দেশ 

করোনা আতংকের মধ্যেই দিল্লির সহিংসতায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল জমিয়ার গবেষককে

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে সমগ্র দেশ যখন লকডাউন ঠিক সেই সময় দিল্লির সংঘর্ষেজড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন জামিয়ার পিএইচডি-র ছাত্র মিরান হায়দার । গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে দিল্লিতে পরিকল্পিত হামলা হয় । এক তরফাভাবে আক্রমণ চালানো হয় বলে বিভিন্ন সংবাদ-মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে । এমনকি দিল্লি হাইকোর্টও বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রার বিরুদ্ধে প্ররোচনামূলক বক্তব্য দেওয়ার দায়ে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছিল ।

ঘটনার সব কিছু বিবরণ সামনে থাকা সত্ত্বে ওই সহিংসতার পিছনে অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী নাকি ছিলেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র। তদন্তে নেমে পিএইচডির ছাত্র  মিরান হায়দারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। দিল্লিতে যে ব্যাপক হিংসা পরিস্থিতি তৈরি হয় তাতে রীতিমতো অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে দেশের রাজধানী। ওই হিংসার ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ জন মারা যায় এবং শতাধিক মানুষ আহত হয়। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়া ছাত্র মিরান হায়দার রাজনীতিবিদ লালু যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল বা আরজেডি-র দিল্লি যুব শাখারও প্রধান। বর্তমানে হায়দারকে দিল্লি পুলিশ স্পেশাল সেলের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

Advertisement

ফেব্রুয়ারি মাসে সপরিবারে ভারত সফরে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর ওই দুই দিনের সফরকালেই উত্তাল হয়ে ওঠে দিল্লি। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন চলার সময় সিএএ-র পক্ষে ও বিপক্ষে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় ৪ দিন ধরে লাগাতার সংঘর্ষ-হানাহানি চলে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। ওই হিংসার ঘটনায় ৫৪ জন মানুষ নিহত হন। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন শতাধিক মানুষ।

ঘটনার তদন্তে নেমে দিল্লি পুলিশ জানতে পারে যে, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেই উত্তরপ্রদেশ থেকে বেশ কিছু গুণ্ডাকে ভাড়া করে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয় ঝামেলা করার জন্যে। এই গণ্ডগোল চলাকালীন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের “জনগণের প্রতি শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব বজায়” রাখার আহ্বান জানিয়ে একটি প্রকাশ্য বিবৃতি দেওয়ার পরেও কিছু কিছু জায়গায় সহিংসতা অব্যাহত থাকে।

দিল্লিতে সেই সময় ওই হিংসা এমন আকারে ছড়ায় যে দেখে মনে হচ্ছিল ওই অঞ্চলগুলো কোনও জনবসতি নয়, একটি যুদ্ধক্ষেত্র। এলাকার বাড়িঘর এবং দোকানপাট পুড়িয়ে দেওয়া হয়, এমনকী দিল্লি পুলিশের সঙ্গে উত্তেজিত জনতার ব্যাপক সংঘর্ষও হয়। কিছু বিক্ষোভকারীকে দেখা যায় দিনের আলোয় বুক ফুলিয়ে হাতে বন্দুক নিয়ে ঘুরে বেড়াতে এবং এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াতে। এলোমেলো গুলি চালনায় বেশ কয়েকজন আহতও হন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে কথা দিয়েছিলেন দিল্লির সহিংসতার বিচার ন্যায়ভাবে করা হবে । বিশ্বের তাবড় তাবড় মিডিয়া যাকে দিল্লির সহিংসতার জন্য দায়ী করছে তাকে জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হল আর জামিয়ার ছাত্র মিরানকে গ্রেফতার করা হল তাও করোনা আতংকের মাঝেই !

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ