কলকাতা 

Anish Khan : নিয়ম মেনে আনিস খানের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশিতে যায়নি কলকাতা হাইকোর্টে স্বীকার করে নিলেন এডভোকেট জেনারেল

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : আনিস খানের বাড়িতে পুলিশ আইন মেনে তল্লাশিতে যায়নি কলকাতা হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে স্বীকার করে নিলেন এডভোকেট জেনারেল নিজেই। আশ্চর্যের বিষয় হলো এডভোকেট জেনারেল পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করলেও কিন্তু আনিস হত্যা রহস্যের তদন্তে পুলিশের উপর আস্থা রাখতে হাইকোর্টের কাছে আবেদন করলেন তিনি। এডভোকেট জেনারেলের মুখে এইসব কথা শুনে রাজ্যবাসীর মনে হচ্ছে তিনি এই তদন্তকে বিপথে চালিত করতে চাইছেন। যে পুলিশের কাজকে খোদ এডভোকেট জেনারেল বলছেন, আইন মেনে হয়নি সেই পুলিশ বা সিটের তদন্তে কেমন ভাবে তিনি আস্থা রাখছেন তা বোঝা যাচ্ছে না।

কলকাতা হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে এডভোকেট জেনারেল যাই বলুক না কেন এ কথা খুব স্পষ্ট হয়ে গেছে আনিস হত্যার নেপথ্যে পুলিশের ভূমিকা ছিল এটা অস্বীকার করা কোনোভাবেই যাবে না। মমতা প্রশাসনের উচিত ছিল নিজের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থেই আনিস হত্যার তদন্ত নিরপেক্ষ কোন এজেন্সিকে দিয়ে করানো। আজ মঙ্গলবার আনিস হত্যার তদন্ত নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি ছিল।

Advertisement

সেই শুনানিতে অংশ নিয়ে রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল বলেন,আত্মহত্যা করেননি ছাত্রনেতা আনিস খান। খুনও করা হয়নি তাঁকে। এজির বক্তব্য অনুযায়ী, খুনের জন্য পুলিশের কোনও মোটিভ নেই। এমনকী আনিসকে ব্যক্তিগতভাবে কেউ চিনতেনও না। তাঁর কথায়, আনিসের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় একটি মামলা ছিল। হিজাব সংক্রান্ত পোস্ট নিয়েও একটি জটিলতা ছিল। ঘটনার দিন আনিসকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল পুলিশ। সম্ভবত সেই সময় পালানোর চেষ্টা করেন আনিস।

তবে এদিন হাই কোর্টে এজি জানিয়েছেন, তল্লাশির ক্ষেত্রে পুলিশকে যা নিয়ম মানতে হয়, এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। ফলে ওই তল্লাশির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ কর্মীদের শাস্তির কথাও বলেছেন তিনি। এই ঘটনার জন্য অ্যাডিশনাল এসপিকে প্রশ্নের মুখেও পড়তে হবে বলেই আদালতে বলেন অ্যাডভোকেট জেনারেল।

উল্লেখ্য, মাস চারেক আগে আমতা থানা এলাকার বাসিন্দা আনিস খানের বাড়িতে হানা দিয়েছিল পুলিশের পোশাক পরা কয়েকজন। তারা আনিসের বাবা সালাম খানকে গানপয়েন্টে রাখে। আনিসের সঙ্গে কথোপকথন চলাকালীন ছাদ থেকে তাঁকে ঠেলে ফেলে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। মৃত্যু হয় আনিস খানের। তারপর থেকেই সুবিচারের দাবিতে উত্তাল রাজ্য।

এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই আনিস খানের বাড়িতে পুলিশ যাওয়ার পর তার লাশ উদ্ধার হয়। সুতরাং সহজ সরল সমীকরণ এটা স্বীকার করতেই হবে আনিস এর মৃত্যুর জন্য সরাসরি পুলিশ দায়ী। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে এখনো পর্যন্ত হাওড়া জেলার এসপি বদল হলো না কেন? প্রশ্ন উঠেছে আমতা থানার ওসি এখনো গ্রেফতার হলো না কেন?

আসলে এডভোকেট জেনারেল যেসব চুক্তি কলকাতা হাইকোর্টে দিয়েছেন সেইসব যুক্তিতেই এটা প্রশ্ন হয়েছে আনিসের মৃত্যুর জন্য পুলিশ দায়ী। আর মমতা প্রশাসন এক্ষেত্রে কোন কড়া পদক্ষেপ এখনো পর্যন্ত নেয়নি। এর ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যের তার কমিটেড মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক যে হারাতে চলেছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আনিসের হত্যার পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের কাছে বলেছিলেন ১৫ দিনের মধ্যে আনিসের খুনিরা গ্রেফতার হবে। আজ চার মাস অতিবাহিত হয়ে গেল কাউকে সেই ভাবে গ্রেফতার হয়নি। সিভিক ভলেন্টিয়ার দা পুলিশ কর্মী নয়। সুতরাং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি সিভিক ভলেন্টিয়ারদের পুলিশকর্মী বলে এই রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজকে বোঝাতে চান তাহলে ভোট যে হারাচ্ছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ থাকবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে আনিস মৃত্যুরহস্যের তদন্ত কোনো নিরপেক্ষ এজেন্সির হাতে তুলে দেওয়া। তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে। কিন্তু তিনি যদি কাজ না করেন তাহলে এটা স্পষ্ট ভাবে বলা যায় আগামী দিনে এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় টিকে থাকাটা কঠিন হবে।

 

 

 

 

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ