কলকাতা 

বাংলাদেশ ও ত্রিপুরায় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে কলকাতায় বিক্ষোভ মিছিল মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : ত্রিপুরায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা তাদের ধর্ম স্থান ভাঙচুর এবং বাড়িঘর অগ্নিসংযোগ করে দেয়ার বিরুদ্ধে কলকাতায় পথে নামল পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়ন। আজ বৃহস্পতিবার ঠিক বেলা দুটো নাগাদ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালতলা ক্যাম্পাস থেকে মিছিল শুরু হয়। কোভিড বিধি মেনে এই মিছিল শুরু হয় তাই এই মিছিলে অল্প সংখ্যক জমায়েত হয়েছিল।

তবে অল্প সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী জমায়েত হলেও বা মিছিলে অংশ নিলেও তাদের স্লোগান ছিল বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা দিতে হবে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে হামলা হয়েছে তারও নিন্দা করে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়ন। একইসঙ্গে ত্রিপুরায় যেভাবে সংখ্যালঘু সমাজের ধর্মস্থান থেকে শুরু করে ওই সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়া হয়। হাসিনা সরকার সেম সেম ধ্বনি দেয়ার পাশাপাশি বিপ্লব দেব সরকারের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদে গর্জে ওঠে কলকাতা।

Advertisement

প্রতিবাদ মিছিল বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে তালতলা ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। যদিও এই মিছিল তালতলা ক্যাম্পাস থেকে রানী রাসমণি রোড পর্যন্ত হওয়ার কথা ছিল কিন্তু কলকাতা পুলিশ অনুমতি না দেওয়ার কারণে সেই মিছিল মাঝপথেই শেষ হয়ে যায়। এরপর তালতলা ক্যাম্পাসে এক সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শিক্ষক মোজাফফর হোসেন বলেন, ধর্ম যার যেমন তার কাছেই থাকবে ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ চলবে না। বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে হবে সেদেশের হাসিনা সরকারকে একইসঙ্গে মোদী অমিত শাহদেরও এ দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ত্রিপুরাতে যা হয়েছে তা সব সভ্যতার সীমা অতিক্রম করেছে। এটা মেনে নেওয়া যাবে না।

কোলকাতার মনু মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউশনের টিচার ইনচার্জ বিশিষ্ট শিক্ষক প্রাক্তন মাদ্রাসা ছাত্র নেতা মাওলানা আব্দুল ওহাব বলেন, দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব স্বাধীন দেশের সরকারের। সেটা বাংলাদেশের হোক কিংবা আমাদের প্রিয় ভারতবর্ষের হোক। কিন্তু দুঃখের হলেও সত্য সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার চলছে ।অত্যাচার অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। ত্রিপুরাতে যা হয়েছে তা নিয়ে সব রাজনৈতিক দলের নীরবতা আমাদেরকে ভাবাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

প্রাক্তন মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের নেতা মাওলানা আব্দুল মোমেন স্পষ্ট করে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ব্যক্ত করে বলেন ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল করার জন্য আমরা রানী রাসমণি পর্যন্ত অনুমতি চেয়েছিলাম পুলিশ অনুমতি দেয়নি। তিনি আরো বলেন, কোভিড বিধি মেনে আমরা আর মিছিল করতে চেয়েছিলাম সেজন্য মাত্র ৫০ জন এই মিছিলে শামিল হয়েছে। আমরা যদি ইচ্ছা করি হাজার হাজার মানুষকে শামিল করতে পারি। এ বিষয়ে পুলিশকে অনুরোধ করবো আপনারা আমাদের মিছিল করার অধিকারটা কেড়ে নেবেন না। কারণ মনে রাখবেন বাম সরকারের পতনের নেপথ্যে ছিল মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের লাগাতার আন্দোলন। কারণ কোন সরকারি একাদিক্রমে রাজত্ব করতে পারেনা কালের চক্রে সব সরকারের সব রাজনৈতিক দলের পরিবর্তন হবেই। তিনি এই কারণেই পুলিশকে নিরপেক্ষ অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।

এদিনের সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের প্রাক্তন ছাত্র নেতা মাওলানা আবু সিদ্দিক খান, মাওলানা আতিয়ার রহমান, মাদ্রাসার ছাত্র ইউনিয়নের বর্তমান রাজ্য সম্পাদক মাসুদুর রহমান, মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের বর্তমান কার্যকরী সভাপতি সাজিদুর রহমান, মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি তৌফিক আহমেদ প্রমুখ।

 


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ