জেলা 

মুর্শিদাবাদের গার্লস হাই মাদ্রাসায় দুদিনের বিজ্ঞান মেলায় ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উৎসাহের জোয়ার

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

নায়ীমুল হকের প্রতিবেদন: পড়াশোনাও যে এত আনন্দময় হতে পারে সে কথা সম্ভবত আগে কল্পনাও করতে পারেনি ছাত্র-ছাত্রীরা, যারা সম্প্রতি অংশগ্রহণ করেছিল দুদিনের বিজ্ঞান মেলায়। এই বিজ্ঞান মেলার আসর বসেছিল মুর্শিদাবাদে বেলডাঙায় দেবকুন্ড সেখ আব্দুর রাজ্জাক মেমোরিয়াল গার্লস হাই মাদ্রাসা ( উঃমা) প্রাঙ্গণে। এই মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা ও পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রীয় স্কুল সার্ভিস কমিশন এর উপদেষ্টা ডঃ পার্থ কর্মকার। সমগ্র অনুষ্ঠানটির যৌথ সহযোগিতায় ছিল অল ইন্ডিয়া সায়েন্স টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের পঃবঃ শাখা।

দুদিনের এই বিজ্ঞান মেলার প্রথম দিনের শুভ উদ্বোধন করেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তথা পঃবঃ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ডঃ আবু তাহের কামরুদ্দিন । প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান মেলার তাৎপর্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন ডঃ পার্থ কর্মকার, উদ্বোধক, অধ্যাপক ডঃ আবুতাহের কামরুদ্দিন, স্থানীয় বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী, স্থানীয় বিডিও উদয় শঙ্কর মাইতি, লোকাল থানার আই সি জামালউদ্দিন মন্ডল, বি এম ও এইচ সলমান মন্ডল, প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুন ও অন্যান্য অতিথি গণ।

Advertisement

দ্বিতীয় দিনে আকর্ষণীয় এই বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডাইরেক্টরেট অফ মাদ্রাসা এডুকেশনের ডাইরেক্টর আবিদ হাসান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের সাংসদ আবুতাহের খান, মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাস ও অন্যান্য বিশিষ্ট গুণীজন।

এই মেলা উৎসবে জেলার মোট ১৭ টি সরকারি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা থেকে প্রতিদিন ৩৫০০ করে মোট ৭০০০ ছাত্র ছাত্রীর সমাগম হয়েছে । ছত্রীদের সংখ্যা ছিল প্রায় ৯০% । মোট ৪০০ জন ছাত্র- ছাত্রী বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে। প্রতিযোগিতা হয় মডেল এক্সিবিশন, কুইজ, পোস্টারিং, বক্তব্য ও প্রতিটি ক্লাসের ৪/৫ ছাত্র ছাত্রী নিয়ে ১৭ টি প্রতিষ্ঠানের মোট ১৮০ জন ছাত্র ছাত্রীদের সায়েন্স অরিয়েন্টেশন। মডেলে প্রথম স্থান অধিকার করে মির্জাপুর হাজি সলেমান চোধুরী হাই স্কুল, বেলডাঙ্গা, মুর্শিদাবাদ ও দ্বিতীয় স্থান অধিকার আন্দুল বেড়িয়া হাই স্কুল রেজিনগর, মুর্শিদাবাদ। প্রতিষ্ঠানদুটিকে যথাক্রমে ২০ হাজার ও ১০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয় এবং প্রতিটি প্রতিযোগিতার জন্য পুরস্কার দেওয়া হয়। দুদিনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক সেখ সফিউজ্জামান।এই মেলা প্রসঙ্গে স্থানীয় ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে নতুন এক উন্মাদনার সৃস্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অর্গানাইজড মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুন বলেন পিছিয়ে পড়া এলাকায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মেলা বলতে এতদিন বোঝাত গান বাজনা, কিছু দোকান,খেলনা ইত্যাদি। সেখানে বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে যে একটা মেলা করা যায় সেটা একটা নতুন ভাবনা ছিল এবং অবশ্যই আমরা সামগ্রিকভাবে তা বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম। সেটা ১০০ শতাংশ সফল। স্থানীয় ও পার্শ্ববর্তি এলাকায় বিরাট সাড়া পড়েছে। তথাকথিত অনামি প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা বিজ্ঞান বিষয়ে অত্যন্ত সুন্দর কাজ করেছে। আমার বিশ্বাস আগামীতে এই খুদে বিজ্ঞানীরা রাজ্য তথা দেশের বিজ্ঞান গবেষণার মান বাড়াতে সক্ষম হবে।

অল ইন্ডিয়া সায়েন্স টিচার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডঃ কমলকৃষ্ণ দে বলেন, ” প্রত্যন্ত গ্রামে এই ধরনের মেলা আরো বেশি বেশি করে করা দরকার, যাতে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার হয়। আয়োজক মাদ্রাসাকে সকলেই শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানান।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ