কলকাতা 

মুসলিমদের সংযত হতে হবে , আন্দোলন করতে গিয়ে ভাঙচুর –অগ্নিসংযোগ করলে বিজেপির-ই সুবিধা হবে

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সেখ ইবাদুল ইসলাম : গতকাল শুক্রবার জুম্মার নামাযের পর রাজ্যজুড়ে ক্যাব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয় রাজ্যের বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠন । ঘোষিত কর্মসূচি । সুতরাং সবার জানা ছিল প্রতিবাদ-মিছিল হবে । কিন্ত সেই প্রতিবাদ মিছিলকে ঘিরে রাজ্যজুড়ে যে তান্ডব মুসলিম নামধারী কিছু দুস্কৃতি চালিয়েছে তা নিন্দনীয় । মনে রাখতে হবে গতকাল যে বিক্ষোভ কর্মসূচি ডাক দেওয়া হয়েছিল তা রাজ্যের ছোট-বড় সবকটি মুসলিম সংগঠন যুক্ত ছিল । যাদের অস্তিত্ব আছে তারা যেমন ছিল , যাদের অস্তিত্ব নেই তারা তেমন ছিল । সবচেয়ে অবাক করেছে হাওড়ার উলুবেড়িয়ার ঘটনা । যেভাবে স্টেশন ভাঙচুর করা হয়েছে , ঘন্টার পর ঘন্টা সাধারন মানুষকে ট্রেনের মধ্যে বসিয়ে রাখা হয়েছে । এই প্রতিবেদক যে ট্রেনে আসছিলেন সেই ট্রেনের মধ্যে শিশুরা কান্নাকাটি করছিল । বীরশিবপুর স্টেশনে কয়েক ঘন্টা ধরে বসে থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি গতকাল আন্দোলনের নামে মুসলিমরা যা করেছে তা মেনে নেওয়া যায় না । এইভাবে নিয়ন্ত্রণহীন আন্দোলন করলে আগামী দিনে এই রাজ্যের সংখ্যাগুরুদের হাতে আক্রান্ত হতে পারে মুসলিমরা । অবিলম্বে এই ধরনের ভাঙচুর আন্দোলন বন্ধ করতে হবে ।

আমার প্রশ্ন যারা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তারা নীরব কেন । উত্তর ২৪ পরগরণার বসিরহাটের এক মুসলিম নেতা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে রাজ্যের মুসলিম ইমামদের কাছে শুক্রবার আন্দোলনের নামার আহ্বান জানিয়েছিলেন । তিনি ওই হোয়াটসঅ্যাপে অনুরোধ করেন এই আবেদন বেশি বেশি করে শেয়ার করার । কিন্ত তিনি ভেবে দেখেননি এই ধরনের আবেদনের পরিণতি কী হতে পারে ? বর্তমান পরিস্থিতিতে মুসলিম সমাজকে আন্দোলনে নামার আগে ভাবতে হবে এটা সাম্প্রদায়ি-করণ হয়ে যাবে নাতো । আমার নবী (সা.)ও অনেক অত্যাচারের শিকার হয়েছিলেন । ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন , মার খেয়েছিলেন তবু তিনি পাল্টা মার দেননি । তাই ইসলাম আজও সমগ্র পৃথিবীকে পথ দেখাচ্ছে ।

Advertisement

কিন্ত নবী ( সা.)-র সেই নীতি-আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে নিজেদেরকে জাহির করার জন্য আন্দোলনের নামে তান্ডব-নৃত্য চালাচ্ছি । কোথাও আমাদের অনুশোচনা হয়নি । গতকাল যখন অটো-বাসে করে বাড়ি ফিরছিলাম শুনছিলাম সংখ্যাগুরু মানুষের প্রতিক্রিয়া ক্যাব তো আইনে পরিণত হয়েছে । এখন তান্ডব দেখিয়ে লাভ কী ? কাকে তান্ডব দেখাচ্ছে ওরা ? মোদী-শাহকে তান্ডব দেখাক ? এই জন্যই তো এনআরসির প্রয়োজন । এরা দেশে ওরা থাকা মানেই অশান্তি বীজ পালন করা । সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মুখে একথা শুনে আমি লজ্জায় মুখ ঢেকেছি ! সত্যি তো এই তান্ডব লীলা চালিয়ে কী আমরা প্রশাসনের সমর্থন পাব ? এরপর থেকে দেখবেন যে কটি আন্দোলন মুসলিমরা করবে তাকে আগে থেকেই প্রশাসনের চাপে অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে যেতে হবে ।

তাই মুসলিম নেতারা ভাবুন । আপনাদের আন্দোলনকে কোনোভাবেই বিজেপি বা কেন্দ্র সরকার পাত্তা দেবে না ।এটা মনে রাখতে হবে ।অসম-ত্রিপুরায় যারা আন্দোলন করছে তারা সবাই সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষ তাই মোদী-শাহরা তাদের কাছে শান্তির বার্তা পাঠাচ্ছে । আর রাজ্যের মুসলিমরা যতই মারমুখী আন্দোলন করবে ততই বিজেপির সুবিধা হয়ে যাবে । বিজেপি তো এটাই চাইছে । বাবরি মসজিদ রায় নিয়ে রাস্তায় নামেনি মুসলিমরা ,ক্যাব নিয়ে এতদিন কিছুই বলছিল না ,তাতে মোদী-শাহ-র কপালে ফাঁজ পড়ে যাচ্ছিল । ভাবছিল কেন এত নীরব মুসলিমরা ? এত নীরব থাকলে বিভাজনের রাজনীতিতে আর হবে না । গতকালের ঘটনায় বিভাজনের রাজনীতির পথকে সুগম করে দিল আমাদের রাজ্যের তথা-কথিত মুসলিম নেতারা।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

two × four =