দেশ বিনোদন, সংস্কৃতি ও সাহিত্য 

চার বছর পর ফিরে শাহরুখের অপ্রতিরোধ্য ‘পাঠান’, গেরুয়া শিবিরের হুমকি সত্ত্বেও তিনদিনে ৩০০ কোটি ব্যবসা

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিশেষ প্রতিনিধি: গেরুয়া শিবিরের বয়কটের তকমা তেমনভাবে কাজে লাগল না। বরং শাহরুখ খানের পাঠান বক্স অফিস দাপিয়ে ব্যবসা করে চলেছে। এই সিনেমাটি রিলিজ হওয়ার আগে বাংলার জনরব ইউটিউব চ্যানেল বলেছিল পাঠান সিনেমার দৌলতে যশরাজ ফিলিম আর্থিক দিক দিয়ে লাহবান হবে। তবে এতটা লাভবান হবে তা আমাদের ধারণা ছিল না বলা যেতে পারে সব কিছু রেকর্ড ছাপিয়ে গেল পাঠান ছবিটি।

৩ দিনে ৩০০ কোটি টাকা আয় করেছে এই ছবিটি। এক কথায় বলা যেতে পারে শাসক দল বিজেপির তীব্র বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও যেভাবে পাঠান সিনেমাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তা থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছে দেশের সাধারন মানুষ আর গেরুয়া শিবিরের কথা শুনতে চাইছে না।আর শাহরুখ খান চার বছর পর বড় পর্দায় ফিরেই বাজিমাত করেছেন বলিউডের ‘বাদশা’। ছবির সাফল্যের ঘোড়া ছুটছে অপ্রতিরোধ্য মেজাজে।

Advertisement

শাহরুখের ক্যারিয়ারে পাঠান ছবিটি অবশ্যই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কারণ এই অভিনেতার এমনভাবে কাম ব্যাক কেউ ভেবে উঠতে পারেনি। আর এসবই হয়েছে গেরুয়া শিবিরের কল্যাণে।

গত ২৫ জানুয়ারি মুক্তি পেয়েছে ‘পাঠান’। শুক্রবারের পর পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের বাজারে ৩০০ কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলেছে এই ছবি। প্রথম তিন দিনেই ‘পাঠান’ ছুঁয়েছে ৩০০ কোটির গণ্ডি।

শুক্রবারের পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের বাজারে ‘পাঠান’-এর তৃতীয় দিনের আয় ৩৬ কোটি টাকা। প্রথম দু’দিনের চেয়ে যা বেশ কম। তবে বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের বক্স অফিসে তৃতীয় দিনে মন্দা ছিল না।

২৫ তারিখ মুক্তির দিন নজির গড়েছিল শাহরুখের এই ছবি। শুধু দেশেই ৫৫ কোটি টাকার ব্যবসা করে ফেলেছিল ‘পাঠান’। বিশ্বের নিরিখে রোজগারের অঙ্ক প্রথম দিনেই পেরিয়েছিল ১০০ কোটির গণ্ডি।

দ্বিতীয় দিন ‘পাঠান’ ৭০ কোটি টাকার ব্যবসা করে ভারতের বাজারে। প্রজাতন্ত্র দিবসের ছুটি দ্বিতীয় দিনের ব্যবসায় শাপে বর হয়। বিশ্বের বক্স অফিসে দ্বিতীয় দিনের শেষে এই ছবির আয় ছাড়িয়ে যায় ২০০ কোটির গণ্ডি।

শুক্রবার কাজের দিন ‘পাঠান’-এর রোজগার দেশে কিছুটা কম হয়েছে। তৃতীয় দিনে ৩৬ কোটি টাকা আয় করেছে এই ছবি। অর্থাৎ, দেশের বাজারে তিন দিনে ‘পাঠান’-এর আয় ১৬০ কোটির বেশি।

‘পাঠান’-এর বক্স অফিস সাফল্য যেন টেক্কা দিচ্ছে হলিউডের জনপ্রিয় কিছু ছবিকেও। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, ‘টাইটানিক’ (১৯৯৭) ছবিটি মুক্তির পর প্রথম তিন দিনে ২৩১ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল।

ওই বছরই জুন মাসে মুক্তি পায় ‘দ্য লায়ন কিং’। ছবিটি বিশ্বের নানা প্রান্তে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছিল। এই ছবির প্রথম তিন দিনের মোট রোজগার ছিল ১৯৯ কোটি টাকা।

জনপ্রিয় হলিউড ছবি ‘বেবিস ডে আউট’ মুক্তির পর প্রথম তিন দিনে প্রায় ২৫ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী ‘পাঠান’-এর টেক্কা দিচ্ছে হলিউডের এই জনপ্রিয় ছবিগুলির সঙ্গে। তবে মনে রাখতে হবে, এই ছবিগুলি নব্বই দশকের। টাকার দাম অনুসারে আয়ের অঙ্ক তখন কম হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু এই তুলনার থেকে একটি ধারণা পাওয়া যায়।

তবে এটাও মনে রাখতে হবে, হলিউডের সাম্প্রতিক জনপ্রিয় ছবিগুলিকে আয়ে টেক্কা দিতে পারেনি ‘পাঠান’। ‘অ্যাভেঞ্জার্স’ থেকে শুরু করে ‘অবতার’, ছবিগুলির মুক্তির পর দৈনিক রোজগার শাহরুখের ছবির চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু হলিউডেরই অন্য কিছু ছবির সঙ্গে পাঠানের তুলনা টানা যায়।

ভারতের বাজারে অবশ্য নজির গড়ে ফেলেছে ‘পাঠান’। দেশের আর কোনও হিন্দি ছবি প্রথম তিন দিনে এত টাকা আয় করতে পারেনি। অন্য ভাষাতেও এই সাফল্যের নজির নেই।

তবে একথা স্বীকার করতেই হবে পাঠান ছবিটি এই মুহূর্তে ভারতবর্ষে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তার তকমা পেয়েছে। শাহরুখ খান যেভাবে সিনেমা জগতে ফিরে এলেন চার বছর পর তা নজির হয়ে যাবে সিনেমার ইতিহাসে। যথাযথ বলেছেন বাংলার অভিনেতা ঋদ্ধি সেন। তার মতে বিরোধিতা সত্বেও যেভাবে পাঠান ছবি এদেশের মানুষ আপন করে নিয়েছে তাতে আর যাই হোক বিভেদকামিদের কাছে একটা সংকেত গেল।

বাস্তবিক তাই যেভাবে শাহরুখ খানকে পাঠান ছবিটিকে সামনে রেখে বিজেপির তাবড় তাবড় নেতারা হুংকার দিয়েছে দিয়েছেন। তারপরেও বক্স অফিসে যে সাফল্য দেখিয়েছেন শাহরুখের পাঠান তাতে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করা ছাড়া আর কোন উপায় রইল না।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ