জেলা 

ফ্রন্টপেজ অ্যাকাডেমির ভাষাবিদ শহীদুল্লাহ স্মারক সম্মান পেলেন অধ্যাপক আব্দুর রহিম গাজী

শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফ্রন্টপেজ গ্রুপ অফ ইনস্টিটিউশনের পক্ষথেকে “ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ স্মারক সম্মান ২০২৫” প্রদান করা হল। বৃহস্পতিবার ফ্রন্টপেজ কলেজ সভাগৃহে এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই সম্মাননা তুলে দেওয়া হয় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম গাজীকে। তাঁর হাতে এই সম্মাননা প্রদান করেন ফ্রন্টপেজ গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ কামরুজ্জামান। সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস, লেখক সমুদ্র বিশ্বাস, ফ্রন্টপেজ টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ ড. সুনীপা দত্ত, শিক্ষক রুহুল কুদ্দুস, আলহাজ আব্দুস সাত্তার, কাজল ঘোষ সহ অন্যান্যরা।

বাংলা ভাষা চর্চা ও অবদানের জন্য আমরা এ বছর অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম গাজী সাহেবকে এই সম্মাননা দিতে পেরে গর্বিত বলে জানান ফ্রন্টপেজ গ্রুপ অফ ইনস্টিটিউশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ কামরুজ্জামান। তিনি বলেন আমাদের পার্শ্ববর্তী হাড়োয়ার পেয়ারা গ্রামে ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ জন্মগ্রহন করেন। তিনি শুধু একজন ভাষাবিদ নয়, একজন ধার্মিক মানুষ ছিলেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃত বিষয় নিয়ে তৎকালীন সময়ে পড়তে গিয়ে ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাঁধার সম্মুখীন হন। পরে সেই সংস্কৃত ভাষায় তিনি ডিগ্রি ও পাণ্ডিত্য লাভ করেন। তাঁর সম্মানার্থে আমরা ২০১০ সাল থেকে এই সম্মাননা প্রদান করছি “ভাষাবিদ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ স্মারক সম্মান” এই নামে। বিগতদিনে বহুগুণী মানুষকে সম্মান জানাতে পেরে আমাদের ফ্রন্টপেজ একাডেমি গর্বিত। এবছর আমরা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান, অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম গাজীকে সম্মাননা প্রদান করেছি।

Advertisement

সম্মাননা পেয়ে আপ্লুত অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম গাজী বলেন চারিদিকে একটা দ্বন্দ্ব ও নৈরাজ্যের অস্থির পরিবেশ। সেরকম সময়ে দাঁড়িয়ে একজন বিজ্ঞ মানুষ ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এর নামে সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে। তাঁর কথা আলোচনা হচ্ছে। এটা খুবই ভালো দিক।

তাঁর মতে এই ধরনের মনীষীদের স্মরণে শুধু অনুষ্ঠান করলে হবে না, তাঁদের দেখানো পথে সমাজের পরিবর্তন ঘটাতে হবে। ছাত্র ছাত্রীদের মানুষের মতো মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার কথা তিনি বলেন।

তিনি আরও জানান ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ সাহেব ৪০ টি ভাষা জানতেন। ১৮ টি ভাষার পন্ডিত ছিলেন। বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন। ‘৪৬ এর দাঙ্গার সময় বসিরহাটের টাউন হলে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। দুই বাংলায় তিনি বাংলা ভাষা চর্চায় অবদান রেখে গেছেন। তিনি ভাষা শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় ও সামাজিক শিক্ষা পালনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন বলে তিনি জানান।

বিশিষ্ট লেখক সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস বলেন সংস্কৃত পড়ার জন্য ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ সাহেব আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আর তারপর তিনি সেই ভাষা রপ্ত করে পাণ্ডিত্য অর্জন করেন। পূর্ব পাকিস্তানে সরকারি ভাষা উর্দু করার বিপক্ষে গিয়ে তিনি মাতৃভাষা বাংলাকে সরকারি ভাষা করার পক্ষে সওয়াল করেন। তাঁদের উত্তরসূরী হিসাবে আমরা বর্তমান পরিস্থিতিতে লড়াই সংগ্রাম করতে পারছি না কেন? বলে তিনি প্রশ্ন তোলেন। আর আমরা ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ এর দেখানো পথে কেন এগিয়ে যেতে পারছি না বলে তিনি মন্তব্য করেন। এরজন্য তিনি সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এদিন ফ্রন্টপেজ একাডেমিতে চাঁদের আলো নামক একটি দেওয়াল পত্রিকার উদ্বোধন করা হয়।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ