কলকাতা 

Nawshad Siddiqui: বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে ভাঙ্গরে ঢুকতে দিলো না পুলিশ, নওশাদকে কেন বারবার বাধা দিচ্ছে পুলিশ, নেপথ্যে রহস্য?

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি: ১৪ ই জুলাই এর পর আজ ১৬ই জুলাই নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে ঢুকতে পারলেন না বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। জনতার বাধায় নয় রাজ্য পুলিশ এবং প্রশাসনের বাধাতেই নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে ঢুকতে পারলেন না পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকী। গণতন্ত্রের অন্যতম রক্ষক এবং ধর্মনিরপেক্ষতার প্রচারকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে যেভাবে একজন ধর্মনিরপেক্ষ বিধায়ককে তার নিজের এলাকায় ঢুকতে বার বার পুলিশ এবং প্রশাসন বাধা দিচ্ছে তাতে আর যাই হোক মমতা সরকারের সুনাম এবং ভাবমূর্তি যে ক্ষুন্ন হচ্ছে তা নতুন করে আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

একজন বিধায়ক তার নিজের এলাকায় ঢুকতে পারবেন না এটা গণতন্ত্রের পক্ষে কতটা মঙ্গলজনক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। অবশ্য পুলিশ বলবে শওকত মোল্লা কিংবা আরাবুল ইসলামের মত শাসক দলের নেতাদেরও শনিবার ভাঙ্গরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু শওকাত মোল্লা কিংবা আরাবুল ইসলাম ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি নন তারা একটি দলের প্রতিনিধি মাত্র। জনপ্রতিনিধিকে এলাকায় ঢুকতে না দেওয়াটা গণতন্ত্রের পক্ষে এবং সংবিধানের পক্ষে কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন চিহ্ন থাকে।

Advertisement

পুলিশের দাবি এলাকায় ১৪৪ ধারা রয়েছে তাই জমায়েত করা যাবে না, কিন্তু নওশাদ সিদ্দিকী শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রেতে যাচ্ছিলেন সেটা কোন আইনে আর কোন ১৪৪ ধারাকে ভঙ্গ করলে তার উত্তর অবশ্য আদালতে দিতে হবে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নওশাদ সিদ্দিকীকে বিজেপির সংখ্যালঘু বাচ্চা বলে কটাক্ষ করেছিলেন কিন্তু দুঃখের হলেও সত্য নওশাদকে যেভাবে তার নির্বাচন ক্ষেত্রে এলাকায় যেতে বাধা দেয়া হচ্ছে সেক্ষেত্রে বিজেপির কোন বিধায়ককে বাধা দেয়া হচ্ছে না কেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে চাইছেন টা কি? সেটা বাংলার মানুষ এখনো বুঝে উঠতে পারছেন না! বর্ষিয়ান এই রাজনীতিবিদ ভালো করেই জানেন নওশাদকে বারবার বাধা সৃষ্টি করা হলে আখেরে লাভ হবে নওশাদের! ক্ষতি হবে তৃণমূল কংগ্রেসের তাহলে কি পরিকল্পিতভাবে এ রাজ্যে বিজেপিকে ক্ষমতায় আসার পথ করে দেওয়ার জন্যই নওশাদকে হিরো বানানোর চেষ্টা করে চলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব!

গত ১৪ ই জুলাই সিদ্দিকী ভাঙরে ঢোকার মুখে বাধা পেয়েছিলেন সেদিন তিনি গাড়িতে চুপচাপ বসেছিলেন । ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সমগ্র দেশ জুড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি এতে ক্ষুন্ন হয়েছিল। টিভি চ্যানেল গুলো এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে বারবার বলা হচ্ছিল অগণতান্ত্রিকভাবে একজন বিধায়ককে রাস্তায় আটকে রাখা হয়েছে। এর ফলে নওশাদ ভাঙ্গরে ঢুকলে যে প্রচার পেতেন তার অন্তত ১০০ গুন প্রচার পেলেন তাকে ঢুকতে না দেওয়ার ফলে। এতে লাভ হল আই এস এফের ক্ষতি হলো তৃণমূল কংগ্রেসের। তৃণমূল কংগ্রেস তার কমিটেড ভোট হারাতে শুরু করল। আজ ১৬ই জুলাই আবার নওশাদ সিদ্দিকী, তার বিধানসভা ক্ষেত্র ভাঙ্গরে যাওয়ার চেষ্টা করলে হাতিশালায় তার পথ অবরোধ করে পুলিশ। এ কথা বলতে দ্বিধা নেই পুলিশের একটা অংশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করার জন্য চেষ্টা করে চলেছে। তারাই নওশাদ সিদ্দিকীকে জিরো থেকে হিরো বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর ফলে যে আখেরে ক্ষতি হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের এটা কি তৃণমূল নেতৃত্ব বুঝে উঠতে পারছেন না নাকি সব বুঝেও নীরব রয়েছেন এ রাজ্যে বিজেপিকে আসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।

তবে নওশাদ সিদ্দিকী ১৪ জুলাই সেভাবে মুখ না খুললেও আজ রবিবার তিনি মুখ খুলেছেন পুলিশকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তাদের এই আচরণের বিরুদ্ধে তিনি আদালতে যাবেন তিনি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ কোনভাবেই করছেন না তা সত্ত্বেও তার নির্বাচন ক্ষেত্রে ঢুকতে না দেওয়াটা গণতন্ত্রের পক্ষে সঠিক নিদর্শন নয়। অন্যদিকে একজন বিধায়কের স্বাধীন গতিবিধির উপর আঘাত হানা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেছেন। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে স্বাধীনভাবে যে কোন প্রান্তে যাওয়াটা সাংবিধানিক অধিকার সেই সাংবিধানিক অধিকারকে খর্ব করছে এই রাজ্যের পুলিশ। একই সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে উজ্জ্বল ভাবমূর্তি বাংলার সাধারন মানুষের কাছে রয়েছে তাকেও ক্ষতি করছে এই পুলিশ।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ