কলকাতা 

বুদ্ধি ও সততার সঙ্গে লড়াই চালিয়ে গেলে জীবনের সফলতা কেউ আটকাতে পারবেনা, নিট পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্যান্ডফোর্ড অ্যাকাডেমির আলাপচারিতায় বললেন গুণীজনেরা

শেয়ার করুন

নায়ীমুল হকের প্রতিবেদন: ডাক্তার হওয়ার লড়াইয়ে যারা দিন-রাত এক করে নিজেকে প্রস্তুত করে চলেছে, সে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে রবিবার এক আকর্ষণীয় আলাপচারিতার আয়োজন করেছিল কলকাতার স্যান্ডফোর্ড অ্যাকাডেমি। কলকাতা নিউটাউনের প্রধান কার্যালয়ে রবিবার পড়ন্ত বিকেলে ছিল এই আলাপচারিতার আকর্ষণীয় আয়োজন। হাজির হয়েছিলেন আমাদের রাজ্য সহ বিভিন্ন রাজ্যের বিশিষ্ট গুণীজনেরা। এদিন স্যান্ডফোর্ড অ্যাকাডেমির আমন্ত্রণে নিট পরীক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করা সহ ইফতার পার্টি ও চা চক্রে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তরের কারিগরি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধিকর্তা ডঃ অমলেন্দু বসু, অসম তিনসুকিয়া মার্গারিটা কলেজের ইংরেজি সাহিত্যের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপিকা দীপশ্রী দাস সরকার, বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ অবসরপ্রাপ্ত ইউনিসেফ কনসালট্যান্ট মেচবাহার শেখ, ত্রিপুরার বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও সমাজসেবী তাপস দত্ত, বিশিষ্ট রসায়ন শিক্ষক অধ্যাপক আসিফ মুমতাজ, বিশিষ্ট সমাজসেবী রোটারিয়ান দীপক গুপ্ত, স্যান্ডফোর্ড অ্যাকাডেমির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর বিশিষ্ট সমাজসেবী ও প্রকৌশলী শেখ জসিম উদ্দিন মন্ডল সহ রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ।

জীবনে সফল হতে গেলে শীর্ষক এ দিনের আলাপচারিতায় বারবার উঠে এসেছে জীবনে লড়াইয়ের কথা। লড়াই ছাড়া কেউই কখনও শীর্ষে উঠতে পারেনা। এমনকী শীর্ষে ওঠার পরও নিজের অবস্থান ধরে রাখতে চালিয়ে যেতে হয় নিরলস পরিশ্রম। আর পরিশ্রমের সঙ্গে সংযুক্ত হতে হয় মেধা এবং সততা, তাহলে সেই লড়াই হয়ে ওঠে আদর্শ এবং তা কখনই অসফল হয় না। লক্ষ করলে দেখা যায়, প্রত্যেক সৎ মানুষ-ই জীবনে সফল হয়েছেন। সুন্দর জীবন ও সমাজ গড়তে সততার মূল্য অপরিসীম। আসলে সত মানুষদের তো কোনো পিছুটান থাকে না, সঠিক কথা বলতে কখনো তাঁদের দুবার ভাবতে হয় না। যে সমাজে সততার পথে বাধা সৃষ্টি হয়, সে সমাজ নিজেকে নিজের ধ্বংসের পথ প্রশস্ত করে মাত্র। এ’ বিষয়ে উপস্থিত সকল ছাত্র-ছাত্রীকে অত্যন্ত সজাগ থাকার পরামর্শ দেন উপস্থিত গুণীজনেরা।

Advertisement

 

দূর-দূরান্ত থেকে উপস্থিত গুণীজনদের স্বাগত জানাতে গিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন স্যান্ডফোর্ড অ্যাকাডেমির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর শেখ জসিম উদ্দিন মন্ডল। বিশেষ করে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য তিনি বলেন এর মুল্য তোমাদেরকে দিতেই হবে। কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে তোমাদের লড়াইয়ে তোমাদের পিতা-মাতার পাশাপাশি আমরা সকলে আছি, বলে জানান তিনি। এদিন বিশিষ্ট শিক্ষক গৌরাঙ্গ সরখেলের সঞ্চালনা ছিল অত্যন্ত মনমুগ্ধকর।

এদিন ‘স্যান্ডফোর্ড শিক্ষা সম্মান ২০২২’ পদক প্রদান করা হয় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মী অধ্যাপিকা দীপশ্রী দাস সরকারকে। স্যান্ডফোর্ড ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে এই উপহার তুলে দেয় স্যান্ডফোর্ড অ্যাকাডেমির ছাত্র-ছাত্রীরা। দীপশ্রী দাস সরকার তা অতি স্নেহের সঙ্গে গ্রহণ করেন এবং নিজের জীবনে এটি অতি বড় এক সম্মাননা বলে উল্লেখ করেন। পরক্ষণেই খানিক তিনি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন আর তাঁর জীবনের নানা চড়াই-উৎরাই, ঘাত-প্রতিঘাতের মাধ্যমে বেড়ে ওঠা এবং বড় হয়ে ওঠার কথা শোনান।

এদিন আলাপচারিতার পর বড় দুটো আকর্ষণীয় পর্ব ছিল, নানারকম ফল-মূলে সাজানো ইফতার পর্ব এবং পরবর্তীতে চায়-পে-আড্ডা। তবে সবকিছু ছাড়িয়ে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পৌঁছে যায় এদিন শিশু শিল্পী এহান আসিরের কন্ঠে রবীন্দ্র সংগীত। সকলেই একযোগে বলে ওঠেন, “Sweet my child, I live for thee.” তোমাদের জন্যই আমাদের বেঁচে থাকা।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ