কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা মঞ্চের রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যা, সম্প্রীতির বার্তা প্রদান
নিজস্ব প্রতিনিধি , কলকাতা: ১৪ই মে সর্ব ভারতীয় বাংলা ভাষা মঞ্চের উদ্যোগে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় সংহতি কেন্দ্রে আয়োজিত হল রবীন্দ্র –নজরুল সন্ধ্যা । এই উপলক্ষে যেমন দেওয়া হয় সম্প্রীতির বার্তা, কবিতা গান ,সেমিনারের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আজকের ভারতীয়দের উপমহাদেশে যে অস্হির পরিস্হিতি তৈরি করেছে মৌলবাদী শক্তি তাতে আমাদের কাছে রবীন্দ্রনাথ -নজরুল আমাদের সবচেয়ে বড়রাজ্য ভরসা।
একজন আমাদের চেতনা, তো অন্যজন সেই চেতনার চাবুক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মঞ্চের কেন্দ্রীয় সম্পাদক ভাষা গবেষক নীতীশ বিশ্বাস । বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক উত্তম কুমার বিশ্বাস, ( প্রেসিডেন্সী ) জয়ন্ত রায় (রবীন্দ্র ভারতী) সাহিত্যিক অমিতাভ চক্রবর্তী ও লেখিকা বেবী কারফর্মা । উদ্বোধোনী সঙ্গীত করেন যাদবপুর ঐকতানের শিল্পীবৃন্দ ( নূপুর লোধ,মুন মুন মান্না ও অনুরাধা দাস)। প্রখ্যাত বাক্শিল্পী রনেন্দ্র,নাথ ধাড়ার নজরুল ইসলামের সুখ্যাত কবিতা ( আন ন্দময়ীর আগমনে-র ) আবৃত্তি সকলকে চমকিত ও আন্দোলিত করে দেয় ।
রবীন্দ্র নাথের ভাষা ভাবনা ও বর্তমান ভারতে বাংলা ভাষার অস্তিত্বের সমস্যা নিয়ে বক্তব্য রাখেন উত্তম বিশ্বাস ও জয়ন্ত রায়। তারা কেবল রবীন্দ্র নাথের ব্যাকরন ভাবনা ই নয় তাকে অতিক্রম করে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বিশ্বভারতীতে বাংলার ব্যবহার ও তার পরিবেশ নিয়ে সদৃষ্টান্ত আলোচনা উপস্থাপিত করেন। উত্তম বাবু বিশেষ ভাবে একক ভাষা ভাষী মানুষের মাতৃভাষার অধিকার ও ভারতে ঐক্যবদ্ধ ভাষা আন্দোলনের বীজ নিহিত যে ভাষা গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার ভিতর তার ব্যখ্যা করেন তার বিদগ্ধ ভাষণে ।
কবি নজরুলের জীবনের সঙ্গে চূরুলিয়ার সম্পর্ক বিষয়ে গবেষণা ধর্মী নিবন্ধ পেশকরেন সাহিত্যিক বেবী কারফরমা আর ভারতে সাম্যবাদী চেতনা প্রসারে যে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছিলেন কবি নজরুল ইসলাম ও তার উজ্জ্বল সহযোদ্ধা ভারতে সাম্যবাদী আন্দোলনের কিবদন্তী নেতৃত্ব মুজফফর আহমদ প্রসঙ্গে আলোচনা করেন সাহিত্যিক অমিতাভ চক্রবর্তী।এছাড়া আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপিকা সুমিতা পাত্র,,শিক্ষা বিদ নবকুমার কর্মকার, দীপঙ্কর মজুম দার, সন্দীপ বিশ্বাস ও সমীর বরণ দাস।
সভাপতি নীতীশ বিশ্বাস, বর্তমানের ভারতের অসম্প্রীতির অন্ধকারে দাঁড়িয়ে নজরুল ইসলামকে সম্প্রীতির জীবন্ত আলোকস্তম্ভ হিসেবে তুলে ধরেন,। তিনি বলেন রবীন্দ্রনাথের চলমান ও পরিবর্তমান জীবনে শেষ প্রান্তে এসে তিনি তার লেখায়,রেখায়, আদিগন্ত বিশ্ব ভারতীর পরিকল্পনায় ও বিশ্বসভায় যে মাবতার গান গেয়েছেন ,জীবনের অজস্র কাজে প্রয়োগ করেছেন, তার দৃষ্ঠন্ত বিশ্বে বিরল।
আবৃত্তি ও স্বরচিত কবিতা পাঠকরেন কবি শোভা মন্ডল, বিশ্বজিত সিংহ , সুতপা দাস, স্নিগ্ধা সেন, বৈশালী বিশ্বাস, শুক্লা ব্যনার্জি ও নিলীমা সরকার। সঙ্গীত পরিবেশন করেন অরুনাভ রায় , মৌসুমী দাস ও ড. দেবাশিস দত্ত,। কবিসম্মেলন পরিচালনাকরেন অধ্যাপিকা যূথিকা পাণ্ডে আর ধন্যবাদ জ্ঞাপক বক্তব্য বলেন রাজ্য সম্পাদক তপন দাস ।