শ্লীলতাহানির অভিযোগ : রাজভবনের চার কর্মীকে তলব লালবাজারের
রাজভবনের এক অস্থায়ী কর্মীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হওয়ার পর তদন্ত শুরু করেছে লালবাজার। রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ চাওয়া হলেও প্রাথমিকভাবে তা হাতে পায়নি পুলিশ। তবে দীর্ঘ টানাপড়েনের পর সেই ফুটেজ আসে পুলিশের কাছে। এরপরই রাজভবনে শ্লীলতাহানি ইস্যুতে একাধিক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিস পাঠাল লালবাজার।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠার পরই রাজভবন জানিয়েছিল, সিসিটিভি ফুটেজ তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর রাজ্য পুলিশকে দেখাবে না। যদিও সাধারণ মানুষকে সেই ফুটেজ দেখানো হয়। তারপরই রাজ্যের পূর্ত দফতরের কাছ থেকে সেই সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখার পর তাঁরা মনে করেছে এই বিষয়ে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে। তাই রাজভবনের ৪ জন কর্মীকে তলব করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
ঘটনার দিনের যে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে অভিযোগকারিণী কাঁদতে কাঁদতে নেমে আসছেন। তা দেখেছেন ওই চার কর্মী। সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই ওই কর্মীদের চিহ্নিত করেছে পুলিশ এবং তাঁদের তলব করা হয়েছে। সোমবার তাঁদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে লালবাজারে। তবে ওই কর্মীরা আদতে এই তলবে সাড়া দেবেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়। কারণ এর আগে এই ইস্যুতে তিন কর্মীকে লালবাজারে ডেকে পাঠানো হলেও তাঁরা আসেননি।
রাজভবনের তরফে যে ফুটেজ প্রকাশ্যে আনা হয়েছে তাতে দেখা গেছে, ৫.৩২ নাগাদ পুলিশ আউট পোস্টে ঢুকছেন ওই মহিলা। প্রায় ৮ মিনিট ওখানেই থাকেন তিনি। তারপর ৫.৪০-এ আউট পোস্ট থেকে বেরিয়ে রাজভবনের ওসির রুমে যান। কথা বলেন পুলিশ এবং অন্যান্য মহিলা পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে। ১ ঘণ্টা ১৯ মিনিটের এই ফুটেজে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগকারিনী মহিলাকে মোট দু’বার দেখা গিয়েছে। তবে এই সিসিটিভি ফুটেজে রাজভবনে ভিতরের অংশ বা রাজ্যপালকে দেখা যায়নি।
এই পুলিশি তদন্ত নিয়েও অখুশি রাজভবন। তাঁদের স্পষ্ট কথা, রাজ্যপাল সংবিধানের রক্ষাকবচ পান। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি তদন্ত সম্ভব নয়। কিন্তু লালবাজারের বক্তব্য, কোনও ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে তদন্ত নয়, নির্দিষ্ট একটি অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।