অন্যান্য জেলা 

টোটো চালকের মেয়ে হাই মাদ্রাসায় প্রথম, ফেরিওয়ালার মেয়ে তৃতীয়, দুজনেই চিকিৎসক হতে চায় সফল হবে? পর্ণ কুঠি যেন মেধার চাঁদের হাট

শেয়ার করুন

সেখ ইবাদুল ইসলাম : ইতিহাস বদলে দেয়  পর্নো কুঠির থেকে আশা দরিদ্র পরিবারের ছেলে মেয়েরা। এপিজে আবদুল কালাম থেকে শুরু করে এ দেশের যত ব্যক্তি স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন তারা সকলেই গরিব বাড়ি থেকে উঠে এসেছেন। এ বছর হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে মালদা জেলার বটতলা হাই মাদ্রাসার ছাত্রী শাহিদা খাতুন। কিন্তু প্রথম তো হয়েছে কাজ কিভাবে? বাবা টোটো চালক কোন রকমে সংসার চলে! বাড়িতে ঠিকমত আলো বাতাস প্রবেশ করে না কাঁচা পাকা বাড়ি টালির চাল কোনমতে সংসার চালাতে পারে সারাদিন পরিশ্রম করার পর। যেটুকু আয় হয় তা দিয়ে। পরিশ্রম করেই পড়াশোনা চালিয়েছে শাহিদা। বই দয়ে দিন রাত পড়াশোনা করার মধ্য দিয়ে প্রথম হয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে।

শনিবার প্রকাশিত হয়েছে হাই মাদ্রাসা পরীক্ষার ফল আর তাতেই জানতে পেরেছে ওই টালির চালের মেয়েটি এবার পশ্চিমবাংলার মধ্যে প্রথম স্থান দখল করেছে

Advertisement

শাহিদার বাড়ি মালদহের রতুয়া-১ ব্লকের ভাদো গাম পঞ্চায়েতের ছোটো বটতলা গ্রামে। বাবা সামসুদ্দোহা টোটোচালক। মা সায়েমা বিবি বাড়ির কাজ সামলান। শাহিদার স্বপ্ন, চিকিৎসক হবে। কিন্তু বাদ সেধেছে পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা। তাই পরীক্ষায় ভাল ফল করেও তার আশঙ্কা, স্বপ্ন সত্যি হবে তো? বটতলা আদর্শ মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দেওয়া ছাত্রীটি ছোট থেকে এলাকার একটি আবাসিক গার্লস মিশনে পড়াশোনা করেছে। সে বলে, ‘‘বিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশোনা করতে চাই। কিন্তু পরিবারের আর্থিক দুরবস্থার কারণে দুশ্চিন্তায় আছি।’’ মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে চিন্তিত টোটোচালক বাবা-ও। তাঁরা চান, সরকার সহযোগিতা করুক।

ফাহমিদা সামসী হাসপাতাল মোড় এলাকার বাসিন্দা। সে-ও ৮০০-র মধ্যে পেয়েছে ৭৮০ নম্বর। ভগবানপুর হাই মাদ্রাসার ছাত্রীটি জানিয়েছে, বড় হয়ে সে ডাক্তার হতে চায়। পরীক্ষায় সাফল্যের কৃতিত্ব শুধু নিজের নয়, পুরো পরিবারের বলে জানিয়েছে মেয়েটি। সে বলে, ‘‘বাড়ির লোকজন থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা, আমার জীবনে সকলের অনেক অবদান। ডাক্তার হয়ে সকলের মুখ উজ্জ্বল করতে চাই।’’

হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছে মালদহের শ্যামসুন নেহার। তার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭৬।

হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় তৃতীয় স্থান দখল করেছে মালদহেরই আলিফনুর খাতুন। তার প্রাপ্ত নম্বর ৭৭২। আলিফ নুর খাতুনের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র বাবা ফেরিওয়ালা তা সত্ত্বেও যে অসম্ভব সুন্দর রেজাল্ট করেছে তাতে প্রতিবেশীরা খুব খুশি। কিন্তু খুশি হলে তো হবে না ভালো ফল করার সঙ্গে সঙ্গে ভালো পড়াশোনা করার সেটা কি সম্ভব হবে? আর্থিক সাহায্য নিয়ে কি এগিয়ে আসবে সরকার কিংবা কোনো সহৃদয় ব্যক্তি? আলিফ নুরও চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে কতটা সাকার হবে তা নিয়ে যথেষ্ট অনিশ্চিত ফেরিওয়ালা বাবা?

 


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ