আল মানার গার্লস স্কুলের মাধ্যমিকে কৃতি ছাত্রী লিলুফা মোল্লা ভবিষ্যতে দক্ষ চিকিৎসক হতে চায়
বিশেষ প্রতিনিধি : – সুন্দরবন এলাকার প্রখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুন্দরবন আল-মানার গার্লস স্কুলের এক ছাত্রী চারটি বিষয়ে লেটার সহ প্রথম বিভাগে কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করেছে। মেয়েটির নাম লিলুফা মোল্লা। বাবা নুরমতি মোল্লা ভাঙাচোরা ব্যবসা করেন, মা লুৎফা মোল্লা গৃহবধু। অতি দরিদ্র পরিবারের এই মেয়েটি পড়াশোনা অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সুন্দরবন আল-মানার গার্লস স্কুলের কর্ণধার মাওলানা আনোয়ার হোসেন কাসেমীর বিশেষ উদ্যোগে লিলুফা মোল্লা পড়াশুনা নতুন করে শুরু করে। আল মানার গার্লস স্কুলে সে বিনামূল্যে পড়াশোনা করে।
সুন্দরবনের নির্দেশ খালির আল-মানার গার্লস স্কুলের পক্ষ থেকে এবার ১০ জন মেয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে ছিল তাদের মধ্যে লিলুফা মোল্লা সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েছে। তার প্রাপ্ত নাম্বার ৫৩৬।বাংলায় ৯০, ইংরেজিতে ৬৫,অঙ্কে ৪৫,ভৌত বিঞ্জানে ৬৫,জীবন বিঞ্জানে ৯৬,ইতিহাসে ৮১, এবং ভূগোলে ৯৪ নম্বর পেয়েছে। হতদরিদ্র পরিবারের এই মেয়েটি জন্মস্থান সুন্দরবন এলাকার রামচন্দ্র খালি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কলা হাজরা গ্রাম। নুন আনতে পান্তা ফুরায় এই পরিবারের জন্ম এই মেধাবী সন্তানের। পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার মুখে নজরে পড়ে বিশিষ্ট সমাজসেবী আনোয়ার হোসেন কাসেমীর। মূলত কাসেমীর উদ্যোগে তাঁর প্রতিষ্ঠান আল মানার গার্লস স্কুলে নিখরচায় পড়াশোনা করে আজ সে মাধ্যমিকে কৃতি ছাত্রী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্টিত করতে পেরেছে।
লিলুফা আরো পড়াশোনা করতে চায় । সে একজন চিকিৎসক হিসেবে সাধারন মানুষের সেবা করতে চায়। তার কথায় ,গ্রামের অসংখ্য হতদরিদ্র মানুষ দুরারোগে রোগে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। অনেক সময় চিকিৎসার জন্য ক্যানিং,বারুইপুর এমনকি কলকাতায় ছুটতে হয়।যাতে করে গ্রামের মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা পায় তারজন্য চিকিৎসক হতেই হবে। ’সুন্দরবন আল-মানার গার্লস্ স্কুলের শিক্ষক আবুল কাশেম লস্কর জানিয়েছে, ‘লিলুফা মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মুখ উজ্জ্বল করেছে। আগামী দিনে আরো এমন লিলুফা যাতে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তৈরী করা যায় সেদিক দিয়ে আমারা কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাবো।’ পাশাপাশি লিলুফা যাতে তার স্বপ্ন বাস্তবে রুপায়িত করতে পারে তারজন্য সুন্দরবন আল-মানার গার্লস্ স্কুল সর্বদা পাশে থাকবে।’
লিলুফার এমন অভাবনীয় সাফল্যে সুন্দরবন আল-মানার গার্লস্ স্কুলের সচিব আনোয়ার হোসেন কাসেমি যথেষ্ট খুশি। তিনি জানিয়েছেন, ‘হতদরিদ্র পরিবার কিংবা স্কুল ছুট ছাত্রীদের নিয়েই আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কারণ নারী জাতিকে যদি শিক্ষার আলোয় আনা যায়, তবে দেশ ও দশের উন্নতি সাধন সম্ভব।ফলে লিলুফার মতো আরো দরিদ্র মেধাবী ছাত্রীরা যাতে সমাজের বুকে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তার জন্য আমাদের এই কর্মযঞ্জ।এছাড়াও আগামী দিনে লিলুফার স্বপ্ন যাতে বাস্তবায়িত হয় তারজন্য আমরা ওই দরিদ্র পরিবারের পাশে রয়েছি।’
অন্যদিকে স্থানীয় প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক সাইদুল ইসলাম গাজী প্রতিবেশী দরিদ্র পরিবারের মেয়ে লিলুফার সাফল্যে খুশি।তিনি জানিয়েছে ,লিলুফা অত্যন্ত মেধাবী।আগামী দিনে লিলুফার পথ অনুসরণ করে অন্যান্যরা সুশিক্ষিত হয়ে সমাজের বুকে প্রতিষ্ঠিত হবে। লিলুফা কলাহাজরা গ্রামের গর্ব। ’