কলকাতা 

শহিদুল ইসলাম একজন আদর্শ মানুষ ছিলেন, শুধু মাদ্রাসা শিক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, বাংলার সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রেও তিনি নীরবে কাজ করে গেছেন, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে মরহুমের স্মরণসভায় বললেন বিশিষ্টজনরা

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সংবাদদাতা বাংলার জনরব: গত ৪ জুন শনিবার এক ভাবগম্ভীর অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে মাদ্রাসা ছাত্র আন্দোলনের প্রথম সারির অন্যতম নেতা শহিদুল ইসলামের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালতলা ক্যাম্পাসে। গত ২৭ এপ্রিল ২০২২ প্রয়াত সহৃদয় সমাজকর্মী প্রাক্তন ছাত্রনেতা শহিদুল ইসলামের সমগ্র কর্মজীবন নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করেন তাঁর সমসাময়িক ছাত্র আন্দোলনের সতীর্থরা।

এদিন ছাত্র আন্দোলনের তাঁর সতীর্থদের মধ্যে আন্দোলনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন মোফ্ফাকেরুল হোসেন, রবিউল ইসলাম, মুস্তাকিম শাহাজী,আবুল কালাম, গোলাম মহিউদ্দিন। মাওলানা আবু সালেহ রিজুয়ানুল করিমের দোয়ার মাধ্যমে সভার কাজ শেষ হয়। ফুরফুরা শরীফের বড় পীর সাহেবের জামাই মাওলানা আবু সালেহ রেজওয়ানুল করিম ছিলেন শহিদুল ইসলামের সহ যোদ্ধা। তিনি এদিন মাদ্রাসা শিক্ষা আন্দোলনে শহিদুল ইসলাম সাহেবের বিভিন্ন কাজের উল্লেখ করে স্মৃতিচারণা করেন।

মাদ্রাসা ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা শহিদুল ইসলামের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ রেখে আন্দোলনে শরীক ছিলেন যিনি, তিনি হলেন মোফ্ফাকেরুল ইসলাম। এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, শহিদুল ইসলামের মত একজন নেতার আন্দোলনের ফলেই মাদ্রাসা বোর্ড পুনর্গঠিত হয়েছিল এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শংকর রায় স্কুল গুলোর মত মাদ্রাসা গুলিকে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। এসবই হয়েছিল শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে আমাদের সেই আন্দোলনের ফসল। আমরা এটাও জানি তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মৃত্যুঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় নানা কারণে মাদ্রাসাগুলো অনুমোদন দিতে দেরি করলে শেষ পর্যন্ত শহিদুল ইসলামের চাপে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শংকর রায় বাধ্য হয়েছিলেন এই দপ্তরটি নিজের হাতে নিতে।

এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে শহিদুল ইসলামের আরেক সহযোগী বিশিষ্ট শিক্ষক ও প্রাক্তন মাদ্রাসার ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর হোসেন বলেন, মরহুম শহিদুল ইসলাম সাহেব ছিলেন আমাদের কাছে আদর্শ। তাঁর দেখানো পথেই আমরা পরবর্তীকালে আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করেছি। যখনই কোন সংকটে পড়েছে তখনই তার কাছে আমরা ছুটে যেতাম তিনি আমাদের পরামর্শ দিতেন এবং সংকট উত্তরণের পথ বাতলে দিতেন।

এদিনের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শহিদুল ইসলামকে কাছ থেকে দেখেছেন বিশিষ্ট লেখক ও প্রাবন্ধিক সাংবাদিক ও শিক্ষক ইবাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, শহিদুল ইসলামের মত মিল্লাত দরদী, মানুষ দরদী, একজন ঈমানদার ব্যক্তি এই বাংলায় আর কেউ আছেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তিনি এদিন তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, শহিদুল ইসলাম ছিলেন একজন আদর্শ মানুষ। একজন আদর্শ ইসলামের সেবক। তিনি যা বলতেন তা তিনি পালন করে গেছেন ।

বুলবুল পত্রিকার সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, পশ্চিমবাংলার মুসলিম সমাজের সাহিত্য চর্চা জন্য শহিদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে গেছেন। তিনি ভেবেছিলেন সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে যদি মুসলিমরা এগিয়ে আসতে না পারেন তাহলে আগামী দিনে মুসলিম সমাজ বিকশিত হতে পারবে না। তাই শুধু মাদ্রাসা শিক্ষার আন্দোলন নয় একইসঙ্গে তিনি সাহিত্য-সংস্কৃতি বিকাশের ক্ষেত্রে নীরবে কাজ করে গেছেন।

অন্যান্যদের মধ্যে তাঁর বিষয়ে বক্তব্য রাখেন পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক তথা সাবেক সাংসদ আহমদ হাসান ইমরান, মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের প্রাক্তণ ছাত্র নেতা মুহাম্মদ কামরুজ্জামান প্রমুখ।

এদিনের মহতী সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত শহিদুল ইসলামের পুত্র ব্যবসায়ী শোয়েব খান, মুহাম্মদ মোদ্দাসির, মাসুদুর রহমান লস্কর, কামরুজ্জামান দফাদার, ফারুক মন্ডল, নূর ইসলাম, প্রখ্যাত উপন্যাসিক জারিফুল হক, সাহিত্যিক সেখ আব্দুল মান্নান, অধ্যাপিকা সালেহা বেগম, অধ্যাপক জাহান আলী পুরকাইত প্রমুখ।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ