দিল্লির জনাদেশ প্রমাণ করেছে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সফল হতে পারবে না কোন আঞ্চলিক দল!
সেখ ইবাদুল ইসলাম: দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রাপ্তি শূন্য হলেও ভোট শতাংশ বেড়েছে ২% এর বেশি। তারপরেও কোন অনুশোচনা নেই কংগ্রেস দলের। কারণ বিগত ১২ বছর ধরে দিল্লিতে কার্যত কংগ্রেস অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছিল আপের জন্য। দিল্লি ক্ষমতা হারানোর পর আপের অস্তিত্ব যে সংকটের মধ্যে পড়বে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আর এতেই আশার আলো দেখছে কংগ্রেস। তাই আপ দিল্লিতে বাইশটা আসন পাওয়ার পরও গেল গেল রব উঠেছে অন্যদিকে শূন্য থেকেও কংগ্রেসের মধ্যে খুশির হাওয়া দেখা দিয়েছে।
তাই গতকাল দিল্লি বিধানসভার ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুল গান্ধী জানিয়ে দিলেন জনতা রায় মাথা পেতে নিয়েছেন তবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার দল লড়াই চালিয়ে যাবে।
বিরোধী দলনেতা সোশাল মিডিয়া পোস্টে বলছেন, ‘দিল্লির জনাদেশ বিনম্রভাবে স্বীকার করছি। দিল্লির সব কংগ্রেস কর্মীকে লড়াকু মানসিকতার জন্য ধন্যবাদ। যে ভোটাররা আমাদের সমর্থন করেছেন, তাদেরও ধন্যবাদ।’ এর পরই রাহুলের বার্তা, ‘দূষণ, মূল্যবৃদ্ধি আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে দিল্লিবাসীর অধিকারের এই লড়াই চলবেই।’ দূষণ, মূল্যবৃদ্ধি এবং দুর্নীতি, সোশাল মিডিয়া পোস্টে যে তিনটি ইস্যুর উল্লেখ রাহুল করেছেন সেগুলিই এবারের দিল্লি ভোটে নির্ণায়ক ফ্যাক্টর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সবকটি ফ্যাক্টরেই বিদ্ধ হয়েছে আপ। বস্তুত রাহুলের এই পোস্টও ঘুরিয়ে কেজরিওয়ালকেই খোঁচা।
প্রকৃতপক্ষে দিল্লির জনাদেশ এটা প্রমাণ করেছে যে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি বিরোধী শক্তি টিকতে পারবে না। বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলো যদি নিজেদের মধ্যে ঐক্য রক্ষা করতে না পারে তাদের পরাজয় নিশ্চিত। দিল্লিতে বহু চেষ্টা করেও কংগ্রেস দল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে জোট করতে পারেনি। কংগ্রেস দল মাত্র পনেরোটা আসন চেয়েছিল। যদি এই পনেরোটা আসন দিয়ে কেজরিওয়াল রফা করে নিত তাহলে আর যাই হোক দিল্লিতে বিজেপি জিততে পারত না। নির্বাচনী পরিসংখ্যান বলছে ১৪ টি বিধানসভা কেন্দ্র হেরেছে শুধুমাত্র কংগ্রেসের সঙ্গে ভোট কাটাকাটির কারণে। আর এজন্যই রাহুল গান্ধী আশার আলো দেখছে। কারণ আগামী দিনে দেশের যত বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলি আছে তারা যদি কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা না করে বিজেপির সঙ্গে লড়াই করে এককভাবে টিকতে পারবে না। সেটা বাংলার ক্ষেত্রের প্রযোজ্য। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের দিকে তাকালে সেখানে মিল্কিপুর বিধানসভার উপনির্বাচনের ভালো ভোটের ব্যবধানে হেরেছে সমাজবাদী পার্টি। অথচ ওই আসনটি গতবার সমাজবাদী পার্টির দখলে ছিল এমনকি ওই বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে ফৌজাবাদ লোকসভা কেন্দ্র। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রটি বিজেপির কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল সমাজবাদী পার্টি অথচ তাদের জেতা বিধানসভা আসনটিতে এবার ৬০ হাজারের বেশি ভোটে হেরে গেছে সমাজবাদী পার্টি বিজেপির কাছে। আর এই জয়ের পেছনে ছিল কংগ্রেসের সমর্থন সুতরাং কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বা কংগ্রেসকে অবজ্ঞা করে কংগ্রেসকে তাচ্ছিল্য করে এই মুহূর্তে বিজেপির বিরুদ্ধে কোন আঞ্চলিক দল সফল হতে পারবে না।