দেশ 

প্রধান বিচারপতির আপত্তিতে ‘মোদী-শাহর ঘনিষ্ঠ দুই আমলা’ সিবিআই প্রধান হতে পারলেন না , নতুন সিবিআই প্রধান কে ? জানতে হলে ক্লিক করুন

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : একজন গুজরাট ক্যাডারের আইপিএস । নাম যোগেশচন্দ্র মোদী । গুজরাট দাঙ্গার তদন্তে মোদী-শাহকে ক্লিনচিট দিয়েছিলেন । গুজরাটের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নেতা হরেন পাণ্ড্যর খুনের মামলার দায়িত্বেও ছিলেন যোগেশ। এমনকি গুজরাট দাঙ্গার তদন্তে মোদীর বিরুদ্ধে বয়ান দিয়েছিলেন পান্ড্য। জানিয়েছিলেন, দাঙ্গার আগে নিজের বাসভবনে আমলা এবং পুলিশদের ডেকে মোদী হিন্দুদের রাগ মেটানোর সুযোগ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২০০৩ সালে খুন হয়েছিলেন হরেন। রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে খুন হতে হয়েছে বলে সেইসময় অভিযোগ করে হরেনের পরিবার। যোগেশের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়াকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগও তুলেছিলেন বিরোধী ।

এই যোগেশচন্দ্র মোদী এখন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-এর প্রধান । অবসর নেবেন এই মাসেই । তাই তাঁকে সিবিআইয়ের প্রধান করা যাবে না এটা বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরি সোমবার প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা শুধু এই ক্ষেত্রেই আপত্তি করেননি , তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মাস ছয়েক চাকরির মেয়াদ আছে এমন কোনো আমলাকে ওই পদে বসানো যাবে না । ফলে মোদী-শাহ-এর আর একজন ঘনিষ্ঠ অফিসার রাকেশ আস্তানাও সিবিআইয়ের প্রধান হতে পারলেন না। মোদীজি চেষ্টা করেছিলেন অন্তত রাকেশ আস্তানাকে এই পদে বসাতে, কিন্ত সরাসরি বিরোধিতা করলেন দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ।

Advertisement

ফলে, মোদী-শাহের পচ্ছন্দের দুই আমলার মধ্যে একজনকেও সিবিআই প্রধান করতে পারল না কেন্দ্র । তবে কোনও বিতর্ক নয়, স্রেফ আইনি প্রতিবন্ধকতার জন্যই ওই দু’জন এই মুহূর্তে সিবিআই প্রধান হতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রামানা।

উল্লেখ্য,  প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীকে নিয়ে গঠিত বিশেষ নির্বাচন কমিটি আপাতত পরবর্তী সিবিআই প্রধান নিয়োগের দায়ভার সামলাচ্ছেন। সেই নিয়ে সোমবার দীর্ঘ ৯০ মিনিট বৈঠক হয়। সেখানেই আস্থানা এবং যোগেশের নিয়োগে আপত্তি তোলেন প্রধান বিচারপতি। শীর্ষ আদালতের একটি রায়ের উল্লেখ করে তিনি জানান, চাকরির মেয়াদ ছ’মাস বাকি থাকতে কোনও সরকারি আমলাকে পুলিশ প্রধানের ধরনের দায়িত্বে বসানো আইনবিরোধী। আপাতত সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) প্রধান হিসেবে কর্মরত আস্থানা। আগামী ৩১ অগস্ট ওই পদ থেকে অবসর নেওয়ার কথা তাঁর। অন্য দিকে, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র প্রধান  যোগেশ। তাঁর অবসর আগামী ৩১ মে। আইন অনুযায়ী তাঁদের নিয়োগের বিরুদ্ধে মত দেন অধীরও। এর ফলে তিন সদস্যের নিয়োগ কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠের মত আস্থানা এবং যোগেশের বিরুদ্ধে যায়। ফলে পরবর্তী সিবিআই প্রধান হওয়ার দৌড় থেকে ছিটকে যান দু’জনই।

এই পরিস্থিতিতে সিবিআই প্রধান করার ক্ষেত্রে যে চরম সংকটে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । কারণ এতদিন তিনি যা বলতেন তা প্রায় সবাই মেনে নিতেন । মোদীর রাজত্বে এই প্রথম সিবিআই প্রধান নিয়োগে স্বচ্ছতা রাখার পক্ষে সরাসরি সওয়াল করেছেন প্রধান বিচারপতি । প্রধান বিচারপতি এই অনমনীয় দৃঢ়তার প্রশংসা শুরু হয়েছে সব মহলেই । প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে, গত ২৪মে সিবি্আই প্রধান অবসর নিয়েছেন ।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ