DA Case Exclusive : চার সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতার ২৫% মিটিয়ে দিতে হবে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
বিশেষ প্রতিনিধি : রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতার ২৫ শতাংশ দিয়ে দিতে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের । রাজ্য সরকারী কর্মীদের স্বস্তির নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ১৮ বার শুনানি স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর, শুক্রবার DA মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্ট। অবশেষে খুব অল্প সময়ের জন্যই শুনানি হয়। তার মধ্যে প্রথমে আদালত রাজ্যকে বলে, ৫০ শতাংশ বকেয়া মহার্ঘভাতা দিয়ে দিন। কিন্তু তারপর রাজ্যের অনুনয়েই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেন, বকেয়া মহার্ঘভাতার ২৫ শতাংশ এখনই দিয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে, ২০০৯-এর পয়লা জুলাই থেকে বকেয়া মহার্ঘভাতা পাওয়া যাবে। ৪ সপ্তাহের মধ্যে মেটাতে হবে বকেয়া ডিএ, জানালেন সরকারি কর্মীদের একাংশের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
এদিন প্রথমেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতার ৫০ শতাংশ রাজ্যকে দিয়ে দিতে বলে আদালত। মামলার ভাগ্যের ওপর বাকিটা নির্ভর করবে, পর্যবেক্ষণে জানান বিচারপতি। তখন আদালতে রাজ্যের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, এটা বিপুল অঙ্কের টাকা। এখনই বকেয়া মহার্ঘভাতার ৫০ শতাংশ দিতে হলে রাজ্যের কোমর ভেঙে যাবে। তাছা়ড়া তিনি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, মহার্ঘভাতা কোনও সাংবিধানিক অধিকার নয়, এখনই বকেয়া ডিএ-র ৫০ শতাংশ দেওয়া সম্ভব নয়। তারপর সব শুনে শীর্ষ আদালত জানায়, এখনই বকেয়া মহার্ঘভাতার ২৫ শতাংশ দিয়ে দিতে হবে। এরা আপনাদের কর্মী, ফলে অসুবিধার কোনও কারণ নেই, রাজ্যকে বলেন বিচারপতি সঞ্জয় কারোল। অগাস্ট মাসে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
শুক্রবার সর্বোচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে ছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারী। গত বুধবার সুপ্রিম কোর্টে DA মামলার শুনানি থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে শুক্রবার DA মামলার শুনানি হয়। এখন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা DA পান ৫৫% হারে। গত বিধানসভা বাজেটে ৪% বৃদ্ধির পর রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা এখনও পর্যন্ত DA পান ১৮% হারে। অর্থাৎ এখনও কেন্দ্র রাজ্যের মধ্য়ে DA-র ফারাক ৩৭%।
DA মামলার ইতিহাস ফিরে দেখা
২০১৭ সালে SAT রায় দেয়, DA দেওয়া বা না দেওয়া রাজ্য সরকারের ইচ্ছার উপর নির্ভর করে! সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ওই বছর ৩০ মার্চ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য় সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন।
২০১৭-র ৭ সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য ১৫% DA ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর DA মামলায়, ২০১৮ সালের ৩১ অগাস্ট কলকাতা হাইকোর্ট রায় দেয়, DA সরকারি কর্মীদের অধিকার। কীভাবে তা দেওয়া হবে, ২ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করুক SAT।
২০১৯-এর ২৬ জুলাই, SAT-এর তৎকালীন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগ ও সুরেশ কুমার দাস নির্দেশ দেন, ১ বছরের মধ্যে সরকারি কর্মীদের DA মেটাতে হবে। কিন্তু রাজ্য সরকার তা না দেওয়ায় কর্মচারী সংগঠন আদালত অবমাননার মামলা করে ফের SAT-এর দ্বারস্থ হয়।
২০১৯-এর অক্টোবরে SAT-এ রিভিউ পিটিশন দাখিল করে রাজ্য সরকার। ২০২০-র ৮ জুলাই, রাজ্য সরকারের পিটিশন খারিজ করে SAT।
তার পর রাজ্য সরকার আবেদন জানায় হাইকোর্টে। সেই মামলায় রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, বকেয়া DA মিটিয়ে দিতে হবে। এরপর, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার।