দেশজুড়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে ক্যাব আইন পরিবর্তনের পথে কেন্দ্র !
বাংলার জনরব ডেস্ক : আগে –ভেবে চিন্তে কাজ না করার খেসারত দিতে চলেছে মোদী সরকার । দেশজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে আন্দোলনের জেরে অস্বস্তিতে মোদী সরকার । বিশেষ করে অসম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করার ফলে এই আইন বাতিল কিংবা সংশোধন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে । জানা গেছে ক্রিসমাসের পরেই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেন্দ্র । এমনিতেই এই আইনে মুসলিম সম্প্রদায় বাদে সবাইকে এতে রাখা হয়েছে যাদেরকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে । উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির নিজস্ব সংস্কৃতিতে আঘাত আসতে পারে এটা ভেবে তারা গণআন্দোলন শুরু করেছে । এমনকি অসমে বিজেপির নেতা-কর্মীদের বাড়ি লক্ষ্য করে হামলা হচ্ছে । মুখ্যমন্ত্রীকেও বিমানবন্দরে ২ ঘন্টা আটকে রেখে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা ।
এই পরিস্থিতিতে অসমের রাজনৈতিক দল অসম গণপরিষদ সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে এই আইন বাতিলের দাবিতে । এই আইনের বাতিলের দাবিতে অসমের একাধিক বিজেপি নেতা পদত্যাগ করেছেন । এমনকি সরকারের পদে থাকা ব্যক্তিরাও পদত্যাগ করেছেন । আগামী কাল সোমবার অসমের সমস্ত সরকারি কর্মীরা একযোগে কর্মবিরতি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে । অসমের কর্মচারী পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে , কেন্দ্র যদি এই আইন প্রত্যাহার না করে তা হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য সরকারি কাজকর্ম বন্ধ করে দেওয়া হবে । বয়কট করা হবে ।
এদিকে জাতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পরই অমিত শাহ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে ক্যাব আইন বাতিল কিংবা পরিবর্তন করা হবে । মূলত যেভাবে দেশজুড়ে হিংসা চলছে সেই পরিপ্রেক্ষিতেই এই মত পরিবর্তন বলে জানা যাচ্ছে। আজ রবিবার ঝাড়খন্ড নির্বাচনী প্রচারে আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে তিনি জানান, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করেছেন । সে রাজ্যের সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোনও কারণ নেই বলে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অমিত শাহ। তবে, যদি কিছু সমস্যা থাকে বড়দিনের পর আলোচনা করা যাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই আশ্বাসবাণী মিলতেই টুইট করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন কনরাড সাংমা।
রাজনৈতিক মহলের মতে, নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরেই জ্বলে ওঠে গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত। অসম, ত্রিপুরা সহ একের পর এক রাজ্যের জ্বলতে থাকে প্রতিবাদের আগুন। বিক্ষোভ বড় আকার নেয় মেঘালয়তেও। প্রথম দুই রাজ্যে ক্ষমতায় বিজেপি। মেঘালয়ে বিজেপি সমর্থিত সাংমার ন্যাশনাল পিপলস পার্টি। এ থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজছেন বিজেপির নেতারা । তাই সুপ্রিম কোর্টের দিকে তাকিয়ে রয়েছে কেন্দ্র । সুপ্রিম কোর্ট যদি এই আইন বদলানোর কথা বলে তাহলে কেন্দ্রকে আর অস্বস্তিতে পড়তে হবে না । তবে মনে করা হচ্ছে, বিরোধীদের দাবি মেনে ক্যাব আইনে কোনো বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কথা না বলে সংখ্যালঘু শব্দটি বসানো হতে পারে ।