আরজিকর কান্ডের তদন্তের প্রথম চার্জশিটে প্রধান অভিযুক্ত একজনই! সিবিআইয়ের ৫৮ দিনের তদন্তে এখনো পরিষ্কার নয়, আর কারা যুক্ত ছিলেন তরুণী চিকিৎসক খুনে?
বিশেষ প্রতিনিধি : আর জি কর মেডিকেল কলেজের অভ্যন্তরে কর্মরত তরুনী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনার তদন্তে প্রাথমিক চার্জশিট আদালতে জমা দিল সিবিআই। সূত্রের দাবি, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে এক জনের নামই উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। পাশাপাশি তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ-সহ বেশ কিছু প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে সেখানে। জিজ্ঞাসাবাদে কে কী জানিয়েছেন, সেই বয়ানের নথি তুলে ধরা হয়েছে চার্জশিটে।
নির্যাতিতার মৃত্যুর ৫৮ দিন পর এই চার্জশিট গঠন করল সিবিআই। যদিও সিবিআইয়ের এই চার্জশিট নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাইছেন না আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা। সোমবার দুপুরে ধর্মতলায় অনশনমঞ্চ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই সময় আন্দোলনকারীদের অন্যতম প্রতিনিধি দেবাশিস হালদার বলেন, “সংবাদমাধ্যম থেকে যা তথ্য পেয়েছি, সেই অনুযায়ী এটি একটি প্রাথমিক চার্জশিট। তার ভিত্তিতে এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলব। তার পরে এই বিষয়ে আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাব।”
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত এক জনই। সিবিআই তদন্তভার নেওয়ার আগেই কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। পরে আরজি করের ধর্ষণ ও খুনের মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই— আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি। যদিও সিবিআই আগেই শিয়ালদহ আদালতে জানিয়েছে, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় প্রত্যক্ষ যোগের অভিযোগ নেই তাঁদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগে তাঁদের গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
আরজি করের ঘটনারয়একজনই জড়িত, নাকি একাধিক—সেই প্রশ্ন বিভিন্ন মহলে ঘুরপাক খেতে শুরু করেছিল। তবে সিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়ার বিষয়ে তাদের আইনজীবীরা এত দিন পর্যন্ত নিম্ন আদালতে বা সুপ্রিম কোর্টের সওয়াল জবাবে যা যা তথ্য তুলে ধরেছেন, তাতে একাধিক ব্যক্তিং জড়িত থাকার কোনও আভাস মেলেনি। সূত্রের খবর, ধর্ষণ ও খুনের মামলায় এ বার প্রথম চার্জশিটেও মূল অভিযুক্ত হিসাবে একজনের কথাই উল্লেখ করল সিবিআই।
সিবিআই তদন্তের প্রথম চার্জসিটে কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কেই প্রধান অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ থেকে এটা প্রমাণিত হয় কলকাতা পুলিশের তদন্তে সেই অর্থে কোনো গাফিলতি ছিল না। এবার দেখার বিষয় এই ঘটনার সঙ্গে আর কোন ব্যক্তি জড়িত আছে কিনা যদি সিবিআই তাদেরকে সামনে আনতে পারে তবেই সিবিআই এই মামলার তদন্তে কৃতিত্ব দাবি করতে পারবে। না হলে মোদি সরকার পরিচালিত এই সিবিআই যে তদন্তে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সেটা বাংলার মানুষের কাছে দিনের আলোর মত স্পষ্ট হয়ে ধরা পড়বে। এখন সিবিআইকে চ্যালেঞ্জ নিতে হবে যে আদৌ সঞ্জয় রায় বাদে অন্য কাউকে এই মামলায় তারা অভিযুক্ত পারে করতে পারে কিনা। বা এই ঘটনার সঙ্গে সঞ্জয় রায় বাদে অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা। যদি তা না পারে সিবিআই তাহলে এটা পরিষ্কার কলকাতা পুলিশের তদন্ত সঠিক পথেই এগোচ্ছিল।