প্রয়োজন হলে পরিষেবা বন্ধ করে দেব, তবু এনক্রিপশন ভাঙবো না দিল্লি হাইকোর্টে কেন এমন কথা বললেন হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ ?
বাংলার জনরব ডেস্ক : প্রয়োজন হলে ভারত থেকে হোয়াটসঅ্যাপ কে গুটিয়ে নেওয়া হবে,তবুও ২০২১ এর তথ্যপ্রযুক্তি আইনের চারের দু ধারাকে কার্যকরী করবে না whatsapp। কারণ হোয়াটসঅ্যাপ সাধারণ মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে দুই ব্যক্তির মধ্যে মেসেজ আদান-প্রদান কোনভাবেই অন্যের কাছে পৌঁছাবে না এবং অন্যের জানার বিষয় হবে না এমনকি whatsapp নিজেও জানতে পারবে না। সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ দায়বদ্ধ। আজ শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্টে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যে মামলা হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ করেছিল সেই মামলার শুনানিতে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ এই দাবী জানান।
আদালতের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয় বিশ্বের কোন দেশ কি আপনাদের কাছ থেকে কোন তথ্য নেয় না উত্তরে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ জানান না আমেরিকা তো নেয় না ব্রাজিলের মতো দেশ আমাদের কাছ থেকে কোন তথ্য নেয় না।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তথ্যপ্রযুক্তি আইন, ২০২১ ঘোষণা করে কেন্দ্র। বলা হয়েছিল ফেসবুক, টুইটার (বর্তমানে এক্স), ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের (WhatsApp) মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলিকে নয়া নিয়ম মেনে চলতে হবে। প্রয়োজনে চ্যাট অনুসরণ করে কোনও তথ্যের উৎস সন্ধান করতে হবে।
আর এপ্রসঙ্গেই এদিন হোয়াটসঅ্যাপ তথা মেটার আইনজীবী তেজস কারিয়া বলেন, মানুষ এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করতে চায় কেননা এখানে সব সময় মেসেজ এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপ্টেড। অর্থাৎ মেসেজ যিনি পাঠাচ্ছেন ও যিনি রিসিভ করছেন, তাঁরা ছাড়া কেউই সেই মেসেজ পড়তে পারে না। এমনকী হোয়াটসঅ্যাপও নয়। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ”একটা প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আমরা বলতে চাই, আমাদের যদি এনক্রিপশন ভাঙতে হয় তাহলে হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়ে চলে যাবে।” পরে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এই নিয়ম মানতে গেলে প্রতি বছর কোটি কোটি মেসেজ সংরক্ষণ করতে হবে। এ এমন এক চাহিদা, যা বিশ্বের কোনও দেশে লভ্য নয়। এবার তা করতে গেলে বছরের পর বছর ধরে কোটি কোটি মেসেজ সংরক্ষণ করেই যেতে হবে।
এর পর প্রধান বিচারপতি মনমোহন এবং বিচারপতি মনমীৎ প্রীতম সিংহ অরোরার বেঞ্চ তাঁর কাছে জানতে চায়, ”বিশ্বে কোনও দেশই কি এই ধরনের তথ্য জানতে চায় না? এমনকী দক্ষিণ আমেরিকাতেও নয়?” জবাবে কারিয়া বলেন, ”না, এমনকী ব্রাজিলেও নয়।”
এদিকে আদালতকে তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, যদি ২০২১ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইন চালু না করা যায় তাহলে তদন্তকারী সংস্থাগুলির পক্ষে ফেক মেসেজের উৎস খুঁজে বের করা অত্যন্ত দুষ্কর হয়ে পড়বে। ফলে সেই ধরনের মেসেজ অন্য প্ল্যাটফর্মেও ঘুরতে থাকবে। এতে সমাজের শান্তি ও শৃঙ্খলা ধ্বংস হবে।