জেলা 

Rampurhat Clash: বগটুই-কাণ্ডে সিটের তদন্তেই উঠে এসেছে মূল অভিযুক্ত আজাদ চৌধুরি, আনারুলের সঙ্গে জেলার এক প্রভাবশালীর নেতারও নাম! কে সেই প্রভাবশালী নেতা?

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে মানুষগুলোকে পুড়িয়ে মারার আগে ও পরে রামপুরহাট-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত এবং ধৃত আজাদ চৌধুরীর সঙ্গে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনের বেশ কয়েক বার ফোনে কথা হয়েছিল বলেই গোয়েন্দা সূত্রে দাবি। ওই সূত্রে খবর,  শুধু তা-ই নয়, ওই ঘটনায় জেলার আরও এক প্রভাবশালী নেতার নাম উঠে এসেছে। তাঁর সঙ্গেও ধৃতদের যোগাযোগের স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে বলে গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি।

এই হত্যাকাণ্ডে প্রথম থেকেই নাম জড়িয়েছে আনারুলের। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতারও করেছে। শুক্রবার তাঁকে রামপুরহাট আদালতে তোলা হয়। ১৪ দিন আনারুলকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। যদিও আদালতে আনারুলের দাবি, তিনি নির্দোষ। ‘দিদির’ (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নির্দেশেই আত্মসমর্পণ করেছেন।

Advertisement

আনারুলের আইনজীবী এ দিন আদালতে দাবি করেন, ২২ মার্চের ঘটনার পরে দায়ের করা এফআইআরে তাঁর মক্কেলের নাম নেই। কিন্তু, ‘কোনও এক নির্দেশে’ তড়িঘড়ি এই কাজ করা হল। সেই সময়ে বিচারক তাঁকে থামিয়ে এজলাসে রাজনৈতিক মন্তব্য করতে বারণ করেন। আইনজীবী অবশ্য আরও বলেন, ‘‘ঘটনার দিন থেকে আমার মক্কেল এখানেই (এলাকায়) ছিলেন। তা হলে এত দিন অপেক্ষা করতে হল কেন? কেন প্রথমেই গ্রেফতার করা হল না?’

আনারুলের বিরুদ্ধে অবশ্য বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, খুন, খুনের চেষ্টা, মিলিত ভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। সিট বৃহস্পতিবার বগটুই-কাণ্ডে লালন শেখ নামে ওই গ্রামের আরও এক জনকে কলকাতা থেকে গ্রেফতার করে। লালন তৃণমূলের নিহত স্থানীয় উপপ্রধান ভাদু শেখের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।

শুক্রবার সকালে নয় সদস্যের কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক দল বগটুই গ্রামে যায়। সঙ্গে ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা বিচারক শোভন মুখোপাধ্যায়। তাঁরা সোনা শেখের বাড়িতে যান। ওই বাড়ি থেকেই মঙ্গলবার সকালে সাতটি অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সোমবার রাতে কী ভাবে আগুন লেগেছিল, কোন ধরনের দাহ্য পদার্থ ওই রাতে আগুন লাগানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল— সেই সমস্ত জানতে নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। গ্রামবাসীদের অনেকের অভিযোগ, ভাদু খুনের পরে মহিলা, শিশু-সহ ওই সাত জনকে আগে পিটিয়ে-কুপিয়ে মারা হয়। তার পরে সোনা শেখের বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। নমুনা পরীক্ষা করলেই সেই তথ্য বেরিয়ে আসবে, জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।

এখনও পর্যন্ত পাঁচ জন প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান তারা নথিভুক্ত করেছে বলে সিট সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁদের বয়ান অনুযায়ী, আজাদের নেতৃত্বে ওই দিন প্রায় ২০ জনের একটি দল বগটুইয়ে একটি মুদি দোকানে প্রথম আগুন লাগায়।

সিটের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, গ্রামে আগুন লাগানোর ঘটনা রামপুরহাট থানা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গেলেও, তাদের সক্রিয়তা চোখে পড়েনি। তদন্তে জানা গিয়েছে, ভাদুর ভাড়ায় খাটা দু’টি গাড়ির একটি থানার আইসি-র কাছে, অন্যটি এসডিপিও-র কাছে থাকত। সিটের একটি অংশের দাবি, পুলিশ কোনও জখম ব্যক্তির জবানবন্দি প্রথমে নথিভুক্ত করেনি, যা তদন্তের কাজে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। এমনকি প্রাথমিক ভাবে দায়ের হওয়া মামলায় বিস্ফোরণের কোনও ধারাও যুক্ত করা হয়নি! অথচ প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বাড়িতে আগুন লাগানোর আগে গ্রামে প্রবল বোমাবাজি হয়েছিল।

সিটের তদন্ত ঠিকভাবে এগোচ্ছিল বলে অনেকেই মনে করছেন। গতকাল শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য পুলিশের হাত থেকে এই তদন্তভার কেড়ে নিয়ে সিবিআই এর হাতে দেওয়ার পর প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এর ফলে কি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ হবে নাতো। তবে এ কথা ঠিক সিট তদন্ত করতে গিয়ে বেশ খানিকটা জায়গা গাফিলতি করেছে। সেদিকে নজর থাকবে অবশ্যই সিবিআইয়ের অন্যদিকে বীরভূম জেলার যে প্রভাবশালী নেতার যোগসুত্র সামনে এসেছে তার বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তবে আশা করা হচ্ছে এবার সিবিআই কড়া পদক্ষেপ নেবে। তথ্যসূত্র ডিজিটাল আনন্দবাজার।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ