কলকাতা 

মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার উত্তরপত্রে অন্য কেউ ‘কলম চালিয়েছে’ অভিযোগ পরীক্ষার্থীর, সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিকে উত্তর পত্র পরীক্ষা করার নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন যে বাস্তুঘুঘুদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে বর্তমানে তা ভুক্তভোগীরা সকলেই জানেন । মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অধ্যাপক আবদুর রউফকে সরিয়ে দেওয়ার পর কার্যত শাসক দলই সার্ভিস কমিশনের নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছে । সম্প্রতি বদলীর নামে বেশ কয়েকজনকে আইন ভেঙে বদলী করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । এমনকি কলকাতা হাইকোর্টের কেস নম্বর উল্লেখ বদলী করা হয়েছে সাধারণ মানুৃষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য । কেস নম্বর  পরীক্ষা করে দেখা গেছে আদালত আইন মেনে বদলী করতে বলেছে । আর ওই কেস নম্বরকে হাতিয়ার কোনো রূপ কাউন্সিলিং ছাড়াই বদলী করা হয়েছে । এরকম তথ্য আমাদের হাতে এসেছে ।

এবার কলকাতা হাইকোর্টে নাকানি চোবানি খেতে চলেছে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন । ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি শারীর শিক্ষা ও কর্মশিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নেওয়াার জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেই পরীক্ষাতে নাকি ব্যাপক কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে । মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের আধিকারিকদের ব্যবহার চূড়ান্ত অভদ্রতায় পৌছে গেছে । তথ্য জানার অধিকারে আবেদন করার পরেও কোনোভাবেই তথ্য দিতে চান না আধিকারিকরা ।তথ্য জানতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ।

এদিকে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের কর্মশিক্ষা ও শারীর শিক্ষার শিক্ষক নিয়ো্গ মামলায় কড়া অবস্থান নিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আবদুল হামিদ নামে এক পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) বাতিল করার অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ তাঁর পরিবর্তে অন্য কেউ উত্তরপত্রে ‘কলম চালিয়েছে’ । উত্তরপত্র যাচাইয়ের জন্য শুক্রবার সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির (সিএফএসএল) ডিরেক্টর এবং ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিকে মামলায় যুক্ত করার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের দাবি, ‘ভুল’ থাকায় উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) বাতিল করা হয়েছে ওই পরীক্ষার্থীর। কিন্তু পরীক্ষার্থীর অভিযোগ, তিনি যথাযথ ভাবেই উত্তর দিয়েছেন। অন্য কলমের কালি উত্তরপত্রে রয়েছে বলে আরটিআই (তথ্যের অধিকার আইন) করে জানতে পেরেছেন বলে দাবি করেন মামলাকারী। যে কালো কলমে পরীক্ষা দিয়েছিলেন পরীক্ষার্থী, সেটি তিনি আদালতে জমা দিয়েছেন।

বিচারপতি জানিয়েছেন, উত্তরপত্র খতিয়ে দেখবে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি। পরীক্ষার্থীর কলমের কালির সঙ্গে অন্য কলমের কালি যাচাই করা হবে। পরীক্ষার খাতা, কলম শুক্রবার, ২৫ অগস্টের মধ্যে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে তা সিএফএসএল-কে পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ ব্যাপারে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিএফএসএল-কে। এই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্যে শিক্ষায় দুর্নীতি এখন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

মামলাকারী আব্দুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। বঞ্চিত করা হয়েছে আমাকে। আরও অনেকের সঙ্গে এ রকম দুর্নীতি হয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি এই পরীক্ষা হয়। ফল প্রকাশ হয় ওই বছরের ১১ অগস্ট।

যে সব মহান পুরুষরা মাদ্রাসা পরিচালন সমিতির হাতে দায়িত্ব দিলে সর্বনাশ হয়ে যাবে বলে মনে করেন তারা কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশের কী বলবেন ?


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ