‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড’ এর সিইও এখনো অভিষেক! ইডির দাবি নিয়ে সরগরম বাংলার রাজনীতি
বাংলার জনরব ডেস্ক : শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্ত করতে গিয়ে ইডি এবং সিবিআই বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে। গতকাল নেতাজির ইন নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইডি এবং সিবিআইকে কটাক্ষ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমাদের বাড়িতে রোজই ওরা অত্যাচার করছে। কালকেও সারা রাত… আমাকে কেউ বলেনি। আমি আইনজীবীর কাছ থেকে জানতে পেরেছি। ছেলেটা পরশু দিন ফিরেছে। হঠাৎ করে চলে গিছে তার চার-পাঁচটা জায়গায়। সকাল ছ’টায় খবর পেলাম বাবুরা বেরিয়েছে।’’
প্রথমে ‘আমাদের বাড়িতে’ বললেও মমতা পরে স্পষ্ট করে দেন যে, তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে কোনও তল্লাশি হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘বাজে কথা বলে লাভ নেই, ওরা হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে যায়নি।’’ প্রসঙ্গত, ৩০বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটেই মমতা থাকেন। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় অভিষেকের ঠিকানাও সেটিই।
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের চব্বিশ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই প্রেস নোট দিয়ে ইডি দুদিন ধরে যে তল্লাশি চালিয়েছে তার বিবরণ দিয়েছে। ইডির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কলকাতায় ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে সংস্থার তিনটি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়েছে সোম ও মঙ্গলবার। দাবি করা হয়েছে, ওই সংস্থায় চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) হিসাবে এক সময়ে চাকরি করেছেন সুজয়কৃষ্ণ। পাশাপাশিই লিখিত বিবৃতিতে ইডির দাবি, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড’-এর চিফ এগজ়িকিউটিভ অফিসার (সিইও) তৃণমূলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে লেখা হয়েছে, ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ওই সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন অভিষেক।
যদিও ডায়মন্ড হারবারের দু’বারের সাংসদ অভিষেকের ২০১৪ বা ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার সময়ে নির্বাচন কমিশনে জমা-দেওয়া হলফনামা পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে, তাঁর ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার কোনও তথ্য নেই। ২০১৪ সালের হলফনামায় তিনি জানিয়েছিলেন, ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থার ১০ টাকা মূল্যের এক হাজারটি শেয়ার রয়েছে তাঁর। ২০১৯ সালে তার কথাও নেই।
আর কেন্দ্রীয় এজেন্সির এই বিবৃতিকে ঘিরে রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠেছে বাংলার রাজনীতি। তবে প্রশ্ন উঠেছে ২০১৪ সালে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়ার পর থেকে এই কোম্পানির সঙ্গে তিনি যোগসূত্র ছিন্ন করেন বলে জানা যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী হলফ নামাতেও এই তথ্য পাওয়া যায়। কিন্তু আজ ইডি যে তথ্য পেশ করেছে তা যদি সত্য হয় তাহলে ভারতীয় রাজনীতিতে মারাত্মক ঘটনা বলে এটা চিহ্নিত হবে এবং নির্বাচনী হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়ার দায়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারবে। কিন্তু যদি এই তথ্য মিথ্যা হয় তাহলে ইডি যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে সেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়ে যাবে।