মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পঞ্চায়েত মডেল সমগ্র দেশকে পথ দেখাচ্ছে,তা লাগু করতে চায় কেন্দ্র
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বিরোধীরা বা কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যতই আক্রমন করুক না কেন,কিন্ত মমতার দেখানো পঞ্চায়েত পরিচালনাকেই রোল মডেল হিসেবে গ্রহণ করতে চায় কেন্দ্র।সেদিক থেকে বলা যেতে পারে ১০০ দিনের কাজের নিরিখে দেশে মধ্যে প্রথম হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের আরও একটি বড় স্বীকৃতি হল পঞ্চায়েত পরিচালনা করার ক্ষেত্রে দেশের কাছে আদর্শ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। বামফ্রন্টের আমলে পঞ্চায়েত পরিচালনার ক্ষেত্রে গ্রাম-সংসদের ভুমিকা প্রাধান্য পেত। গ্রাম সংসদের সভাগুলিতে বেশিরভাগ মানুষ যোগ দিতে পারত না। তাছাড়া বামেদের আমলে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত থাকার ফলে সাধারণ মানুষের সভাগুলিতে উপস্থিত থাকা ছাড়া আর কিছুই করার থাকত না।
মা-মাটি-মানুষের সরকার ক্ষমতায় আসার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নি্র্দেশে গ্রাম সংসদের পরিবর্তে পাড়া বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়। আর এই পাড়া বৈঠকের ফলে আরও অনেক সাধারণ মানুষকে পঞ্চায়েত রাজের সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ করে গ্রামের মহিলাদের এই সব সভায় উপস্থিতি লক্ষনীয়। এর ফলে পঞ্চায়েতই ব্যবস্থা আরও বেশি স্বচ্ছ ও দূনীতি মুক্ত হয়েছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। সম্প্রতি কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নিয়ে সারা দেশেই সমীক্ষা করা হয়েছে। আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে এই সমীক্ষা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামোন্নয়ন দফতরের অধীন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পঞ্চায়েতিরাজ সংস্থার প্রতিনিধিরা আমাদের রাজ্যের উত্তর-দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই পঞ্চায়েতের কাজ সমীক্ষা করার পর তাঁরা যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন তাতে পঞ্চয়েত পরিচালনায় পাড়া বৈঠকটিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ্য করেছেন।
তাঁরা বলেছেন,পাড়া বৈঠকে মহিলাদের উপস্থিতির হার খবুই ভাল। তাঁদের রিপো্র্টে উল্লেখ্য করেছেন,এধরনের পাড়া বৈঠকে উপস্থিত মহিলাদের উপস্থিতির হার প্রায় ৯০শতাংশ।তাঁরা বলেছেন,সমগ্র দেশজুড়ে পঞ্চায়েত রাজের উপর সমীক্ষা করা হয়েছে,পশ্চিমবাংলা বাদ দিলে আর কোথাও এ ধরনের পঞ্চায়েতি বৈঠক নজরে পড়েনি। এই রাজ্যে মাসে গড়ে একদিন করে পাড়া বৈঠক হয়,ফলে এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মসূচিকে খুব সহজেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে।অন্য রাজ্যগুলি এধরনের বৈঠক করতে না পারার কারণে ওইসব পঞ্চায়েতের কাজে ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।
কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে এই সমীক্ষা রিপোর্ট পাওয়ার পর কেন্দ্র সরকারের রাজ্যের এই পাড়া বৈঠকের মডেল সমগ্র দেশে চালু করতে আগ্রহী হয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নবান্নে চিঠি পাঠিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিস্কপ্রসূত পাড়া বৈঠকের মডেলের বিস্তারিত খসড়া কর্মসূচি জানতে চেয়েছে। বলা হয়েছে,পঞ্চায়েতি এই মডেলকে সমগ্র দেশে লাগু করা হবে। এ কথা স্বীকার করতেই হবে মমতার পঞ্চায়েতি মডেল সমগ্র দেশকে পথ দেখাচ্ছে।