ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সোনিয়া রাহুলের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় চার্জশিট দেওয়ার পর, প্রিয়াঙ্কার স্বামীকে দুই দিন ধরে জেরা করার পরেও বৃহস্পতিবারেও ডাকলো ইডি, গান্ধীর পরিবারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা মূলক আচরণ মোদি সরকারের
বিশেষ প্রতিনিধি : ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় আদালতে মামলা দায়ের করেছে ইডি । ঠিক তার আগের দিন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্টকে মঙ্গলবার তলব করে ছ ঘন্টা জেরা করে ইডি, আবার আজ বুধবার তাকে আট ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর আবার বৃহস্পতিবার তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। এর ফলে নরেন্দ্র মোদির সরকার যে গান্ধী পরিবারের প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছে বলে অনেকেই মনে করছেন।
জমি কেনাবেচায় বেআইনি আর্থিক লেনদেনের ওই মামলায় এর আগেও একাধিক বার দীর্ঘ জেরা করা হয়েছিল রবার্টকে। মঙ্গলবার অনুগামীদের নিয়ে ‘মিছিল’ করে ইডির সদর দফতরে যাওয়ার পথে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ভগ্নিপতি বলেছিলেন, ‘‘আমি যখনই জনগণের হয়ে আওয়াজ তুলেছি, ওরা আমাকে দমানোর চেষ্টা করেছে। তবে আমার লুকোনোর কিছু নেই। ইডি আমাকে যা ইচ্ছা প্রশ্ন করুক, আমি সব প্রশ্নের উত্তর দেব।’’ মঙ্গলবার স্ত্রী প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে ইডির সদর দফতরের প্রধান ফটকের কাছে পৌঁছন তিনি। সে সময় সাংবাদিকদের রবার্ট বলেন, ‘‘আমরা কাউকে ভয় পাই না। আমরা প্রাসঙ্গিক বলেই আমাদের নিশানা করা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সময় পরিবর্তনশীল। আজ আমরা কষ্ট পাচ্ছি, যদি সময় বদলে যায় ওদেরও (বিজেপি) কষ্ট পেতে হবে।’’
ইডির জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে রবার্ট বলেন, ‘‘আমি কিছুই লুকোইনি। আমাকে দু’বার ক্লিনচিট দেওয়া হয়েছে। বুঝতে পারছি না, কেন সাত বছর পর একই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে আমি ইডির তলব উপেক্ষা করব না।’’ প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে রবার্টের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটির ৭.৫ কোটি টাকায় কেনা একটি জমি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। অভিযোগ, ওই জমির মিউটেশন প্রক্রিয়া মাত্র এক দিনেই সম্পন্ন হয়েছিল, যা শেষ হতে সাধারণত বেশ কয়েক মাস সময় লাগে। পরে জমিটি ৫৮ কোটি টাকায় রিয়্যাল এস্টেট সংস্থা ডিএলএফের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। যদিও ২০২৩ সালে হরিয়ানার বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের সরকার আদালতে স্বীকার করে নেয়, রবার্টের সংস্থার সঙ্গে ডিএলএফের জমি-চুক্তিতে বেআইনি কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
কিন্তু ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ তার পরেও রবার্টের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে ইডি। কেন্দ্রীয় সংস্থাটির একটি সূত্র জানাচ্ছে, ৫৬ বছর বয়সি এই ব্যবসায়ীর বক্তব্য আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-এর অধীনে রেকর্ড করা হচ্ছে। জমিকাণ্ডের পাশাপাশি লন্ডনে সম্পত্তি কেনাবেচা নিয়েও ইডির নিশানা হয়েছেন নেহরু-গান্ধী পরিবারের জামাতা। অভিযোগ, ২০০৯-এ অস্ত্র ব্যবসায়ী সঞ্জয় ভান্ডারির সঙ্গে রবার্ট লন্ডনে একটি ‘বেনামি’ সম্পত্তি কিনেছিলেন। সেই মামলার চার্জশিটে নাম রয়েছে প্রিয়ঙ্কারও।