দেশ 

জামাআতে ইসলামী হিন্দের মহিলা শাখার উদ্যোগে আন্তঃধর্মীয় সেমিনার : ‘নারীর ক্ষমতায়নে আধ্যাত্মিকতা ও রোযার ভূমিকা’

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : জামাআতে ইসলামী হিন্দের মহিলা শাখার উদ্যোগে দিল্লিতে আয়োজিত হল এক অভিনব সেমিনার। রবিবার ৩ মার্চ দিল্লির স্কলার স্কুলে অনুষ্ঠিত এই আন্তঃধর্মীয় সেমিনারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘নারীর ক্ষমতায়নে আধ্যাত্মিকতা ও রোযার ভূমিকা’।

সভাপতির ভাষণে জামাআতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি মোসাম্মৎ শায়েস্তা রাফাত বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে অন্যতম হাতিয়ার এবং প্রশিক্ষণ হিসেবে কাজ করে রোযা। রমযানের উপবাসের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন হতে পারে এবং রোযায় সংযম ও আত্মশুদ্ধির প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা সমাজের কল্যাণে অবদান রাখতে পারে। তাঁর কথায়, ধর্মীয় নেতাদের দায়িত্ব হল রমযানের গুণাগুণ ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানানো। সমাজ থেকে বিচ্ছিন্নতা ও বিভাজন নির্মূল করতে সব ধর্মীয় সংগঠন ও ধর্মীয় নেতাদের উচিৎ এই ধরনের আন্তঃধর্মীয় কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া।

Advertisement

জামাআতের আর এক ন্যাশনাল সেক্রেটারি মোসাম্মৎ রহমাতুন্নিসা সেমিনারের উদ্বোধন করে বলেন, কুরআনে বলা হয়েছে, সব জাতি, সব সম্প্রদায়ের জন্য উপবাস ছিল বা আছে। রোযা আল্লাহ বা ঈশ্বর সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে (তাকওয়া বা আল্লাহ-ভীতি), যা আস্তিকদের দেহ-মনে বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে ত্বরান্বিত করে। যেটা সবার ক্ষমতায়ন এবং আত্মশুদ্ধির পথ প্রশস্ত করে। তিনি আরও বলেন, এই ধরনের সেমিনার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে অটুট এবং পারস্পরিক বোঝাপড়াকে মজবুত করে।

আহ্বায়ক মোসাম্মৎ মীনাজ বানু বলেন, এই সেমিনারের উদ্দেশ্য হল রমযানের কনসেপ্ট সম্পর্কে বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির মানুষকে জানানো। তাঁর মতে, মহিলাদের নিজেদের আত্মিক উন্নয়ন, সহনশীলতা, স্ব-শৃংখলার ক্ষেত্রে রমযান অনুঘটকের কাজ করে। মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য রোযা খুবই উপকারী। সেই বার্তা সকলকে পৌঁছে দিতেই এই আয়োজন বলে জানান তিনি।

সমাজকর্মী সালমা ফ্রান্সিস বলেন, রোযা শুধু সারাদিন না খেয়ে উপবাসী থাকার ব্যাপার নয়। রোযা পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য। এইভাবে পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের সংযমের মাধ্যমে রোযা রাখতে পারলে সার্বিক উপকারিতা পাওয়া যাবে। এর মাধ্যমে চিন্তাভাবনাগত এবং মানসিক পবিত্রতা অর্জন সম্ভব। মেয়েরা সহজাতভাবেই ক্ষমতাপ্রাপ্ত, শুধুমাত্র রোযার মাধ্যমে তার পরিচর্যার প্রয়োজন।

শিখ ধর্মের প্রতিনিধি ড. জাগিত কাউর বলেন, আমাদেরকে সমগ্র মানবতার কল্যাণে কাজ করার জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে হবে। রোযার কনসেপ্ট সম্পর্কে জামাআতের সহকারী সেক্রেটারি আরেফা পারভিন বলেন, আল্লাহ মানুষকে অকারণে ক্ষুধার্ত রাখতে চান না। বদ অভ্যাস, খারাপ কাজকর্ম ও মন্দ চিন্তাভাবনা পরিহার করাই রোযার মূল উদ্দেশ্য। এসব পরিত্যাগ না করে শুধুমাত্র না খেয়ে সারাদিন কাটানোর মধ্যে রোযার সার্থকতা নেই।

হরিদ্বার থেকে আগত গায়ত্রী পরিবারের সদস্য সুষমা ঠাকরাল তাঁর বক্তব্যে রোযার স্বাস্থ্যগত উপকারিতার দিক তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, চিন্তা-চেতনায় পরিশুদ্ধি আনতে হবে, নিত্যদিন ব্যায়াম বা শারীরিক কসরত করতে হবে এবং ভারসাম্যপূর্ণ পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাগ গড়ে তুলতে হবে।

ব্রহ্মকুমারী হুসেন বলেন, প্রত্যেক মানুষের ব্যক্তিগত ক্ষমতায়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হল সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে আত্মিক সংযোগ গড়ে তোলা।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ