আন্তর্জাতিক 

১২ দিন ধরে বোমা বর্ষণ করার পরেও হামাসের হাতে পণ বন্দী ২০৩ জন ইসরাইলি নাগরিকের একজনকেও মুক্ত করতে পারেনি বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার, শুধু অসহায় মানুষের মৃত্যু মিছিল!

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : একটানা ১২ দিন ধরে নিরস্ত্র অসহায় ফিলিস্তিনিদের পানীয় জল এবং বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়ে এক অন্ধকার দেশে পাঠিয়ে আকাশপথে টনটন বোমা বর্ষণ করেও একজন পণবন্দীকে ইসরাইল মুক্ত করতে পারেনি। সংবাদ মাধ্যমের কাছে ইসরাইল বড় বড় কথা বললেও একজন হামাস যোদ্ধাকেও এখনো পর্যন্ত মারতে পারেনি ইসরাইলের বোমা। কিন্তু হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিকে খুন করছে ইসরাইলের বোমা বিশ্ব মানব নীরব দর্শক।

আজ বৃহস্পতিবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন গাজা ভূখণ্ডে হামাসদের হাতে এখনো ২০৩ জন ইসরাইলি নাগরিক বন্দি রয়েছে। গত ৭ই অক্টোবরই বলা হয়েছিল দেড়শ জন ইসরাইলি নাগরিককে পণ বন্দি করেছে হামাস এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৩। অথচ নিরীহ নিরস্ত্র জনতার উপরে ক্রমাগত বোমা বর্ষণ করে শান্তির বার্তা শোনাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে ২০৩ জন নয় এর চেয়ে আরো বেশি সংখ্যক ইসরাইলি নাগরিককে বন্দী করে রেখেছে হামাস। শুধু তাই নয় হামাস ইসরাইলের একটি বড় শহরকে দখলে রেখেছে সেখান থেকে তাদেরকে সরাতে পারেনি, ইসরাইলের সেনাবাহিনী।

Advertisement

গত ৭ অক্টোবর রকেট হানা এবং প্যারাগ্লাইডারে চড়ে ইজ়রায়েল ভূখণ্ডে হামলার পাশাপাশি, স্থলপথেও অনুপ্রবেশ করেছিল হামাস বাহিনী। গাজ়া সীমান্তে ইজ়রায়েলের তৈরি ইস্পাতের ‘দি গ্রেট স্মার্ট ফেন্স’ ভেঙে ঢুকে পড়ে কয়েকশো ইসরাইলি কে বন্দি করেন হামাস যোদ্ধারা। তাঁদের এখন গাজ়ার ভূগর্ভস্থ কোনও সুড়ঙ্গে আটকে রাখা হয়েছে বলে মনে করছে ইসরাইল সেনা। আর তাঁদের মুক্ত করার যুক্তি দেখিয়েই স্থলপথে গাজ়া ভূখণ্ডে অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে ইসরাইল সেনা।

গত মঙ্গলবার রাতে গাজ়ার আল-আহলি আল-আরবি হাসপাতালে হামলায় প্রায় ৫০০ প্যালেস্তিনীয় নাগরিকের মৃত্যুর পরেও ইসরাইলি সেনার বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিরাম পড়েনি। সেই সঙ্গে চলছে সীমান্ত সংঘর্ষও। তেল আভিভের হুমকির জেরে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ৩৬৫ বর্গ কিলোমিটার ভূখণ্ডের ২৩ লক্ষ বাসিন্দার অর্ধেকের বেশি।

বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরাইল সেনার সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন সশস্ত্র প্যালেস্তিনীয় সংগঠন ‘পপুলার রেজিস্ট্যান্স কমিটি’র কমান্ডার রাফত আবু হিলাল। হামাস এবং প্যালেস্তিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে)-পরেই গাজ়ার তৃতীয় বৃহত্তম সংগঠন ‘পপুলার রেজিস্ট্যান্স কমিটি’। এ বার গাজ়ার লড়াইয়ে তাদের ‘ভূমিকাও’ সামনে এল। প্রসঙ্গত, হামাসের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, ইসরাইলি বিমানহানায় ১৩ জন পণবন্দি নিহত হয়েছেন।

যদিও হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করলে পনবন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে। কিন্তু ইসরাইলি সরকার এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। ফলে সংকট ঘনীভূত হচ্ছে আগামী দিনে আরো বেশি করে সংঘর্ষ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে গাজা ভূখণ্ডে স্থলপথে ইসরাইলি সেনারা প্রবেশ করলে তাদের উপর নানা দিক দিয়ে আক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেটা কতটা রুখতে পারবে সে নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যদিও ইসরাইল সেনাদের প্রযুক্তি অনেক উন্নত তবুও যেখানে মানুষ সঙ্গে নেই সেই যুদ্ধে জেতা খুব কঠিন হয়ে যায় । তাই ইসরাইলের সামনে গভীর সংকট যদি তারা স্থলপথে গাজায় প্রবেশ করে তাহলে সেই যুদ্ধে কতটা সফল হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।

 


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ