দেশ 

বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভাঙা মানেই, তা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নয়, ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তকে জামিন দিয়ে বললো শীর্ষ আদালত

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : ধর্ষণ মামলায় এক ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। আজ মঙ্গলবার ধর্ষণ মামলায় ধৃত এক ব্যক্তিকে জামিন দিতে গিয়ে সুপ্রীম কোর্ট বলেছে,বিয়ের প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলেই কি ধরে নিতে হবে ‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতি’ দেওয়া হয়েছিল? এমনও তো হতে পারে, যিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং যখন দিয়েছিলেন, তখন তা পূরণ করবেন ভেবেই দিয়েছিলেন। পরে হয়তো কোনও পরিস্থিতির ফেরে কথা রাখতে পারেননি। এক ধর্ষণে অভিযুক্তের মামলার শুনানিতে এমনই যুক্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট। মামলাটিতে ধর্ষণে অভিযুক্তকে নিষ্কৃতি দিয়ে কোর্ট জানিয়েছে, বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভাঙা মানেই তা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নাও হতে পারে।

এ বিষয়ে দিল্লি হাই কোর্টের এবং এক এক নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অজয় রস্তোগি এবং বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর ডিভিশন বেঞ্চে। বেঞ্চ মামলাটি শুনে জানিয়েছে, এই মামলায় অভিযুক্তকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে বড় ভুল করেছে হাই কোর্ট এবং নিম্ন আদালত। একই সঙ্গে ধর্ষণের অভিযোগকারিণীর উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ বলে, যিনি বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন, তিনি নিজেই বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এ ক্ষেত্রে বরং তিনিই তাঁর পরিবারের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন এবং জেনে বুঝেই আরও পছন্দের জীবনসঙ্গীকে বেছে নিয়ে নতুন সম্পর্কে প্রবেশ করেছেন।

Advertisement

এই মামলায় নিম্ন আদালত এবং দিল্লি হাই কোর্ট অভিযুক্তকে ধর্ষণের দায়েই দোষী সাব্যস্ত করেছিল। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই শীর্ষ আদালতে আসে মামলাটি। তার শুনানিতেই সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ বলে, ‘‘অভিযোগকারিণী বিবাহিতা এবং তিন সন্তানের জননী। তাই বলা যায়, তিনি যথেষ্ট পরিণতবোধ এবং বুদ্ধি সম্পন্ন। তিনি কী করতে চলেছেন এবং তার পরিণাম কী হতে পারে, সে ব্যাপারে যথোচিত অবগত। এই সিদ্ধান্তের নৈতিকতা এবং অনৈকিতা বিষয়েও অবগত। যদি তা না-ও হয়, তা হলেও দেখা যাচ্ছে তিনি নিজের স্বামী এবং তিন সন্তানের সঙ্গে প্রতারণা করে নতুন বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন। বিবাহিত থাকাকালীন নতুন সঙ্গীর সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এবং আরও ভাল জীবনের আশায় পরিবার ছেড়ে নতুন সঙ্গীর সঙ্গে ঘর ছেড়েছেন।’’

আদালতের রায়, ‘‘এই মামলায় সমস্ত দিকে নজর রেখে এবং ঘটনা পরম্পরা বিচার করে, এ কথা কোনও ভাবেই বলা যায় না যে অভিযোগকারিণী না বুঝে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। ফলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও ভাবেই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধরায় মামলা দায়ের করা যায় না। এই মর্মেই তাঁকে ধর্ষণের মামলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া হল।’’


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ