কলকাতা 

‘‘পুলিশকে মারতে বলা হচ্ছে সেই প্রমাণ কোথায়?কে সাক্ষী? একজন হকার? তিনি কী করে জানলেন? কোনও ভিডিও এখন অবধি নেই তো?’’ নওশাদ সিদ্দিকী ইস্যুতে রাজ্যের কাছে জানতে চাইলেন দুই বিচারপতি

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : গত ২১ শে জানুয়ারি কলকাতার ধর্মতলা চত্বরে আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসে যে অশান্তি হয়েছিল সেই অশান্তির নেপথ্যে যে আইএসএফ কর্মীরা ছিল সেটা কি পুলিশ প্রমাণ করতে পারবে? বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী পুলিশকে মারতে বলেছেন সেই প্রমাণ কোথায়? আজ বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে নওশাদ সিদ্দিকী সহ ৬৫ জন আইএসএফ কর্মীর জামিন মামলায় এই প্রশ্ন তুললেন দুই বিচারপতি।

এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক স্পষ্ট জানতে চান রাজ্য সরকারের কাছ থেকে ধর্মতলা চত্বরে রাস্তা বন্ধ করে তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় নওশাদ সিদ্দিকি-সহ ৬৫ জনের ভূমিকা প্রমাণ করা যাবে তো? ওই দিনের ঘটনাতে যে এঁরা সকলে যুক্ত রয়েছেন, তা-ই বা কী করে জানা গেল?

নওশাদ সিদ্দিকী সহ ৬৫ জন আইএসএফ কর্মী কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করে পুলিশ জোর করে তাদের গ্রেফতার করেছে। বুধবার সেই মামলারই শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং মহম্মদ সাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে।

মামলার শুনানি চলাকালীন নওশাদের আইনজীবীকে বিচারপতি বসাক প্রশ্ন করেন, ‘‘রাজ্য যদি দেখায় যে নওশাদের করা উস্কানিমূলক বক্তব্যের ফলে এই ঘটনা ঘটেছে তা হলে কী হবে?’’ উত্তরে নওশাদের আইনজীবী বলেন, ‘‘এই ধরনের কোনও প্রমাণ পুলিশ দেখাতে পারবে না। আমি বলেছি এই প্রশাসনের ওপর আমাদের কোনও ভরসা নেই। নওশাদ পুলিশকে মারতে বলেছে এই ধরনের কোনও প্রমাণও নেই।’’

কিন্তু আত্মরক্ষার নাম করে পুলিশকর্মীদের ওপর আক্রমণকেও কি আত্মরক্ষা বলা যায়? প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তবে নওশাদের আইনজীবীর দাবি, এই ধরনের কোনও আক্রমণের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। তৃণমূলের কর্মীরা একাধিক জায়গায় আইএসএফ কর্মীদের আটকেছিল ওই দিন। অভিযোগ করা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। এই নিয়ে ল্যাপটপে নওশাদের ভাষণও শোনেন বিচারপতি বসাক। আর তার পরই রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘পুলিশকে মারতে বলা হচ্ছে সেই প্রমাণ কোথায়?’’এর পর রাজ্যের আইনজীবীরা জানান তাঁদের কাছে সাক্ষী আছে। এর পর আবার বিচারপতি বসাকের প্রশ্ন, ‘‘কে সাক্ষী? একজন হকার? তিনি কী করে জানলেন? কোনও ভিডিও এখন অবধি নেই তো?’’

পাশাপাশি রাজ্যের আইনজীবীকে বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘এই ঘটনায় ৬৫ জন মামলাকারী রয়েছেন। ওই দিনের ঘটনায় প্রত্যেকের ভূমিকা প্রমাণ করতে পারবেন তো? সবাই গন্ডগোলের সঙ্গে যুক্ত আছে জানলেন কি করে?’’

বিচারপতি বসাকের পর্যবেক্ষণ, ঘটনার দিন কোনও ব্যক্তি হয়তো পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। আর সেই সময়ই হয়তো গন্ডগোল শুরু হয়েছে। তিনি পাশে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে হয়তো তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তা হলে এই গন্ডগোলে তাঁদের কী ভূমিকা থাকতে পারে?

রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করা আইনজীবীর দাবি, নওশাদই পুলিশকে আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান, সংগ্রহ করা ভিডিয়ো ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজও ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। কলকাতা পুরসভার সিসিটিভি ফুটেজও ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় একাধিক সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে বলেও রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়।বৃহস্পতিবার আবার এই মামলার শুনানি রয়েছে।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ