কলকাতা 

Hiranandani vs Mahua : অর্থ ও উপহার দাবি করতেন মহুয়া হলফনামা দিয়ে জানালেন দুবাই-কেন্দ্রিক ব্যবসায়ী হীরানন্দানি, চাপে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : মহুয়া মৈত্র ফেঁসে গেলেন বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন । এর ফলে তাঁর সাংসদ পদও খারিজ হয়ে যেতে পারে । কারণ যে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা ও উপহার নিয়ে আদানির বিরুদ্ধে সংসদে প্রশ্ন করতেন বলে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে অভিযোগ করেছেন, সেই দুবাই কেন্দ্রিক ব্যবসায়ী হীরানন্দানি হলফনামা দিয়ে এই অভিযোগ মেনে নিয়েছেন । স্বাক্ষর করা ‘হলফনামা’য় হিরানন্দানি মেনে নিয়েছেন যে তিনি মোদী সরকার এবং আদানি গোষ্ঠীকে অস্বস্তিতে ফেলার মতো প্রশ্ন তোলার ক্ষেত্রে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়াকে ব্যবহার করেছেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই ওই ‘হলফনামা’র কথা জানিয়েছে।

দুবাই-কেন্দ্রিক ব্যবসায়ী হীরানন্দানির থেকে নেওয়া অর্থ ও উপহারের বিনিময়ে মহুয়া লোকসভায় প্রশ্ন করেছেন এমন অভিযোগ তুলে গত রবিবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি পাঠান বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। স্পিকারের কাছে মহুয়াকে সাংসদ পদ থেকে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করার আর্জিও জানিয়েছেন নিশিকান্ত। আবার আইনজীবী জয় অনন্ত দেহাদ্রাই মহুয়ার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলে সিবিআই প্রধানকে চিঠি দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই মঙ্গলবার লোকসভা স্পিকার মহুয়ার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ কতটা সত্যি, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে লোকসভার এথিক্স কমিটিকে। এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এল দুবাইকেন্দ্রিক ব্যবসায়ী হীরানন্দানির ‘হলফনামা’।

নিশিকান্ত এবং দেহাদ্রাইয়ের একই অভিযোগ। তাঁদের দাবি, ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির থেকে অর্থ, উপহার নিয়ে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন মহুয়া। সেই সঙ্গে মোদী এবং শাহের নাম জড়িয়েছেন তিনি। এই সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার আইনি চিঠিও পাঠিয়েছেন মহুয়া। তাতে নিশিকান্ত এবং দেহাদ্রাইয়ের বিরুদ্ধে পাল্টা বিস্তর অভিযোগ তুলেছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। দু’জনেই তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে জানিয়ে মহুয়ার দাবি, প্রতিশোধস্পৃহা থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।

হীরানন্দানি ‘হলফনামা’য় স্বীকার করেছেন যে তিনি মহুয়াকে ব্যবহার করে লোকসভায় আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কিত প্রশ্ন তুলেছেন সংসদে। মহুয়া শিল্পপতিকে সংসদের লগ-ইন আইডি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন নিশিকান্ত। সেটাও স্বীকার করেছেন হীরানন্দানি। মহুয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন উপহার নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তাতেও মান্যতা দেওয়া হয়েছে হীরানন্দানির ‘হলফনামা’য়। বলা হয়েছে, মাঝেমাঝেই নানা আব্দার করা হত। দাবি থাকত বিলাসবহুল সামগ্রী, দিল্লির সরকারি বাসভবন সংস্কার করিয়ে দেওয়া, ছুটি কাটানো বা বেড়ানোর খরচের জন্যও দাবি করা হত। সেটা যেমন দেশের বিভিন্ন জায়গায়, তেমন বিদেশেও।হীরানন্দানি আরও জানিয়েছেন, মহুয়ার সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় ২০১৭ সালে। বেঙ্গল বিজ়নেস সামিটে যোগ দিতে তিনি কলকাতায় এসেছিলেন। পরবর্তী কালে মহুয়ার সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব গাঢ় হয়। মনে হতে থাকে যে মহুয়ার মাধ্যমে তিনি বিরোধী দলশাসিত রাজ্যগুলিতে কাজের সুযোগ পেতে পারেন। কারণ শ্রী গান্ধী, শশী তারুর, পিনাকি মিশ্রের সঙ্গে মহুয়ার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।

মহুয়া অবশ্য আগেই এই সব অভিযোগকে অসত্য বলে দাবি করেছেন। প্রথম থেকেই তাঁর অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলার জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে। আইনি নোটিসে মহুয়া এটাও বলেন যে, তিনি নিশিকান্ত দুবের ভুয়ো ডিগ্রি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন। সিবিআই ও নিশিকান্তের কাছে অভিযোগ জানানো আইনজীবী দেহাদ্রাইও মহুয়ার ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ ছিলেন। পরে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

মনে করা হচ্ছে একজন ব্যবসায়ী যেভাবে হলফনামা দিয়ে স্বীকার করেছেন তিনি মহুয়াকে আদানির বিরুদ্ধে সংসদে কাজে লাগিয়েছেন তাতে কৃষ্ণনগরের সাংসদের পক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থন করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে । যদিও মহুয়া দাবি করেছেন, এসব করা হয়েছে জোর করে তাতে এটা প্রমাণ করা যাবে না যে তিনি ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অর্থ বা উপহার নেননি । এখন দেখার বিষয় সংসদে সবচেয়ে সরব এই সাংসদের পরিণতি কী হয় ?


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ