ক্যাম্পাসেই জঙ্গি স্মরণসভা, দেশদ্রোহীতার অভিযোগ দায়ের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে
জানা গিয়েছে বৃহস্পতিবার উপত্যকায় সেনা ও জঙ্গি সংঘর্ষে মৃত্যু হয় মান্নান বাসির ওয়ানি নামে এক হিজবুল জঙ্গির। সেই ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র ছিল। পরে তাকে বরখাস্ত করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপরই সে এক ছবি পোস্ট করে জানায় জঙ্গি দলে যোগ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুতে শোকসভার আয়োজন করে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু পড়ুয়া।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে আলিগড় সিভিল লাইন্সের এসএইচও বিনোদ কুমার বলেন, “সাব-ইন্সপেক্টর ইশরার আহমেদের অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এফআইআরে দুই কাশ্মীরি পড়ুয়া ওয়াসিম আয়ুব মালিক ও আব্দুল হাফিজ মীরের নাম রয়েছে। এছাড়াও কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় কাশ্মীরি পড়ুয়াদের নামে অভিযোগ করা হয়েছে, যারা ক্যাম্পাসে ওয়ানির স্মরণসভার আয়োজন করেছিল।” এফআইআর অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গত বৃহস্পতিবার আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাশ্মীরি পড়ুয়ারা ‘আজাদি, আজাদি’ বলে স্লোগান তোলে। দেশের বিরুদ্ধেও তারা স্লোগান তুলেছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এসএইচও জানিয়েছেন যে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭, ১২৪এ, ১৫৩-এ ও ১৫৩-বি ধারায় এফআইআর করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে এসএইচও আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। ক্যাম্পাসে যে সিসিটিভি রয়েছে, তার ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বাকি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হবে। তবে এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”
ক্যাম্পাসের মধ্যেই ভারত বিরোধী স্লোগানের পাশাপাশি আজাদির শ্লোগানও তারা তোলে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে নামে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ১৪৭, ১২৪এ, ১৫৩-এ ও ১৫৩-বি ধারায় এফআইআর করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ‘নমাজ-এ-জানাজা’ আয়োজন করার অভিযোগে শুক্রবার ন’জন কাশ্মীরি পড়ুয়ার বিরুদ্ধে নোটিস জারি করেছে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। দুই অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোক্টর ও এক ডেপুটি প্রোক্টরকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই কমিটিকে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আব্দুল হামিদ।
ইতিমধ্যেই পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখার জন্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু কাশ্মীরী যুবককে ঘটনার জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।