দেশ 

বেড়াতে গিয়ে আটকে গেছেন , দ্রুত বাংলায় ফেরার আশায় নবান্নের দ্বারস্থ , অধীর চৌধুরি-র হস্তক্ষেপে উত্তরাখন্ড প্রশাসনের নজরে ২৭ বাঙালি পর্যটক

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : পরিস্থিতি ক্রমশই জটিল হয়ে পড়ছিল । কিন্ত তাদের কিছু করার ছিল না । কারণ তারা পাহাড়ি এলাকার মধ্যে বন্দি হয়ে পড়েছে । বেরিয়ে আসতে সময় লাগবে । কিন্ত ততদিনে ঘটে গেছে জনতা কার্ফু । এর দুুদিন পরেই সমগ্র ভারত জুড়ে লকডাউন শুরু হয়ে যায় । করোনাভাইরাসে জেরে এখন ২৭ জন বাঙালি বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছেন ।
গত ১৩ মার্চ কলকাতা থেকে রওনা দিয়েছিলেন ২৭ বাঙালি পর্যটক। গন্তব্য ছিল উত্তরাখণ্ডের একগুচ্ছ পর্যটনস্থল। নৈনিতাল, কৌসানী, মুন্সিয়ারি হয়ে তাঁরা পৌঁছেছিলেন পিথোরাগড় জেলার ছোট্ট, নিরিবিলি হিলস্টেশন চৌকোরিতে। কিন্তু তত দিনে গোটা বিশ্বে ত্রাস হয়ে উঠেছে করোনা। ভারতেও পরিস্থিতি ক্রমশ সঙ্কটজনক হচ্ছে। একের পর এক রাজ্য নিজেদের মতো করে লকডাউন, কার্ফু বা ১৪৪ ধারা জারি করতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে গোটা দেশ এক দিনের ‘জনতা কার্ফু’ও পালন করে ফেলেছে। সুতরাং রাজ্যে ফেরা যে কঠিন হয়ে উঠতে চলেছে, সে আশঙ্কা দানা বাঁধতে শুরু করেছিল পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরতে থাকা বাঙালি পরিবারগুলোর মধ্যে। কিন্তু উপায়ান্তর খুঁজে পাওয়ার আগেই সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে দেশ জুড়ে।
ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় মাধ্যমে আকুল আর্তি জানাতে শুরু করেছেন ওই ২৭ বাঙালি পর্যটক। স্থানীয় প্রশাসন আপাতত তাঁদের রিসর্ট-বন্দি থাকতে বললেও তাঁরা রাজ্যে ফিরতে মরিয়া। রাজ্য সরকারের কাছে তথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নানা ভাবে সে আর্জি পৌঁছে দেওয়ার নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিব্বত সীমান্তের কাছাকাছি এক পাহাড়ের মাথায় বসে।

যে ২৭ জন আটকে পড়েছেন উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ে, তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের হার্টের সমস্যা রয়েছে। শিশুও রয়েছে বেশ কয়েকটি। চৌকোরির ঠান্ডার মধ্যে আরও সপ্তাহ তিনেক আটকে থাকতে হলে পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে গোটা দলটাই। পর্ণিনী বললেন, ‘‘এখানে সে ভাবে দোকান-বাজারই নেই। লকডাউনের ফলে জিনিসপত্রের সাপ্লাই-ও কম। ওষুধের দরকার হলে তিন কিলোমিটার নীচে নামতে হচ্ছে। আবার উঠে আসতে হচ্ছে পাহাড়ি রাস্তা ধরে। ডাক্তার নেই। কেউ অসুস্থ হলে কী করব, কারও জানা নেই।’’

স্থানীয় প্রশাসন অবশ্য যোগাযোগ করেছে আটকে পড়া বাঙালি পর্যটকদের সঙ্গে। পিথোরাগড়ের এসডিএম মঙ্গলবারই চৌকোরির রিসর্টে গিয়ে কথা বলে এসেছেন। কারও কোনও সমস্যা হবে না, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিস তাঁরা পাবেন, ওষুধের সরবরাহও অক্ষুণ্ণ থাকবে— এমন আশ্বাস দিয়ে এসেছেন ওই সরকারি কর্তা। কিন্তু লকডাউনের মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও ভাবেই যেন কেউ চৌকোরি ছাড়ার চেষ্টা না করেন— সতর্ক করে দিয়ে গিয়েছেন তিনি।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতেই কাতর আর্তি নবান্নের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করেছেন পর্ণিনীরা। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘এসডিএম যতই আশ্বাস দিন, আমাদের পক্ষে এত দিনের জন্য এই পরিবেশে আটকে পড়া কতটা কঠিন, সেটা সবার পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। তাই আমরা চাইছি, কোনও ভাবে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে খবরটা পৌঁছক। তিনি যে ভাবে হোক আমাদের বাংলায় ফেরানোর ব্যবস্থা করুন।’’

লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীও উদ্যোগী হয়েছে উত্তরাখণ্ডে আটকে পড়া এই বাঙালি পর্যটকদের সুরাহা করতে। চৌকোরিতে ২৭ জন বাঙালি পর্যটক আটকে রয়েছেন জেনেই অধীর চৌধুীরর অফিস থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পরে তাঁদের সমস্যার কথা পিথোরাগড়ের জেলাশাসকের দফতরকেও জানানো হয়। জানানো হয় উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিবেন্দ্র সিংহ রাওয়াতের দফতরকেও। ওই পর্যটকদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব জেলাশাসকের দফতর নিচ্ছে বলে অধীর চৌধুরীর অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁদের বাংলায় ফেরানোর ব্যবস্থা যাতে করা যায়, তার জন্যও উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে অনুরোধ পৌঁছেছে লোকসভার বিরোধী দলনেতার তরফ থেকে।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

five × three =