কলকাতা 

মেধার বিকাশ ঘটলে শিক্ষার মান উন্নয়ন হবে, সমাজের উন্নতি ঘটবে দ্রুত, জানালেন বিশিষ্ট প্রশাসক শেখ নুরুল হক

শেয়ার করুন

সূচনা হল জিডি-স্যান্ডফোর্ডের ফাউন্ডেশন কোর্স

নায়ীমুল হকের প্রতিবেদন : গত কাল শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন মিশন পরিচালিত আবাসিক বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম এবং দশম মানের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য শুরু হলো ফাউন্ডেশন কোর্স। আড়ম্বরহীন হলেও এদিনের অনলাইন সূচনাপর্ব ছিল বেশ আকর্ষণীয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্র-ছাত্রীরা অত্যন্ত উৎসাহ এবং উদ্দীপনার সঙ্গে অপেক্ষা করেছিল এ দিনের অনুষ্ঠানের জন্য।

অনুষ্ঠানের প্রথমে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্যান্ডফোর্ড অ্যাকাডেমির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর বিশিষ্ট প্রকৌশলী শেখ জসিম উদ্দিন মন্ডল। তিনি বলেন দীর্ঘদিন গবেষণার ফসল এই ফাউন্ডেশন কোর্স। অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকার সমন্বয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে এই কোর্স। নানা দিক নজর রেখে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সারাবছরের পাঠ পরিকল্পনাকে সামনে রেখে তৈরি হয়েছে এর বার্ষিক সময়সূচি। সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশনের সিলেবাস এবং কারিকুলামের দিকেও নজর রেখেছেন অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলী। এই কোর্স সমাধা করে ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে ভবিষ্যতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সফল হতে পারে, সে বিষয়টিও মাথায় রেখেছেন তাঁরা। এছাড়াও মাধ্যমিকের মতো পরীক্ষায় শীর্ষে অবস্থান করতে যে গুণ প্রয়োজন তাও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এই কোর্সের মাধ্যমে, বলেন জসিম উদ্দিন মন্ডল।

Advertisement

এরপর গোটা রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ফাউন্ডেশন কোর্সের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট প্রশাসক অবসরপ্রাপ্ত আই এ এস জিডি স্টাডি সার্কেলের চেয়ারম্যান শেখ নুরুল হক। তিনি বলেন মূলত গ্রামে-গঞ্জে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে মেধার বিকাশ অনুসন্ধানে এই কোর্স। কারণ এই ধরনের উন্নত মেধার বিকাশ যত ঘটবে, শিক্ষার মানোন্নয়ন ততই হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে অতি দ্রুত ঘটবে সমাজের উন্নতি। তিনি বলেন, কোনো কিছু মুখস্ত নয় বরং শিখতে হবে হৃদয় দিয়ে। এর মাধ্যমেই সত্যিকারের বিষয়ের প্রতি ভালোবাসা গড়ে ওঠে আর পড়াশোনা হয়ে ওঠে আনন্দময়। তিনি আরো বলেন, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় দশম এবং একাদশ শ্রেণির পাঠ্যসূচিতে আছে বিস্তর ফারাক। এই ফারাক ঘোঁচাতে এ ধরনের কোর্স খুবই উপযোগী হবে। তিনি বলেন, অত্যন্ত গুণী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহায়তায় প্রস্তুত হয়েছে ফাউন্ডেশন কোর্স। এই কাজে শিক্ষক-শিক্ষিকারা যেভাবে এগিয়ে এসেছেন তাতে তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট এবং অনুপ্রাণিতও। আগামী দিনে এই কোর্স সমাজকে পথ দেখাবে বলে তিনি তাঁর দৃঢ়তার কথা জানান।

সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে এদিনের শেষ বক্তব্য রাখেন মহিষাদল রাজ কলেজের জীববিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শুভময় দাস। তিনি বলেন বাজারে ফাউন্ডেশন কোর্স নামে নানা ধরনের পড়াশোনার রীতি চালু আছে। তাদের সঙ্গে আজকে চালু হলো যে কোর্স, তার মৌলিক পার্থক্য হল, এখানে শুধুমাত্র নম্বর পাইয়ে দেওয়া নয়, বরং ছাত্র-ছাত্রীদের ভিত গঠন এবং বিষয় সম্পর্কে ধারণা মজবুত হচ্ছে কিনা সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হবে। এছাড়াও কোনো ঘটনা কেন ঘটছে সেই সম্পর্কে ছাত্র-ছাত্রীদের মনে অনুসন্ধিতসা তৈরি করার চেষ্টা করা হবে, যা তাকে কেবলমাত্র বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটাতে নয়, তাকে করে তুলবে বিশেষ ভাবে প্রাজ্ঞ। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে আন্তঃসম্পর্ক তৈরি করতে শিখবে যখন ছাত্রছাত্রীরা, তখনই বোঝা যাবে, সেই বিষয়ে তার জ্ঞান সম্পূর্ণতার দিকে এগোচ্ছে। এই কোর্স সেরকম ধরনের ছাত্র-ছাত্রী নির্মাণে সক্ষম হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এদিনের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট শিক্ষক এবং স্যান্ডফোর্ড অ্যাকাডেমির এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর পান্থ মল্লিক। সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইংরেজির জনপ্রিয় শিক্ষক শেখ নাসিম উদ্দিন মন্ডল। এই ফাউন্ডেশন কোর্সে থাকছে প্রতিদিন দুটো করে ক্লাস। রবিবার ছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যায় ক্লাস। থাকবে প্রতিটি বিষয়ে হাতে কলমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নির্ধারিত সামেটিভ পরীক্ষার আগে পড়িয়ে দেওয়া বিষয়ের উপর বিশদ পরীক্ষা ব্যবস্থা। মূল্যায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ ক্ষেত্রে থাকবে কাউন্সেলিং এর ব্যবস্থাপনা। গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন এবং জীববিদ্যার উপর প্রস্তুত হয়েছে বিস্তারিত পাঠ-পরিকল্পনা, এসমস্ত ক্লাস নিতে এগিয়ে এসেছেন স্কুল কলেজের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শিক্ষার্থীদের নিয়ে দীর্ঘকাল গবেষণায় নিয়োজিত এমন অনেকেই ইতিমধ্যে নিরলস ভাবে এই কাজ করে চলেছেন বলে জানান স্যান্ডফোর্ড অ্যাকাডেমির অন্যতম কর্মকর্তা শেখ সাবির হোসেন।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ