West Bengal Assembly : বিধানসভায় নজিরবিহীন বিক্ষোভের জেরে রাজ্যপাল পুরো ভাষণ না পড়েই বক্তব্য শেষ করলেন
বাংলার জনরব ডেস্ক: বিধানসভায় নজিরবিহীন বিক্ষোভের জেরে রাজ্যপালকে বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। তার পরেও বিজেপি বিধায়ক রা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। রাজ্যপাল নিচে থেকে বিজেপি বিধায়কের শান্ত থাকার অনুরোধ করলেও রাজ্যপালের সেই প্রস্তাব বিজেপি’র বিধায়ক রা প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত রাজ্যপাল বিধানসভার অধিবেশন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চান। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীদের মধ্যে বসে থাকেন। এরপরেও হই হট্টগোল চলতে থাকলে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধে ভাষণের প্রথম লাইনটি এবং শেষ লাইনটি পড়ে রাজ্যপাল তাঁর বক্তব্য শেষ করেন। এরপর রাজ্যপাল বিধানসভার ছেড়ে রাজভবন চলে যান।
দীর্ঘ জটিলতার পর সোমবার বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। প্রথা অনুযায়ী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের উদ্বোধনী ভাষণ দেওয়ার কথা। তার আগেই বিধানসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। স্পিকারের আসনে বসে বেশ কিছুক্ষণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন ধনকড়।এদিকে বিক্ষোভের মাত্রা ক্রমশ বাড়তে থাকে। পুরসভা নির্বাচনে অশান্তির অভিযোগ তুলে ক্রমশ সুর চড়াতে থাকে বিজেপি। নেতৃত্বে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই বিক্ষোভের জেরে বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন জগদীপ ধনকড়।
জানা গিয়েছে, জগদীপ ধনকড়ের পথ আটকান অরূপ বিশ্বাস, ববি হাকিম। পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে ফের আসনে ফেরেন রাজ্যপাল। বিক্ষোভ থামাতে এরপর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ডাকেন রাজ্যপাল। সমস্যা জানতে চেয়েছেন বলেই খবর। এদিকে বিজেপির লাগাতার স্লোগানের পালটা দিতে থাকে তৃণমূলের একাংশ। সব মিলিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। কতক্ষণে সমাধান সূত্র মিলবে, তা অজানা। যদিও বিক্ষোভের মাঝেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, রাজ্যপাল ভাষণ পেশ করেছেন।
এদিকে রবিবার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজভবনে তলব করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সেখানে রাজ্যপাল তাঁর ভাষণ সরাসরি সম্প্রচারের দাবি জানিয়েছিলেন। সে বিষয়ে রবিবার স্পিকার কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ধনকড়ের ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার হবে না।
সোমবার অধিবেশনে বিক্ষোভরত বিজেপি বিধায়কদের থামতে অনুরোধ করেন রাজ্যপাল। তাঁরা কথা না শোনায় রাজ্যপাল বিধানসভা ছেড়ে বেড়িয়ে যেতে চান। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের অন্য মন্ত্রীরা তাঁর পথ রোধ করেন। হাতজোড় করে ফিরহাদ হাকিম অনুরোধ করেন রাজ্যপালকে। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও রাজ্যপালকে থেকে যাওয়ার অনুরোধ করেন। তৃণমূলের মন্ত্রী এবং বিধায়কেরা রাজ্যপালকে ঘিরে ফেলে আটকে দেন। বিজেপি-র বিক্ষোভের মধ্যেই হাতজোড় করে মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধ করেন রাজ্যপালকে। তাঁর কথা শুনে ফের বসে পড়েন রাজ্যপাল।
রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পর বিরোধীদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কাজ না হওয়ায় বক্তৃতা না দিয়েই বসে পড়েন রাজ্যপাল।