কলকাতা 

SSC Scam : তথ্য প্রমাণ লোপাট হতে পারে আশঙ্কায় হাইকোর্টের নির্দেশে মধ্যরাতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের দখল নিল কেন্দ্রীয় বাহিনী বৃহস্পতিবার বেলা ১ টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর দখলে থাকবে এসএসসি

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : শেষ পর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যা নির্দেশ দিয়েছিলেন সেই সিবিআই তদন্তের উপরে আস্থা রাখলো ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার সকাল থেকেই ঘটনাক্রম যা ঘটেছে তা বাংলার ইতিহাসে এর আগে কোনদিন ঘটেছে কিনা সন্দেহ রয়েছে। বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী সকালবেলায় সকন্যা সহ কোথায় আছেন তা হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে সিবিআই। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে সিবিআই দপ্তর এর হাজিরা দিতে নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এর নির্দেশের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন কিন্তু টেকনিক্যাল কারণেই ডিভিশন বেঞ্চ এই আবেদন খারিজ করে দেয়। অগত্যা খানিকটা বাধ্য হয়েই বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআই দপ্তরে হাজিরা দিতে হয়। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন সিবিআই দপ্তরে হজিরা দিচ্ছেন ঠিক তখনই এসএসসির চেয়ারম্যান পদে ইস্তফা দিলেন সিদ্ধার্থ মজুমদার।

Advertisement

এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রাজ্য সরকারের এক আমলাকে এসএসসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করে শিক্ষা দপ্তর। আমলা কেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হয়েছে এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার আগেই মামলাকারীদের আইনজীবীরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। মামলাকারীদের আইনজীবীদের বক্তব্য হলো রাজ্য সরকার একজন আমলাকে চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে কার্যত তথ্য প্রমাণ লোপাট করতে চাইছে।

কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে মামলাকারীদের আইনজীবী এই আবেদনের পর প্রধান বিচারপতি রাতেই শুনানি করার নির্দেশ দেন। সেইমতো বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের চেম্বার এ যান সেখানে রাত দশটার পরে নতুন করে শুনানি শুরু হয়।

স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান পদে আমলাকে বসিয়ে আসলে কমিশনের নিয়ন্ত্রণ রাজ্য সরকার নিজের হাতে নিতে চাইছে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের এই অভিযোগকে খানিকটা মান্যতা দিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বেশ কিছুক্ষণ শুনানি করার পর রাত্রি সাড়ে এগারোটা নাগাদ তিনি নিজেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দপ্তরে ফোন করেন এবং আজ রাতেই সল্টলেকে অবস্থিত স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের দখল নিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নির্দেশ দেন আগামীকাল বেলা ১ টা পর্যন্ত কোন ব্যক্তি একমাত্র কেন্দ্রীয় বাহিনীর আধিকারিক ছাড়া বা সিবিআইয়ের আধিকারিক ছাড়া কেউ স্কুল সার্ভিস কমিশন অফিসে প্রবেশ করতে পারবে না।

এই নির্দেশ দেওয়ার পর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে বলেন অবিলম্বে এই নির্দেশের কপি কেন্দ্রীয় বাহিনীর অফিসে পাঠানোর ব্যবস্থা করার জন্য। এদিকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনের সচিব কে নির্দেশ দিয়েছেন আগামীকাল বেলা দশটার পরে কলকাতা হাইকোর্টে উপস্থিত হয় সিসিটিভি ফুটেজ যেন জমা দেন। কলকাতা হাইকোর্টের এই নজিরবিহীন রায় বাংলার ইতিহাসে প্রথম বলেই মনে করা হচ্ছে। অন্তত দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্বচ্ছতা বজায় রাখার লক্ষ্যে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন আগামী দিনে তা নজির হয়ে থাকবে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।

 

 


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ