কলকাতা 

সন্তানের হাতের লেখা ভালো হবে কীভাবে : সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের নয়া উদ্যোগ আলপনা কর্মশালায় অভিভাবকদের মধ্যে উৎসাহের জোয়ার

শেয়ার করুন

নায়ীমুল হকের প্রতিবেদন: ‘কোভিড অতিমারিতে আমরা কেবল টিকে ছিলাম, কিন্তু বাঁচতে তো হবে’ গুরু মশায়ের এই কথায় মন্ত্রের মতো কাজ হয়েছিল সেদিন, দু’বছর পর যেদিন কলকাতার সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র ও তাদের অভিভাবকদের জন্য কথাগুলো বলছিলেন প্রধান শিক্ষক ও তার সহকারী শিক্ষক মহাশয়রা। আমাদের প্রত্যেককে একে অপরের জন্য ভাবতে হবে। এই কথায় মন্ত্রের মতো কাজ হয়। কয়েক গুণ উৎসাহ নিয়ে বিদ্যালয়মুখী হয় ছাত্ররা, সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত হন তাদের অভিভাবকেরাও। আসলেই  শিক্ষার বৃত্ত সম্পূর্ণতা পায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক এই তিন-এর সম্মিলিত প্রচেষ্টায়।

সম্প্রতি সেই তাগিদ নিয়ে সন্তানের হাতের লেখা সুন্দর হবে কীভাবে, অভিভাবকদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল দু’দিনের এক আলপনা কর্মশালা। অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উপস্থিত ছিলেন তিরিশ-চল্লিশ জন অভিভাবক। খুব মসৃণ ছিল না এই কর্মশালায় তাঁদের উপস্থিত থাকা। ঘর সংসারের নানা প্রতিবন্ধকতায় হারিয়ে যায় তাঁদের নিজেদের জন্য একটুকু সময় বার করা। তবু তারই মধ্যে একটা ব্যবস্থা করে নিয়েছিলেন তাঁরা। দুদিনের কর্মশালা শেষে তাঁদের প্রাপ্তির ভাঁড়ার যে কত অংশ পূর্ণ হয়েছে, তা বেশ বোঝা যাচ্ছিল তাঁদের উজ্জ্বল চোখ-মুখ দেখে। দু’দিনই তাঁরা উপস্থিত ছিলেন আঁকার নানারকম সরঞ্জাম নিয়ে। বাধ্য ছাত্রের মতো কাজ করে গেছেন, অনুসরণ করেছেন মাস্টারমশাইদের নানারকম নির্দেশ। ব্রাশের সহজ টানে অতি দ্রুত বাটিক প্রিন্টের ডিজাইন তৈরি করতে হয় কেমন করে, তা দেখাচ্ছিলেন চন্দননগরের বিশিষ্ট শিল্পী মনিকান্ত অধিকারী। এছাড়াও ছিলেন হেয়ার স্কুল-এর পুস্পাল সরকার, সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের প্রণব কুমার দাস এবং পিয়ালী ভট্টাচার্য্য।

Advertisement

সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের অভিভাবকদের জন্য নতুন এই চিন্তাকে অত্যন্ত সাধুবাদ জানালেন বিশিষ্ট শিক্ষাপ্রেমী ও শিক্ষক শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রম ইনস্টিটিউট-এর প্রতিষ্ঠাতা বাঁশরী মোহন হালদার। হাতের লেখা সুন্দর করার সহজ উপায় নিয়ে তাঁর দীর্ঘদিনের গবেষণা।

তিনি জানালেন স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের অর্ধমাত্রা, পূর্ণমাত্রা ও পার্শ্বমাত্রা নিয়ে অক্ষর সাজানো এবং সেখান থেকে ছড়া, গল্প ও গানের মাধ্যমে ভালো লাগা সৃষ্টি হতে পারে শিক্ষার্থীর। সেটাই হাতের লেখা ভালো করার এবং সমগ্র শিক্ষা প্রক্রিয়াকে আনন্দদায়ক করার আসল কৌশল।

অভিভাবকদের জন্য নয়া এই পরিকল্পনা যাঁর চিন্তাপ্রসূত সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. দেবব্রত মুখার্জি জানালেন, পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দুশো বছর পূর্তি উৎসব-এর অঙ্গ হিসেবে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মহর্ষি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত আর্ট গ্যালারি উন্মোচন হবে। যেখানে দুশো বছরের স্মৃতি বিজড়িত স্মারকসমূহ সংরক্ষিত থাকবে, আর থাকবে বড়োসড়ো একটি আলমারি, যেখানে থাকবে নানা ধরনের আকর্ষণীয় বই-পুস্তকে ভরা। আর এর দায়িত্বে থাকবে ছাত্ররাই। আলমারির গায়ে বড় বড় করে লেখা থাকবে, বই পড়ো এবং পড়াও।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ