হায় বাঙালি হায় তুমি আর বাঙালি নয়, বর্তমানে বাঙালিদের অবস্থা একটি পর্যালোচনা
হায় বাঙালি হায় তুমি আর বাঙালি নয়,
বর্তমান বাঙালিদের অবস্থা একটি পর্যালোচনা:-
অর্পণ বন্দ্যোপাধ্যায় : বাঙালিদের প্রতি আক্রমণ এবং বাংলা সাহিত্যের প্রতি যে অপমান তার বিরুদ্ধেই লেখনি যে লেখ যে সাহিত্য একদা ভারত স্বাধীনতার স্বাদ এনে দিয়েছে। সেই বাঙালি ও বাংলা ভাষায় এখন ব্রাত্য, এরমধ্যে অবাক হওয়ার কিছু নেই কারণ যেটা হচ্ছে তার দায় বাঙালির নিজের এক কবির লেখনি মনে পড়ছে যিনি বলেছিলেন
“রবীন্দ্রনাথ বিবেকানন্দ নেহাত ছিলেন বোকা নইলে কেউ সাধ করে হয় বাংলা বইয়ের পোকা “

সত্যিই তো ভাষা সাহিত্যের জননী বাংলা ভাষাকে আমরা কতটা মর্যাদা দিতে পেরেছি, বাংলা ও বাঙালি বারবার পেয়েছে অবমাননা শিকার হয়েছে রাজনীতির যার অন্যতম উদাহরণ দেখা যাচ্ছে আক্রান্ত হচ্ছে হিন্দু বাঙ্গালীরা পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ও পার্শ্ববর্তী রাজ্যে। মনে রাখতে হবে যে বাংলা ভাষা এক যুগান্তকারী ভাষা “এই ভাষাতেই নিতাইগোরা আনল দেশে ভক্তিধারা এই ভাষাতেই বলবো হরি সাঙ্গ হল কাঁদা সারা’
মনে রাখতে হবে বাংলার ইতিহাস অতি সুপ্রাচীন ডক্টর অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় তার বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস গ্রন্থে সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেছেন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসের কথা তার গুরুত্ব এবং বর্তমান সমাজে বাংলা সাহিত্য কিভাবে বিপ্লবের বার্তা বহন করে আনে এই গ্রন্থে বারবার প্রকাশ পায়, পরবর্তীকালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়,গনেশ ঘোষ, ক্ষেত্রগুপ্ত, নির্মল চৌধুরী অধ্যাপিকা শুভ্রা বাগচী, পার্থ ভবনের বাংলা সাহিত্যের শিক্ষক অভিযান বন্দোপাধ্যায়, দেবী মন্ডল প্রভৃতি শিক্ষক- শিক্ষিকারা বারবার বাংলা ভাষাকে উন্নত থেকে উন্নততর করার বিভিন্ন ধরনের প্রয়াস জানিয়েছেন, কিন্তু সমস্তটাই চলে গেছে ঠান্ডা ঘরে ঠান্ডা বস্তায় মনে রাখা দরকার বাঙালি মানে অষ্টমীর দিন পাঞ্জাবি পাজামা ধুতি পড়ে অথবা লাল পেড়ে শাড়ি পড়ে অথবা রবীন্দ্রজয়ন্তীতে মাথায় জুঁই ফুল দিয়ে শাড়ি পরায় বাঙালির একমাত্র পরিচয় নয় বাঙালির একমাত্র সম্বল তার ভাষা বাঙালির একমাত্র গর্ব একমাত্র ঐতিহ্য তার ভাষাকে নিয়ে এই ভাষা সমগ্র বিশ্বের কাছে সমাদৃত তাই এই ভাষায় রচিত ভারতবর্ষের জাতীয় সংগীত আজ বিশ্বের সুমধুর সংগীতের মর্যাদা পেয়েছে।
তাই আজ যখন বাঙালি ও বাংলা ভাষা অত্যন্ত বিপদের সম্মুখে দাঁড়িয়ে তখন একজন বাঙালি হিসেবে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের উচিত বাংলা ভাষার ঐতিহ্য সংস্কৃতিকে রক্ষা করা, পরিশেষে একটি কথা বলা দরকার বাংলা পক্ষ নামক এক সংগঠন এই বিষয়ে কার্যকলাপ করলেও তারা ক্রমশ রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই রাজনৈতিক সংগঠন নয় মানুষের মনের মধ্যে স্বতন্ত্রতা জাগাতে হবে,যে আমরা বাঙালি আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলতে অভ্যস্ত এবং আমার সন্তান-সন্ততিদের বাংলা ভাষার গুরুত্ব তার গতিবেগ এবং তার বিশ্বের কাছে যে সমাদর সেই তথ্য ও প্রভাব তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। মনে রাখতে হবে সেই মহান উক্তি
“Where Bengal things today India thing’s tomorrow
মনে রাখতে হবে একতাই বাংলা ভাষা ও বাঙালি , ভারতবর্ষকে জাতীয়তাবাদের রুপ প্রদর্শন করেছিল জাতীয়তাবাদীর আন্দোলনের রূপরেখা নিদর্শন করেছিল প্রাণ দ্বিতীয় তারা কুন্ঠাবোধ করেনি। কিন্তু আজ বাঙালির অস্তিত্ব বিপন্ন সে অস্তিত্ব বিপন্নতা থেকে অতিক্রান্ত করার জন্য একটাই উপায় বাঙালির অস্তিত্বসংস্কৃতি কার্যকলাপ এবং ঐতিহ্যকে পুনরায় ফিরিয়ে আনা, সরকারিভাবে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে যে নোংরা বাংলা ভাষাকে নিয়ে তর্জমা চলছে এবং বিভিন্ন ধরনের সমাজ মাধ্যমে উত্তেজক নিম্নমানের প্রদর্শনী চালানো হচ্ছে। তাঁদের কাছে অনুরোধ সেগুলি এই মুহূর্তে বন্ধ করা হোক তাহলেই বাঙালি ফিরে পাবে তার হারিয়ে যাওয়া অস্তিত্ব যে সমস্ত রাষ্ট্র রাজ্যে বাঙালি আক্রান্ত হচ্ছে তারা সসম্মানে সেই সমস্ত জায়গায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারবে বলে মনে করছে শিক্ষামহল থেকে প্রশাসনিক মহল কারণ মনে রাখতে হবে রবি ঠাকুরের ভাষায় যে বাঙালি যে রকম কলম ধরতে পারে বাঙ্গালী যে রকম রংয়ের তুলি ধরতে পারে ঠিক তেমনি ভাবেই নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মতো বাঙালি তরবারি তুলে ধরতেও বা পিস্তল তুলে ধরতেও দু পা পিছাবে না। তাই বাঙালির ঐতিহ্য রক্ষিত হবেই বাংলা সংস্কৃতি তারা আপন গরিমা ফিরে পাবে এই বিশ্বাসই রাখছে আপামর সাধারণ জনমানব ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে।
“ দুইজনায় বাঙালি ছিলাম
দেখ খানি কান্ডখান
তুমি ekhn বাংলাদেশি
আমি এখন ”

