বাংলার মুসলিম সমাজের নবজাগরণের অন্যতম পীঠস্থান হুগলী মাদ্রাসা কেন বন্ধ করা হল তা জানতে অবশ্যই চাইবে সাধারন মানুষ ,হাজী মুহাম্মদ মহসীনের স্বপ্নের মাদ্রাসার এই পরিণতি কী বাংলার মুসলমানরা মেনে নেবে ? : ইমতিয়াজ আহমেদ
ইমতিয়াজ আহমেদ মোল্লা- পশ্চিমবাংলার রাজনৈতিক আঙিনায় পরিচিত মুখ । তাঁর বক্তব্য দেওয়ার ক্ষমতা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় যেকোনো বড় রাজনৈতিক দলের কাছে তিনি গ্রহণযোগ্য হতে পারতেন। কিন্ত তিনি বিশ্বাস করেন কোনো মনুবাদী রাজনৈতিক দল এদেশের সংখ্যালঘু – দলিত স্বার্থে কোনো কাজ করবে না। তাই তিনি নিজেই গড়ে তুলেছেন ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল পার্টি । তাঁর পার্টির উদ্দেশ্য- লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বাংলার জনরব নিউজ পোর্টালের মুখোমুখি । আজ চতুর্থ কিস্তি ।
প্রশ্ন : আপনার ভাষনে বেশির ভাগটাই রাজ্যের বর্তমান শাসক দলের বিরুদ্ধে থাকে । যদিও শাসক দল অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করে চলেছে বলে দাবি করে । এ প্রসঙ্গে আপনার প্রতিক্রিয়া ?
ইমতিয়াজ আহমেদ : উন্নয়ন কোন উন্নয়নেরকথা বলছেন ? কলকাতা শহরকে লন্ডন বানানোর প্রতিশ্রুতি শুনেছিলাম । কিন্ত কী হয়েছে ? শহরের সব বেআইনিভাবে তৈরি করা পাঁচ তলা বাড়িকে পুরসভা অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । কিন্ত খোঁজ নিলে দেখা যাবে যে সব পাঁচতলা বাড়িকে পুরসভা অনুমোদন দিয়েছে তার ভিত দুতলার আছে । তাহলে দুতলার ভিত দেওয়া বাড়িতে পাঁচতলা হয়েছে । কোনো রকম পরীক্ষা না করে তাকে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে । আবার প্রমোটাররা ওই পাঁচতলা বাড়িকে বেআইনিভাবে আর এক তলা তুলছে । এরফলে কলকাতার প্রায় সমস্ত সংখ্যালঘু প্রধান এলাকার বাড়িগুলি বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে । হয়তো বিশ-পঁচিশ বছর পর কোনো অঘটন ঘটে যেতে পারে ।
যদি লন্ডন বানানোর ইচ্ছা থাকে তাহলে তো পুরসভা তো সিদ্ধান্ত নিতে পারতো যে অনুমোদন নিয়ে বাড়ি তৈরি করতে হবে । এরফলে বাড়িগুলি অনেক বেশি মজবুত ও টেকসই হত । আসলে আমাদের শহরের মেয়র একই সঙ্গে মন্ত্রী, জেলার সভাপতি । আবার তার উপরে রয়েছে পারিবারিক অশান্তি তা সত্ত্বে তাকেই কেন এতগুলি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা এখনও আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না । আসলে এটাই মনুবাদী শাসন ।
প্রশ্ন : হুগলী মাদ্রাসা খোলার সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে । তারপরেও আপনারা আন্দোলন করছেন সভা-সমাবেশে এ নিয়ে সরব হচ্ছেন কেন ?
ইমতিয়াজ আহমেদ : হুগলী মাদ্রাসা তিন বছর বন্ধ হয়ে গেছে । তারপর আমাদের আন্দোলন সেইসঙ্গে বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠনের আন্দোলনের ফলে সরকার হুগলী মাদ্রাসা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সংবাদপত্রে খবর বেরিয়েছে । কিন্ত একটি বন্ধ হয়ে যাওয়া শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলতে গেলে যা প্রয়োজন তাহল প্রথমে শিক্ষক, পরে ছাত্র । খোলা হবে বলা হচ্ছে, শিক্ষক পাঠানো হয়েছে কী ? আর শিক্ষক না পাঠানো হলে ছাত্র স্বাভাবিকভাবেই আসবে না । হাজী মুহাম্মদ মহসীনের স্বপ্নের মাদ্রাসার এই পরিণতি কী বাংলার মুসলমানরা মেনে নেবে ? চুঁচড়া শহরে একদম হৃদয়ে অবস্থিত এই মাদ্রাসাটি বাংলার মুসলিম সমাজের নবজাগরণের অন্যতম পীঠস্থান তা কেন বন্ধ করা হল তা জানতে অবশ্যই চাইবে সাধারন মানুষ ।