শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে ছবি , এমনকি ভাষণ দিতেও দেখা গেছে ভূয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবকে, অস্বস্তিতে তৃণমূল
বাংলার জনরব ডেস্ক : কলকাতা পুরসভার যুগ্ম কমিশনার বলে দাবি করা ভূয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের একার পক্ষে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় টিকাকরণের শিবির চালানো সম্ভব ছিল কী ? এটা যেমন গোয়েন্দাদের ভাবাচ্ছে একইভাবে সাধারণ মানুষকেও ভাবাচ্ছে। কারণ যেভাবে দিনের পর দিন কলকাতা পুরসভা যুগ্ম কমিশনারের পরিচয় দিয়ে এই সব করে গিয়েছেন দেবাঞ্জন দেব তা শাসক দল জানতো তা হতেই পারে না । এমনকি গত ১৫ জুন ভূয়ো আইএএস আধিকারিকের পরিচয় দিয়ে একজন ব্যক্তি ঘুরে বেড়াচ্ছেন এরকম একটি অভিযোগ নিউমার্কেট থানায় জমা পড়েছিল বলে সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর । তারপরেও কীভাবে কসবা থানা থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে টিকাকরণ শিবির আয়োজন করার সাহস দেখালেন দেবাঞ্জন ? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ।
এরপরেই দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযুক্তের সঙ্গে শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের ছবি প্রকাশ পায় । তারপর দেবাঞ্জন দেবের টুইটার অ্যাকাউন্ট চেক করতে গিয়ে সংবাদ মাধ্যমে নজরে আসে যে ওই অভিযুক্তের সঙ্গে নেতারা তো বটেই মন্ত্রীদেরও যোগাযোগ ছিল ।
এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সকালে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই ঘটনায় তৃণমূলের প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে বলে দাবি করে বলেন, ‘সবাই সব জানত। এতদিন অন্যান্য জিনিসের সিন্ডিকেট চলতো। এখন ভ্যাক্সিনের সিন্ডিকেট চলছে। রাজ্যে ভ্যাকসিনের কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করা হচ্ছে কেন? তৃণমূল যেখানে আয়োজন করবে সেখান থেকেই টিকা নিতে হবে। হাজার টাকা করে দিতে হবে ভ্যাকসিন পিছু। এর মধ্যে নেতা-এমএলএ এমপি, সবার হাত যুক্ত আছে। সবার চোখের সামনে এতদিন ধরে ভুয়ো শিবির চলছে প্রশাসন কিছু জানেই না? এই ঘটনা সাজানো। তৃণমূলের লোকই যুক্ত আছে টিকার কালোবাজারিতে।’
ওদিকে টুইটার থেকে প্রকাশ্যে এসেছে ধৃত দেবাঞ্জনের সঙ্গে তৃণমূলের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যা। প্রাক্তন মন্ত্রী তাপস রায় ও জোড়াসাঁকোর বিধায়ক স্মিতা বক্সির সঙ্গে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। গত বছর ৩ ডিসেম্বর নিজেই সেই ছবি টুইট করেছিলেন দেবাঞ্জন।
তদন্তে উঠে আসছে আরও একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা চক্র চালাত দেবাঞ্জন। সেই চক্রে যুক্ত ছিলেন INTTUC-র একাধিক নেতা।
বিরোধীদের দাবি, শাসকদলের প্রত্যক্ষ মদত ছাড়া এতদিন ধরে এই ধরণের ভুয়ো কারবার চালানো অসম্ভব। সঠিক তদন্ত হলে সত্য প্রকাশ্যে আসবে।