Communal Harmony: সম্প্রীতির অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন মুম্বাইয়ের প্রিয়া সিংহ, ক্যাব চালককে নামাজ পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করালেন!
বাংলার জনরব ডেস্ক : ভারতের মাটি যে সম্প্রীতির মাটি সৌহার্দের মাটি তা বারবার প্রমাণিত হয়েছে। যদিও ইদানিং এই সম্পর্কের বাতাবরণকে ভেঙে ফেলার জন্য একটা অংশের মানুষ সক্রিয় হয়ে উঠেছে । তবু এখনো ভারতবর্ষের মাটি থেকে চিরতরে সম্প্রীতি বন্ধনকে তুলে ফেলতে পারেনি কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন গুলি। তাই দিল্লি জাহাঙ্গীরপুরি যখন দাঙ্গার আগুনে জ্বলে উঠে ঠিক তখনই এই দেশে তরুণ প্রজন্মের এক-সন্তান ধর্মীয় সহিষ্ণুতা এবং ধর্মীয় বিভেদের বেড়াজাল থেকে নতুন করে সম্প্রীতি নজির তৈরি যখন করেন তখন এটাই আমাদের ভারতবর্ষ।
ঘটনার বিবরণে জানা যাচ্ছেে, মুম্বাইয়ের বাসিন্দা প্রিয়া নামে এক হিন্দু তরুণী বিদেশ থেকে ফিরে ছিলেন বিমানবন্দরের নেমে অ্যাপের মাধ্যমে বুক করেছিলেন গাড়ি। সেই গাড়িতে করে আসার সময় মেয়েটি লক্ষ্য করে তার গাড়ির ড্রাইভার রোজা রেখেছেন। তখন মেয়েটি জানতে চান আপনি কি রোজা রেখেছেন? উত্তরে গাড়িচালক বলেন রোজা রেখেছি ম্যাডাম! রাস্তায় ইফতার করেছি। এর পরেই মেয়েটি গাড়ির চালকের কাছে জানতে চাই আপনি নামাজ পড়বেন না? গাড়ি চালাতে চালাতে নামাজ পড়া কি সম্ভব ? তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না সবটাই বুঝে ফেলে বুদ্ধিমান ওই যুবতী। তাই ওই প্রিয়া নামক মেয়েটি গাড়ির চালককে নামাজ পড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য বলেন রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করাতে।

গাড়ির চালক ধর্মপ্রাণ মুসলিম হওয়ার কারণে মাগরিবের নামাজ পড়ার তাগিদেই তিনি গাড়ি দাঁড় করান। এরপর এই মেয়েটি গাড়ি থেকে নেমে গাড়িচালককে নামাজ পড়ার সুযোগ করে দেন। পরে ওই মেয়েটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিষয়টি দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরেন। প্রিয়া সিং এর বাড়ি মুম্বাই। আর ঘটনাটি ঘটেছে ১৫ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের দিন। ঠিক তার পরের দিনই খোদ রাজধানী শহরে ধর্মীয় বিদ্বেষ এ একে অপরের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অথচ প্রিয়া সিংহ রা নতুন ভারত গড়ার চেষ্টা করে চলেছেন।
সমাজমাধ্যমে নিজের সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন প্রিয়া। প্রিয়া লিখেছেন, “এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভারতবর্ষের কথাই আমার বাবা মা আমাকে শিখিয়েছেন।” পরে চালকের সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মানবতা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় চালকের সঙ্গে, এমনটাও জানিয়েছেন ওই তরুণী।
নতুন প্রজন্মের প্রিয়া সিংহরাই আমাদের দেশের সত্যিকার অর্থে সম্প্রীতির বার্তা বাহক। দেশের এই সম্প্রীতির বিপন্নের কালে আমাদের দেশের সামনে প্রিয়া সিংহরা ভবিষ্যৎ। যে ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখেছিলেন মহাত্মা গান্ধী, জহরলাল নেহেরুরা সেই ভারতবর্ষের সত্যিকার অর্থেই উত্তরসূরি হচ্ছেন এই প্রিয়া সিংহ। এদের জন্য আমাদের সকলের গর্ব হওয়া উচিত। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয়া সিংহ অন্যতম সেলিব্রেটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। এই মেয়েটির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছে সমগ্র দেশের মানুষ। তারা বলতে চেয়েছে প্রিয়া সিংহরাই আসল ভারতবর্ষের প্রতিনিধি সর্বধর্ম সমন্বয়ের মিলনক্ষেত্র হলো প্রিয়া সিংহের মতো মানুষেরা।

