সম্পাদকরাও যুক্তিনিষ্ঠ সংবাদ ও সম্পাদকীয় পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে এক একজন আদর্শ শিক্ষক হয়ে উঠবেন।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ