অজুহাত নয় ভোট চুরির ঘটনা স্বীকার করুক নির্বাচন কমিশন! এটা জনতার দাবি : সেখ ইবাদুল ইসলাম
অজুহাত নয় ভোট চুরির ঘটনা স্বীকার করুক নির্বাচন কমিশন! এটা জনতার দাবি
সেখ ইবাদুল ইসলাম : সম্প্রতি দেশের বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোট চুরির অভিযোগ এনেছেন। তাঁর দাবি বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল লোকসভা কেন্দ্রে ভোট চুরি করে জিতেছে বিজেপি। কারণ এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ছটি বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী অনেক ভোটের ব্যবধানে এগিয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল ওই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মহাদেবপুরা বিধানসভা এলাকায় ১ লক্ষ ১৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থী এগিয়ে যাওয়ার পরে লোকসভা ভোটের ফলাফল পাল্টে যায়। রাহুল গান্ধী বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করে নির্বাচন কমিশনের ভোট চুরির বিষয়টি সামনে এনেছেন।
রাহুল গান্ধীর এই বক্তব্য প্রচারিত হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন তাকে শপথনামা দিয়ে অভিযোগ জানাতে বলেছিল। কিন্তু রাহুলের বক্তব্য তিনি লোকসভার বিরোধী দলনেতা হিসাবে সংবিধানের নামে শপথ অনেক আগেই নিয়েছেন তাই নতুন করে শপথ নেওয়া তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।

বিরোধীদলের একজন নেতা এবং ভারতবর্ষের সবচেয়ে প্রাচীন দলের নেতা যখন এই অভিযোগ সামনে এনেছেন তখন নির্বাচন কমিশনের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব হল সেই অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা শুধু তাই নয় অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগীয় আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলতেই পারতেন নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার।
তা করেনি নির্বাচন কমিশন বরং রাহুল গান্ধীকে মিথ্যা প্রমাণ করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত রাহুলের বক্তব্যের উপরে মিস লিডিং শব্দটি বসিয়ে দেওয়া হয়। আসলে এদেশের জনতাকে নির্বাচন কমিশন মূর্খ বলে ভাবে। তাই কোন রকম তদন্ত না করে নানা রকম অজুহাত খাড়া করছে।
এটা একপ্রকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। নির্বাচন কমিশন কে মনে রাখতে হবে জনগণের অর্থে তাদের বেতন হয় এক কথায় তারা জনগণের সার্ভেন্ট বা পাবলিক সার্ভেন্ট। সুতরাং জনতার অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে স্বীকার করে তদন্ত করতে নির্বাচন কমিশনের আপত্তি কোথায়? রাহুল গান্ধী যখন এই ভোট চুরি নিয়ে সমগ্র দেশ জুড়ে প্রচার অভিযানে নেমেছেন আজ ১৭ই আগস্ট বিহার থেকে তিনি যে ভোটাধিকার যাত্রা শুরু করছেন তারপরেই নির্বাচন কমিশন মুখ খুলে বলেছেন, যে ভোটার তালিকা করার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলি যুক্ত থাকে তারা আগে কেন অভিযোগ করেনি!
মাননীয় জ্ঞানেশ কুমার এর কাছে আমাদের প্রশ্ন আগে বলেনি বলে কোনদিন বলা যাবে না এ কথা সংবিধানের কোথায় লেখা আছে? আগে বলেনি বলে তা তদন্ত হবে না একথা সংবিধানের কোথায় লেখা আছে? এ কথা কি কোথাও নির্বাচন কমিশনের আইনে লেখা আছে যে দুর্নীতি হলে স্বচ্ছ ভোটার তালিকার দাবি করাটা অন্যায়? মাননীয় জ্ঞানেশ কুমার আপনি কোন আইন বলে নির্লজ্জের মত এতদিন পরে এই কথাটা বিবৃতি দিয়ে বলছেন। ভাবতে লজ্জা লাগে আপনার ওই চেয়ারে একদিন টি এন শেষনের মত মানুষ বসেছিলেন যিনি বিশ্বের কাছে ভারতের নির্বাচন কমিশনের সম্মানকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন যার তুলনা তিনি নিজেই। এই চেয়ারে একদিন বসেছিলেন সুকুমার সেনের মত বঙ্গসন্তান। যিনি এদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। আর সেই চেয়ারে বসে নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য, বিরোধীদের দিকে আঙুল তুলতে একবারো আপনার বাধে না। দেশজুড়ে একই এপিক নাম্বারে একাধিক ভোটার এর নাম এর দায় কি বিরোধীদলের? বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী যখন ডিজিটাল মেশিন রিডেবল ভোটার তালিকা চাইছেন তখন নির্বাচন কমিশন নিরব কেন?
কেন ভোটের পর সিসিটিভি দিতে আপত্তি? কেন ভোটার সংখ্যার চেয়ে গণনায় বেশি এসে যাচ্ছে! এইসব প্রশ্নের দায় কমিশন এড়াতে পারেন? আসলেই কমিশন ধরা পড়ে গেছে! এমনভাবে ধরা পড়বে নির্বাচন কমিশন বুঝতে পারেনি! ভুল হতেই পারে অজুহাত না তুলে ভুলকে স্বীকার করে নিয়ে সংশোধন করে নিন আর যদি মনে করেন ভারতের জনতাকে যা বোঝাবো, তাই বুঝবে তাহলে ভুল করছেন জ্ঞানেশ কুমার।

