সোমবার ঈদ-উল-আযহা ; কাশ্মীরকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতে সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার ; ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে ফারুক আবদুল্লাহর দল
বাংলার জনরব ডেস্ক : কুরবানির ঈদ সোমবার । কাশ্মীরের মানুষের এবার সেই ঈদে কেমন সাড়া মিলবে তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে প্রশাসন । কাশ্মীরিরা অবশ্য হতাশ হয়নি । তবে আত্মীয় স্বজনরা ৫ আগষ্ট-র পর থেকে যোগাযোগ করতে পারেননি । এঁরা অবরুদ্ধ হয়ে আছে । ঈদ-উল-ফিতরে চেয়েও ঈদ-উল-আযহায় পরিজন বেশি থাকেন । কারণ এই সময় কুরবানি হয় । এবার তা দেখা যাচ্ছে না । ৫ আগষ্টের পর সব কিছু কাশ্মীরে পাল্টে গেছে । কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ করার পর উপত্যকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। দোকানপাট বন্ধ। যোগাযোগ ব্যবস্থায় রাশ টানা হয়েছে। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক তার পর থেকেই বদলে গিয়েছে দৈনন্দিন ব্যস্ততার ছবিটাও।
তবে সরকার দাবি করেছে, ধীরে ধীরে হলেও ছন্দে ফিরছে কাশ্মীর। জম্মু ও কাশ্মীরের পাঁচটি জেলা এবং ডোডা ও কিশ্তওয়ারে কার্ফু তুলে দেওয়া হয়েছে। ইদ উপলক্ষে জনসাধারণের জন্য খোলা হয়েছে ইদগাহগুলি। খুলেছে এটিএম, স্কুল–কলেজ। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের দাবি, সরকার যা বলছে , তা আদৌ সত্য নয় । আসলে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর কাশ্মীর আরও ফুঁসছে । গত তিন দিনে অন্তত ৪০ জন ছর্রা বুলেটে আহত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছে ফারুক আবদুল্লার দল ন্যাশনাল কনফারেন্স।
শনিবার এক উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘জম্মু, কাঠুয়া, সাম্বা, উধমপুর এবং রিয়ালি জেলায় আজ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফের খোলা হয়েছে।’’ তাঁর মতে, ৫ অগস্টের পর থেকে উপত্যকায় ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। কোনও ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনার খবর মেলেনি। দোকানপাটও খুলছে। তাতে স্বস্তি মিলছে সাধারণের। তবে পুঞ্চ, রজৌরি বা রম্বানের মতো জেলায় এখনও কার্ফু চলছে।
এই আবহে শনিবার উপত্যকায় ইদের প্রস্তুতি নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক। উপত্যকার হাসপাতালগুলির পরিষেবা ব্যবস্থাও খতিয়ে দেখেছেন তিনি। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘ইদের আগে স্থানীয় মানুষদের পুরোপুরি নিরাপত্তা দেওয়ার সব রকমের প্রচেষ্টা করছে প্রশাসন। যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্ভয়ে সকলে ইদ উদ্যাপন করতে পারেন।’’ জম্মু ও কাশ্মীরের এক আধিকারিক ইমতিয়াজ হুসেন বলেন, ‘‘কাশ্মীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছনোর সব রকমের প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ও পুলিশের সঙ্গে মানুষ সহযোগিতা করছেন।’’
এদিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন । সাধারন মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন । এমনকি কুরবানির পশু যে হাটে বিক্রি হয় সেখানেও দোভাল গিয়েছেন । পশু বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন । এভাবে কাশ্মীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন অজিত দোভাল । সত্যিই কী কাশ্মীর শান্ত হবে তার উত্তর ভবিষ্যতে মিলবে ।